জল, শৌচাগার নেই। নেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, ফার্মাসিস্টও। এই অবস্থায় যে কজন চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন তাঁরাও নিয়মিত আসেন না। এমনই অবস্থা রামপুরহাটের বৈদড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। এর প্রতিবাদে বুধবার প্রায় ১ ঘণ্টা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক চিকিৎসককে তালাবন্দি করে রাখলেন বাসিন্দারা। নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল। পরে অবশ্য আন্দোলনকারীরাই তালা খুলে দেন। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যকর্মী বলতে একজন চিকিৎসক। তিনি সবে ঘেরাও মুক্ত হয়ে কাজকর্ম করছেন। একজন নার্স থাকলেও তিনি এদিন আসেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল কর্মী নিতাই রায়, অর্জুন হাঁসদারা বলেন, “এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাস বেশি। একটিমাত্র এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতির জন্য এক বাসিন্দা ১০ বিঘার বেশি জমি দান করেছেন। চিকিৎসকদের থাকার জায়গা থাকলেও উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব থাকায় জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন।” এলাকাবাসীর ক্ষোভ, চিকিৎসকেরা খেয়ালখুশি মতো আসা-যাওয়া করেন। একজনমাত্র নার্স তিনিও নিয়মিত আসেন না। তাই পরিষেবার দাবিতে মনস্বী রায় নামে এক চিকিৎসককে এদিন তালাবন্দি করে রাখেন তাঁরা।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালেও কাজ করেন। তিনি সপ্তাহে দু’দিন বৈদড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। তিনি বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী সপ্তাহে দু’দিন এখানে ডিউটি করি।” আর এক চিকিৎসক সুব্রত ঘোষের দাবি, “আমি চারদিন রামপুরহাট হাসপাতালে কাজ করি। তার মধ্যে রাতেও ডিউটি করতে হয়।” তিনি বলেন, “রাত ১০টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কাজ করার পরে ফের সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আর কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজ করা একজন চিকিৎসকের পক্ষে মুশকিল। স্বাভাবিক ভাবে চিকিৎসকদের আসা-যাওয়া নিয়ে একটা সমস্যা হয়। সেটা অস্বীকার করার কিছুই নেই। যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানাক।” অন্যদিকে রমিত দে’রও দাবি, “স্বাস্থ্যভবন থেকে রামপুরহাট হাসপাতালে আমারও কাজ করার নির্দেশ আছে। বৈদড়াতে দু’দিন কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
রামপুরহাট ১ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমন্তকুমার মণ্ডল বলেন, “হাসপাতালের অবস্থান খুব খারাপ জায়গায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নয়। নিয়মিত পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাস্তার উন্নতি দরকার। এ ছাড়া, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, সুইপার নেই। দু’জন নার্সের জায়গায় একজন রয়েছেন। তবুও মেডিক্যাল অফিসার রমিত দেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। বাকি দু’জন চিকিৎসকের অনিয়মিত আসা-যাওয়ার ব্যাপারে যা বলার রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতাল সুপার বলবেন।” |