কাঠগড়ায় সিএবি সচিব
রঞ্জি মরসুমের আগেই তীব্র অশান্তি পাঁচ সিনিয়রকে নিয়ে
সিএবি-তে বাংলার পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারকে ব্রাত্য করে রাখা নিয়ে তীব্র ডামাডোল বেঁধে গেল। রণদেব বসু, সৌরাশিস লাহিড়ি, শিবশঙ্কর পাল, সঞ্জীব স্যান্যাল এবং অরিন্দম দাস এই পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারকে বাংলার প্রাথমিক দলে না রাখা নিয়ে চাপা অসন্তোষ চলছিল প্রায় মাসখানেক ধরে। কিন্তু বুধবার চ্যালেঞ্জার ট্রফির দল নির্বাচনী সভার পর তা রীতিমতো আগ্নেয়গিরির চেহারা নিয়েছে!
যুযুধান দুই পক্ষের এক দিকে সিএবি যুগ্ম-সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়। যিনি বারবার ‘সিনিয়রদের’ ফেরানো যাবে না বলে নিজের স্টান্সে অনড় থেকে যাচ্ছেন। অন্য দিকে, সিএবি-রই একটি প্রভাবশালী মহল। এবং নির্বাচক কমিটির একটি অংশ। যাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট সিনিয়রদের এ ভাবে ব্রাত্য করে রাখলে তাতে বাংলারই ক্ষতি। জানা গেল, পুরো ব্যাপারে নির্বাচক কমিটি আপাতত ২:২। দু’জন চাইছেন সিনিয়রদের ফেরাতে। বাকি দুই সিএবি-কে খুশি রাখতে চাইছেন। মনে করা হচ্ছে কাস্টিং ভোট তাই চলে যাচ্ছে সিএবি সচিবের হাতে।
ঘটনার সূত্রপাত, মাসখানেক আগে। সিনিয়র-বিতর্ক এড়াতে তখন সিএবি-র পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়, প্রাথমিক দল থেকেই যে রঞ্জির দল নির্বাচন করতে হবে এমন ব্যাপার নেই। সিনিয়ররাও ফিরতে পারেন। সময় বুঝে ঠিক ডেকে নেওয়া হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। আগামী ১৯ অক্টোবর রঞ্জি ট্রফির দল নির্বাচনী সভা। সিনিয়র ক্রিকেটারদের ফেরানো দূরে থাক, তাঁদের ফিটনেস লেভেল কোন পর্যায়ে, সেটা জানতেও কাউকে বাংলার প্র্যাক্টিসে যোগ দিতে বলা হয়নি। উল্টে ঘরোয়া চ্যালেঞ্জার ট্রফি থেকেও ব্রাত্য করে দেওয়া হয়েছে! চ্যালেঞ্জারের দল নির্বাচনী সভায় শিবশঙ্কর, অরিন্দমদের মতো দু’এক জন সিনিয়রকে ফেরানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন নির্বাচক কমিটির কেউ কেউ। কিন্তু বৈঠকের শুরুতেই তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, বাইরে থেকে কাউকে নেওয়া যাবে না। স্কোয়াডে যারা আছে, তাদের থেকেই টিম হবে।
যা কানে যাওয়ার পর তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে সিএবি-র কর্তাদের মধ্যে। কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে যেমন বলে দিচ্ছেন, “কে সিনিয়র, কে জুনিয়র বুঝি না। আসল কথা হল পারফম্যান্স। সেটা যদি কেউ করতে পারে, তা হলে অন্য কোনও প্রসঙ্গ ওঠাই উচিত নয়।” বলা হচ্ছে, জাতীয় চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে একমাত্র সন্দীপন দাস ছাড়া বাংলার তরুণ ক্রিকেটারদের হাল শোচনীয়। তা ছাড়া পেসার সামি আহমেদ চোটপ্রবণ। অশোক দিন্দা ডাক পেতে পারেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট টিমে। এই অবস্থায় কোন যুক্তিতে বাইরে রাখা হচ্ছে শিবশঙ্কর, সৌরাশিসদের? বীরপ্রতাপ বা রবিকান্ত সিংহদের মতো নতুন পেসারদের উপর কতটা ভরসা করা যায়?
কিন্তু যাঁর দিকে যাবতীয় অভিযোগের তির সেই সুজন মুখোপাধ্যায় অবশ্য বৃহস্পতিবারও বললেন, “এটা পুরোপুরি নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত। তাঁরাই ঠিক করেছেন জুনিয়রদের নেওয়া হবে।” এ বার কি ব্রাত্য সিনিয়রদের ডাকা হবে বাংলার প্র্যাক্টিসে? সুজনের উত্তর, “না, সেই সম্ভাবনা নেই।” যদিও নির্বাচক প্রধান দীপ বলে দিলেন, “আমি বলছি, সিনিয়র-জুনিয়রের ব্যাপার নেই। বাংলার ভালর জন্য যা করা দরকার, করব।”
কিন্তু ঘটনা হল, নির্বাচকেরা এত দিন সে চেষ্টা করলেও ধাক্কা খেতে হয়েছে বারবার। কেউ কেউ আবার পুরো ডামাডোলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে পর্যন্ত আশ্চর্যভাবে জড়িয়ে ফেলেছেন। যা শুনে বিরক্ত সৌরভ বললেন, “আমাকে কেন এ সবে টানা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমি তো নির্বাচক কমিটিতেই নেই। ক্রিকেট ডেভলপমেন্ট কমিটিতে আছি।”
বিতর্ক একটা তবু হলে কথা ছিল। কিন্তু ঘটনা হল, বিভিন্ন ব্যাপারেই সিএবি-র কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে সুজনকে। রঞ্জি ট্রফির আগে কেন একটাও প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট খেলা হল না, তা নিয়ে সিএবি-র উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে রীতিমতো জবাবদিহি করতে হয়েছে তাঁকে। এবং জবাবে দেশজুড়ে বৃষ্টিকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন সিএবি সচিব! শুধু তাই নয়, শুক্রবার থেকে শুরুত হতে চলা ঘরোয়া চ্যালেঞ্জার ট্রফি চালু করতেও নাকি অনীহা ছিল তাঁর। এখানেও মত ছিল, বৃষ্টিতে নাকি ম্যাচ হবে না। উপরমহলের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত তাঁকে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়। যদিও চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা টিমকে খেলানোয় টুর্নামেন্টের মান কতটা থাকবে, সেই প্রশ্নও উঠছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.