|
|
|
|
মর্যাদায় এবং ঐতিহ্যে এগিয়ে আছে মাহরুফ গঞ্জের বড়ি দেবীজি |
স্বপন সরকার • পটনা |
পটনায় বাঙালির সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। অনেক পুজোর হাত বদলও ঘটেছে। দুর্গা পুজো বাঙালি-বিহারির ভেদ রেখাটি মুছেই দিয়েছে। পটমার বহু বড় পুজোর উদ্যোক্তারা মূলত অবাঙালি। নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে অনেকেই দুর্গা পুজো করছেন। বাঙালি বাড়ির পুজো আস্তে আস্তে হয়ে উঠেছে এলাকার সবার পুজো, সর্বজনীন। কিন্তু ঐতিহ্যে কোনও ব্যাঘাত নেই। অনেক ক্ষেত্রেই সেই ট্র্যাডিশন সমানে বয়ে চলেছে। মূর্তি তৈরি করা বা আলোক সজ্জা থেকে শুরু করে পুরোহিত এখনও আসে সেই বাংলা থেকেই।
এমনই এক ঐতিহ্যময় পুজো পটনার মাহরুফগঞ্জের বড়ি দেবীজির পুজো। পটনা সিটি অঞ্চলের প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো এই পুজো শুরু করেছিলেন অরণ্য সাহা এবং কালী সাহা। পুজোটি এখন আর পারিবারিক নয়। বদলে গিয়েছে সর্বজনীন পুজোয়। পুজো কমিটি তৈরি হয় এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে। কিন্তু ঐতিহ্য নিয়ে কোনও আপস করেননি তাঁরা। পুজোর প্রাচীন রীতিতে কোনও বদল ঘটেনি। পুজো কমিটির সদস্য প্রেম জয়সওয়ালের কথায়, “মুর্শিদাবাদ থেকে ঢাকি আর পুরোহিত আসেন এখনও। সন্ধি পুজোর পদ্ম ফুল আসে কলকাতা থেকে। আর দেবীর সাজ আসে কৃষ্ণনগর থেকে।” পটনাতেই দেবীর মূর্তি গড়া হয়। তিন পুরুষ ধরে অশোক পালের পরিবারই এখানকার মূর্তি তৈরি করে আসছেন। শিল্পীর কথায়, “আমার দাদু নরেন্দ্র কুমার পাল এখানে মূর্তি তৈরি করতে আসতেন। তারপর আমার বাবা আসতেন। পরে বাবা পাকাপাকি ভাবে পটনাতেই থেকে যান। এখন আমিও পটনারই বাসিন্দা। বড়ি দেবীজির মূর্তি ছাড়াও আমি এখানকার আরও কয়েকটি মূর্তি গড়ি।”
এই মাহরুফগঞ্জের বড়ি দেবীজির পুজোকেই পটনার সব থেকে প্রাচীন পুজো বলে মনে করা হয়। বড়ি দেবীজির বিসর্জনের পরেই পটনার অন্য প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জনের একটা রীতিও আছে। গঙ্গায় আসার জন্য পটনা সিটিতে দু’টি প্রবেশ দ্বার রয়েছে। পূর্ব এবং পশ্চিম দ্বার। বিজয়া দশমীর দিন প্রথমে পূর্ব দ্বার দিয়ে আসেন বড়ি দেবীজি আর পশ্চিম দ্বার দিয়ে আসেন ছোটে দেবীজি। দুই দেবীর একচালা ঠাকুরকে পাশাপাশি রেখে পটনাবাসীরা প্রার্থনা করেন। তারপরে বড়ি দেবীজির নিরঞ্জন দিয়েই শুরু নিরঞ্জন পর্ব। |
|
|
|
|
|