খড়্গপুর পুরসভা
বোর্ড মিটিংয়ের বৈধতা নিয়ে চাপানউতোর
জন কাউন্সিলরের ডাকা বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত ১৬ জন কাউন্সিলরই পুরপ্রধান হিসেবে রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে নির্বাচিত করেছেন বলে দাবি করল কংগ্রেস শিবির। পুরসভারই এক সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ পুরসভার সভাকক্ষে এই বোর্ড মিটিং শুরু হয়। কংগ্রেসের ১৪ জন কাউন্সিলর ছাড়াও ছিলেন নির্দল কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মা ও বিজেপি কাউন্সিলর বেলারানি অধিকারী। তৃণমূলের ১৫ জন কাউন্সিলর ও ৪ বাম কাউন্সিলর অবশ্য মিটিংয়ে যোগ দেননি। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন বসু পুরপ্রধান হিসেবে রবিশঙ্করবাবুর নাম প্রস্তাব করেন। উপস্থিত ১৬ জন কাউন্সিলরই সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন।
কিন্তু এরপর কী হবে? সদুত্তর নেই কারও কাছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্করবাবু বলেন, “পুর-আইন মেনেই ৩ জন কাউন্সিলর বোর্ড মিটিং ডেকেছিলেন। এরপর জেলাশাসক বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি আমাকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। কবে করাবেন, তার জন্য অবশ্য ওই আইনে কোনও সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। আশা করব, যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “বোর্ড মিটিংয়ে কী হয়েছে, তা লিখিত ভাবে পুর-দফতর ও জেলাশাসককে জানানো হয়েছে।” বৃহস্পতিবার বোর্ড মিটিংয়ে অবশ্য সরকারের কেউ ছিলেন না। গরহাজির ছিলেন পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার (ই ও) বাসুদেব পালও। কেন? রবিশঙ্করবাবুর বক্তব্য, “কেউ না এলে কী করার আছে। তবে জেনেছি, এক্সিকিউটিভ অফিসার ৩ জন কাউন্সিলরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, তিনি মিটিংয়ে থাকতে পারবেন না।” চেষ্টা করেও বাসুদেববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন বেজে গিয়েছে।
তৃণমূল শিবিরের অবশ্য দাবি, বৃহস্পতিবারের মিটিংটিই অবৈধ। এ ভাবে মিটিং ডাকা যায় না। এ দিন পুরসভায় এসেছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী। দুপুরে তিনি বলেন, “পুরসভার সভাকক্ষ খোলাই ছিল। শুনেছি, সেখানে ১৬ জন কাউন্সিলর মিটিং করেছেন।” কিন্তু, এরপর কী হবে? তুষারবাবু বলেন, “পুরসভা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যে মামলা চলছে, তার চূড়ান্ত শুনানি এখনও হয়নি। হাইকোর্ট যা নির্দেশ দেবে, আমরা তাই করব।” সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যেন আরও জটিল হচ্ছে। উল্লেখ্য, পুর-দফতরের এক নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল কংগ্রেস। যে নির্দেশে বলা হয়েছিল, পুরপ্রধান জহরলাল পাল নিজের পদেই থাকবেন। হাইকোর্ট পুর দফতরের ওই নির্দেশিকায় স্থগিতাদেশ দেয়। জানায়, পুরপ্রধান নন, পুর-আইন অনুযায়ী পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার কাজ চালিয়ে যাবেন উপ-পুরপ্রধানই। ওই নির্দেশ মেনে গত ১ অক্টোবর পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেন উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরী। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, নিয়মানুযায়ী পরের ৭ দিনের মধ্যে পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য বোর্ড মিটিং ডাকার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধানেরই। পুরসভা সূত্রে খবর, এক সময় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ৬ অক্টোবর বোর্ড মিটিং হবে। ওই মিটিংয়েই পুরপ্রধান নির্বাচন হবে। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কেন? তুষারবাবুর বক্তব্য, “পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পরবর্তী কী করণীয় তা জেলাশাসক ও পুর-দফতরের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তার উত্তর আসেনি।” অন্য দিকে, কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, পুর-আইনেই বলা হয়েছে, দায়িত্ব নেওয়ার ৭ দিনের মধ্যে উপপুরপ্রধান যদি বোর্ড মিটিং না ডাকেন, তাহলে যে কোনও ৩ জন কাউন্সিলর নিজেরা উদ্যোগী হয়ে বোর্ড মিটিং ডাকতে পারেন। ওই মিটিংয়েই পরবর্তী পুরপ্রধান কে হবেন, তা নিয়ে প্রস্তাব পেশ করা যাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান যেহেতু মিটিং ডাকেননি, তাই চিত্তরঞ্জন মণ্ডল, মধু ঘোষ ও সত্যদেও শর্মা এই ৩ জন কাউন্সিলর উদ্যোগী হয়ে বৃহস্পতিবার বোর্ড মিটিং ডেকেছিলেন। এই মিটিংয়েই রবিশঙ্কর পাণ্ডে পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষারবাবু অবশ্য বলেন, “এই মিটিংয়ের কোনও বৈধতা নেই। তাই আমাদের দলের কেউই মিটিংয়ে যোগ দেননি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.