|
|
|
|
চিঠি অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের |
বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি, চালু হচ্ছে না সেচ প্রকল্প |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সেচের ‘হাল’ ফেরাতে জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় গভীর নলকূপ তৈরি করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই নলকূপের জল পাম্প দিয়ে তুলে সেচের কাজে ব্যবহার করা হবে। তবে স্রেফ বিদ্যুৎ সংযোগ না মেলায় তা হচ্ছে না। নলকূপ তৈরি হয়ে পড়েই রয়েছে। অথচ, সংযোগের জন্য যে অর্থ প্রয়োজন, তা-ও বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার কাছে জমা পড়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তকে চিঠি দিলেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) জয়া দাশগুপ্ত। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি ওই চিঠি এসে পৌঁছেছে জেলাশাসকের কাছে। এরপরই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে।
কেন মেলেনি বিদ্যুৎ সংযোগ? জেলাশাসক বলেন, “এ নিয়ে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস মিলেছে।” রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার ডিভিশনাল ম্যানেজার (খড়্গপুর) শ্যামল হাজরা বলেন, “কয়েকটি প্রকল্পে ইতিমধ্যে সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বাকি প্রকল্পেও সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এক সময় ক্ষুদ্র সেচের প্রসারের লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন ব্লকে বেশ কয়েকটি গভীর নলকূপ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। নলকূপ তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শেষও হয়েছে। তবে স্রেফ বিদ্যুৎ সংযোগ না মেলায় ১৭টি প্রকল্প চালু করা যাচ্ছে না। ঘাটাল, ডেবরা, মোহনপুর, পিংলা, নারায়ণগড় প্রভৃতি এলাকাতেই এই প্রকল্পের কাজ হয়েছে। জেলা প্রশাসনেরই এক সূত্রে খবর, ঘাটালের দেওয়ানচকের প্রকল্পটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাকে ৪০ হাজার ৬২ টাকা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ৩০ মার্চ। ডেবরার গুরগঞ্জের প্রকল্পটিতে সংযোগ দেওয়ার জন্য ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৬৮ টাকা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি।
একই ভাবে খড়্গপুর ১ নম্বর ব্লকের চৈতা, মোহনপুরের মথুরাবাড়, পিংলার বাহাদুরপুর, ডেবরার লেঙ্গাভাট, দাঁতন-১ ব্লকের সারতা, কুণ্ডুুপাড়া, সিজুয়া প্রভৃতি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আগেই অর্থ জমা পড়েছে। তবে সংযোগ মেলেনি। এই পরিস্থিতিতেই জেলাশাসককে চিঠি দিলেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। যেখানে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করার আর্জি জানানো হয়েছে। অন্য জেলার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরেও বিস্তীর্ণ এলাকায় জলস্তর কমছে। জলাভাবে চাষের কাজ মার খাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা। এই জেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমিতে। জঙ্গলমহলে মোট কৃষিজমি রয়েছে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯ হেক্টরে। পরিস্থিতি দেখে আরও বেশি পরিমাণ জমিকে সেচের আওতায় আনতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। খসড়া পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের সব দফতরের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করতে না পারলে সমস্যা হবে বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। জেলা প্রশাসনেরই এক আধিকারিকের বক্তব্য, “ফেব্রুয়ারি-মার্চে টাকা জমা পড়েছে। অথচ, এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি। সমন্বয় রেখে কাজ হলে এমন পরিস্থিতি হত না।” |
|
|
|
|
|