প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
ওয়ালমার্টের জুজু দেখিয়ে বারিস্তা বন্ধের আন্দোলন
বোধোদয় হতে দশ মাস লাগল? নাকি এটা আসলে সময়ের রাজনীতিতে গা ভাসিয়ে এফডিআই বিরোধিতার ফলিত রূপ?
তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দশ মাস আগে চালু হওয়া বহুজাতিক কফিশপ ‘বারিস্তা’ বন্ধ করে দেওয়ার দাবিতে এখন হঠাৎ প্রেসিডেন্সির একটি ছাত্র সংগঠনের আন্দোলন ঘিরে উঠছে এই সব প্রশ্ন। আন্দোলনকারী সংগঠন ইন্ডিপেন্ডেন্ট কনসোলিডেশন (আইসি)-এর গায়ে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক ছাপ না থাকলেও ছাত্র ও শিক্ষক মহলে তাদের পরিচিতি অতি-বাম হিসেবে। আর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই-এর ইউনিয়ন থাকলেও বারিস্তা-বিরোধী এই আন্দোলনে তাদের ভূমিকা কিছুটা নীরব সমর্থকের। এই অবস্থায় বুধবার থেকে বন্ধ রয়েছে কফিশপটি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে।
বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই কফিশপের সামনে আন্দোলনকারীরা। —নিজস্ব চিত্র
কেন এই ছাত্র সংগঠন বারিস্তা চায় না? বৃহস্পতিবার বিলি করা লিফলেটে আইসি সমর্থকেরা লিখেছেন বারিস্তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রেসিডেন্সিতে ‘কাল ওয়ালমার্ট আলু পটল বেচতে ঢুকবে, আইটিসি বলবে যে তারা সিগারেট ও খাতা একসঙ্গে বেচতে চায়’ ইত্যাদি। পাশাপাশিই তাঁদের বক্তব্য, এত চড়া দামের খাবারের দোকান ক্যাম্পাসে থাকলে পড়ুয়াদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হবে। তা হলে জানুয়ারিতে কফিশপটি চালুর সময়ে সে কথা বলা হয়নি কেন? সংগঠনের বক্তব্য, আপত্তি আগেই ছিল। তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, দু-সপ্তাহের মধ্যে সস্তার ক্যান্টিনও খুলে দেওয়া হবে। আজও তা হয়নি।
কিন্তু আর একটি চিপ ক্যান্টিন খোলা হলেই কি দাবি পূরণ হবে? হয়তো না। কারণ, এখন আর সে কথা বলছেন না আন্দোলনকারীরা। বরং চাইছেন, বারিস্তা তুলে দিয়ে সেখানে ক্লাসরুম, জার্নাল বা কম্পিউটারের জন্য ঘর তৈরি করা হোক। সংগঠনের মুখপাত্র বিবস্বান বসুর ব্যাখ্যা: “ক্লাসের হাতে গোনা কয়েক জন যদি চড়া দাম দিয়ে বারিস্তায় খেতে যায়, বাকিদের পক্ষে তা সম্ভব না হয়, তা হলে বিভেদ তৈরি হয়।” তবে পড়ুয়াদের কেউ কেউ যদি দামি, বিদেশি ব্র্যান্ডের জামা-জুতো-ঘড়ি পরে আসেন, তখন বিভেদ তৈরি হবে না? সে ক্ষেত্রে কি সকলের জন্য একই রকম পোশাক অর্থাৎ, ইউনিফর্ম করার দাবি তোলা হবে? বিবস্বান বলেন, “পোশাক-আশাকে অতটা অর্থনৈতিক বিভেদ তৈরি হয় না, যতটা কফিশপে ঢুকে খাওয়াকে কেন্দ্র করে হতে পারে। কেউ দামি, কেউ সস্তা জামাকাপড় পরেও পাশাপাশি বসে গল্প করতে পারে।”
অতএব সোমবার থেকে ওই কফিশপ বন্ধের দাবিতে দোকানের সামনে অবস্থান করছে আইসি। বুধবার থেকে দোকানটি খোলা হয়নি। উপাচার্য মালবিকা সরকার বুধবারই জানিয়েছিলেন, একদল পড়ুয়ার অবস্থানের জেরে দোকান খোলা যাচ্ছে না বলে বারিস্তার তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “সমস্যার কথা জানাতে পড়ুয়ারা যখন-তখন আমার কাছে আসে। কিন্তু এ ব্যাপারে ওরা আমাকে কিছুই জানায়নি। তবে নভেম্বরেই চিপ ক্যান্টিন চালু হবে।” বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তুকি দিয়ে ওই কফিশপ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ছাত্রদের। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সরাসরি ভর্তুকি দেওয়া না হলেও বারিস্তা ওই স্থানটির জন্য ভাড়া দেয় না, ইলেকট্রিক বিলও দেয় না। বারিস্তার জায়গায় ক্লাসরুম বা কম্পিউটার রুম করার দাবিতে বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি দিয়েছে আইসি। রেজিস্ট্রার প্রবীর দাশগুপ্ত বলেন, “দু’এক দিন অপেক্ষা করে দেখি কী হয়। আগের রেজিস্ট্রারের সময়ে কফিশপটি খোলা হয়েছিল। তাই চুক্তিতে কী ছিল, সে সব দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.