শুধু টাকাপয়সা, গয়নাগাঁটিই নয়-- চোরেদের নজর এ বার রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডারের উপরেও।
সরকারি ভর্তুকি হটানোর পরে ‘মহার্ঘ’ গ্যাস সিলিন্ডারও গৃহকর্তার বাড়িতে ফেলে যেতে নারাজ দুষ্কৃতীরা।
এমনই ঘটেছে বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের সাউথ এন্ড এলাকার একটি বন্ধ বাড়িতে। পুলিশ জানায়, বুধবার গভীর রাতে লোহার গ্রিলের তালা ভেঙে ওই বাড়িতে ঢুকেছিল লুটেরারা। অভিযোগ, লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না, কাঁসার বাসনপত্র, ডিভিডি প্লেয়ার চুরি তো গিয়েছেই। সঙ্গে গ্যাসের ‘আকাশছোঁয়া’ মূল্যবৃদ্ধির বাজারে রান্নাঘরে রাখা কার্যত ‘সোনার চেয়ে দামি’ একটি ভর্তি ও একটি অর্ধেক খালি সিলিন্ডার নিতেও ভুল করেনি চোরেরা।
পুলিশকর্তারা বলছেন, কারও বাড়ি থেকে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার চুরি যাওয়ার নজির প্রায় নেই-ই। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, “গয়নার সঙ্গে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার চুরির ‘জুটি’ আগে শোনা যায়নি।” পুলিশের বক্তব্য, সকলের নজর এড়িয়ে গয়নাগাঁটি অন্য জিনিস সহজে নিয়ে চম্পট দেওয়া গেলেও গ্যাস-ভরা সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে পালানোর ঝক্কি অনেক। কিন্তু পুজোর আগে ‘আগুন’ বাজারে ফাঁকতালে দুটো গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যে লটারি জেতারই সামিল! সে ঝক্কি নিতে তাই আপত্তি নেই দুষ্কৃতীদের! |
স্থানীয় সূত্রে খবর, ছেলে অভিষেককে নিয়ে ব্রহ্মপুরের নিরিবিলি এলাকায় একতলা ওই বাড়িতে থাকতেন বছর সত্তরের শমিতা নাথ। শমিতাদেবীর জামাই সুব্রত নাথ বৃহস্পতিবার জানান, বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছেন তাঁর শাশুড়ি। চিকিৎসার জন্য কয়েক মাস যাবৎ ছেলেকে নিয়ে নৈহাটিতে আছেন তিনি। তালাবন্ধ ব্রহ্মপুরের বাড়িতে মাঝেমধ্যে ঘুরে যান ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা, পেশায় কেব্ল টিভির ব্যবসায়ী সুব্রতবাবু। কখনও ঘুরে যান অভিষেকও।
এ দিন সকালে লণ্ডভণ্ড হয়ে থাকা ঘরে দাঁড়িয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “ভোরে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ফোনে গ্রিলের তালা ভাঙার কথা জানান। এসে দেখি দরজার ছিটকিনি স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে খোলা হয়েছে। দুটো ঘরে জিনিস ছড়িয়ে।” চুরির কথা তখনই শাশুড়ি, শ্যালককে জানান তিনি। সুব্রতবাবু বলেন, “শোয়ার ঘরে খাটের নীচে লোহার ট্রাঙ্কে হোমিওপ্যাথি ওষুধের বাক্সে লক্ষাধিক টাকার গয়না ছিল। চোরেরা তা নিয়ে গিয়েছে। কাঁসার বাসন, একটি ডিভিডি প্লেয়ারও নেই।” তিনি জানান, আলমারি খোলার চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু তাতে সফল হয়নি দুষ্কৃতীরা। আলমারির সামনে পড়েছিল স্ক্রু-ড্রাইভার, হাতুড়ি, করাত-সহ অন্য যন্ত্রপাতি বোঝাই একটি ব্যাগ।
বাড়ির কোথায় কী চুরি হয়েছে খুঁজতে গিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে তাজ্জব হয়ে যান বছর চল্লিশের ওই ব্যবসায়ী। বলেন, “ওখানে দুটো সিলিন্ডার রাখা ছিল। দেখলাম, সেগুলো উধাও।” তবে, বসার ঘরে রাখা খারাপ কম্পিউটার ছুঁয়েও দেখেনি হানাদারেরা। পুলিশের অনুমান, পরিচিত কেউ এতে জড়িত।
বিধাননগরে চুরি। বিধাননগর থানার উল্টোদিকের এক বেসরকারি কোম্পানির সার্ভিস সেন্টার থেকে ১টি এলইডি টিভি ও ৩টি কম্পিউটার চুরি করে পালাল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার, সিডি ব্লকে। দিন কয়েক আগেই বিধাননগর থানা এলাকায় দু’টি চুরি হয়। পুলিশ জানায়, নজরদারিতে ঘাটতি হয়নি। তবে কোনও চক্র ফের সক্রিয় হয়েছে কী না, দেখা হচ্ছে। |