গড়বেতায় সিপিএমের ৫টি শাখা অফিস খুলল
তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’র সুযোগ নিয়ে গড়বেতায় ফের ‘ঘুরে দাঁড়ানোর’ লড়াই শুরু করল সিপিএম। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ সহ বেশ কয়েকটি দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার কয়েকটি এলাকায় মিছিল করে তারা। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ পড়ে থাকা ৫টি শাখা অফিসও খোলা হয়।
গত বিধানসভা নির্বাচনে একের পর এক ‘লালদুর্গ’ ধরাশায়ী হলেও গড়বেতা ধরে রাখতে পেরেছিল সিপিএম। কিন্তু দলের প্রভাব দিন দিন কমছিল। সুশান্ত ঘোষ গ্রেফতার হওয়ার পরে দলীয় দফতরগুলিতেও তালা ঝুলিয়ে রাখতে হয়েছিল। এলাকার দাপুটে নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পলাতক। এলাকার সাতটি লোকাল কমিটি ও একটি জোনাল কমিটির সম্মেলনও ‘গোপনে’ মেদিনীপুর শহরে করতে হয়। তবে গড়বেতাতে তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকট হতে শুরু করলে পরিস্থিতি কিছুটা বদলায়। এক সময় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন সুভাষ মাজি। পালাবদলের পর তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস সভাপতির পদ শূন্যই ছিল। সম্প্রতি সভাপতি করা হয়েছে দিলীপ পালকে। ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’ অবশ্য ছেদ পড়েনি। দেড় বছরে দফায় দফায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষও হয়েছে।
গড়বেতায় সিপিএমের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র
সেই পরিস্থিতিতেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিপিএমের গড়বেতা জোনাল অফিস খুলেছিলেন কর্মীরা। পরে অবশ্য তৃণমূলের ‘হামলা’র জেরে অফিসটি ফের বন্ধ করে দিতে হয়। তার ন’মাস পর বৃহস্পতিবার ফের দলের কয়েকটি শাখা অফিস খুলল সিপিএম। আর এরপরই পাল্টা বাইক-মিছিল করে তৃণমূল। এক সময় গড়বেতার বুকে যে ভাবে বাইক মিছিল করত সিপিএম। উত্তরবিল এলাকায় তৃণমূলের মিছিল থেকে শূন্যে গুলি ছোড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। তৃণমূলের গড়বেতা ব্লক সভাপতি দিলীপ পাল অবশ্য বলেন, “সিপিএমের কর্মীরা কিছু দুষ্কৃতীকে নিয়ে তাঁদের দলীয় দফতর খুলেছিলেন। এলাকায় মিছিল করে নতুন করে অশান্তি ছড়ানোরও চেষ্টা হয়েছে। ওই দুষ্কৃতীরাই শূন্যে গুলি ছুড়েছে।” সিপিএমের মিছিল প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “তাঁরা কোনও ঝান্ডা না-নিয়েই মিছিল করেছেন বলে শুনেছি।” পাল্টা বাইক মিছিল কেন? দিলীপবাবুর জবাব, “পাল্টা মিছিল হয়নি। ওদের লোকজন মিছিল করার পরে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে কয়েকটি এলাকায় মিছিল করেছিলেন। গড়বেতার বুকে নতুন করে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হলে প্রতিরোধ হবেই।” তবে এই ঘটনার পরে এই দিন সিপিএমের দফতর বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বক্তব্য, “ওই এলাকার স্থানীয় মানুষই অত্যাচারে তিতিবিরক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। স্থানীয় মানুষই উদ্যোগী হয়ে আমাদের দফতর খুলেছেন। মিছিলও করেছেন। স্থানীয় মানুষকে সন্ত্রস্ত করে রাখতেই বাইক মিছিল করেছে তৃণমূল। এটাই তৃণমূলের স্বভাব। গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে গড়েবতায় যে অত্যাচার ও সন্ত্রাস চলছে, তার জবাব জনগণই দেবেন।”
তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের অবশ্য দাবি, “গড়বেতায় আমাদের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।” তাঁর কথায়, “সিপিএম তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতেই পারে। কিন্তু এই দিন তারা অস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে। এটা সন্ত্রাস ছড়ানোরই চেষ্টা।” তবে পুলিশ জানিয়েছে, গড়বেতার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওই এলাকায় গোলমাল হয়েছে এমন কোনও খবর নেই। কেউ কোনও অভিযোগও করেননি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.