পুজোর আগে সংস্কার করা হলেও শীতের মধ্যেই উত্তরবঙ্গের বেহাল রাস্তাগুলি পুরোপুরি ঠিকঠাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, এসজেডিএ, পূর্ত দফতর এবং পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। সেখানে বিভিন্ন এলাকার বেহাল জাতীয় সড়ক পুরাপুরো সারানোর পাশাপাশি শিলিগুড়ির তিনটি রাস্তা চওড়া এবং সৌন্দর্যকরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত রাস্তা তিনটির সমীক্ষা শেষ করে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। বৈঠকের পর মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “জাতীয় সড়কের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা জাতীয় সড়কের পাশাপাশি কেন্দ্রের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষও কাজ শুরু করেছেন। পুজোর আগে সংস্কারের কাজ শুরু হলেও বৃষ্টিতে কাজ ব্যহত হচ্ছে। পুজোর পর ঠিকঠাক ভাবে রাস্তাগুলির কাজ হবে। কিছুদিনের মধ্যে কলকাতায় ফের আরেক দফায় বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক হবে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গোটা উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রের অধীন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ৪৪৮ কিলোমিটার এবং রাজ্যের পূর্ত দফতরের অধীন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ৫১১ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর বহু অংশ বেহাল হয়ে পড়েছে বলে ব্যবসায়ী, বাসিন্দা এবং গাড়ি-বাসের মালিকেরা অভিযোগ করে আসছেন। বাকি রাস্তাগুলি পুরসভার, পূর্ত দফতর, পঞ্চায়েত এবং এসজেডিএ-র আওতায় রয়েছে। |
ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
সেগুলির অবস্থাও বেহাল বলে অভিযোগ। মন্ত্রী বলেন, “জাতীয় সড়ক ছাড়া অন্য রাস্তাগুলিরও সংস্কারের কাজ পর্যায়ক্রমে চলছে। আমাদের আরও কিছুটা সময় লাগবে। উত্তরবঙ্গের সার্বিক ‘রোড নেটওয়ার্ক’কে শক্তিশালি করা হবেই। আমাদের দফতরের ওয়েবসাইটেই রাস্তা হালহকিকৎ লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।” এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বাগডোগরা থেকে শালুগাড়া অবধি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ককে চার লেনের রাস্তায় পরিণত করা হবে। সেই সঙ্গে বর্ধমান রোডের জলপাইমোড় থেকে ফুলবাড়ি অবধি রাস্তা চওড়া করে দুই লেনের করা হবে। উল্লেখ্য, ফুলবাড়ি আগে ওই রাস্তার পাশে কামরাঙাগুড়িতে তৈরি হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়। সেখানকার জন্য জাতীয় সড়কে আরকেটি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য দার্জিলিং মোড় থেকে সুকনা অবধি রাস্তা মজবুত করে ফেন্সিং দিয়ে গাছ, নানা ছবি লাগিয়ে দুইপাশ সাজা হবে। শহরের সেবক রোড, হিলকার্ট রোড, স্টেশন ফিডার রোড, বিধান রোডের মত ব্যস্ততম এলাকার রাস্তাগুলি ঠিকঠাক করা হবে। ডুয়ার্সের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী করোনেশন সেতু উপর চাপ কমাতে তিস্তা নদীর উপর আরেকটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা বাম আমল থেকে শুরু হয়। রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে এই নিয়ে বহুবার চিঠি পাঠানো হয়। মন্ত্রী জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগী হওয়াতেই কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার দ্বিতীয় সেতু তৈরির সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিচ্ছে বলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। এরপরে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হলেই কাজ শুরু হবে। এতে ফাটল ধরা করোনেশন সেতুটিকে রক্ষা করা যাবে। ফিল্ম সিটির জমি হস্তান্তর এবং পরিকাঠামোর যাবতীয় কাজ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নই দফতরই করবে বলে সরকার জানিয়েছে বলে গৌতমবাবু জানিয়েছেন। |