গড়িমসি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের
চালু হয়নি এসএনসিইউ, পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র
দ্যোজাতদের জন্য বিশেষ পরিষেবা এবং অপুষ্টিতে ভোগা রোগীদের শুশ্রূষার জন্য জেলা জুড়ে বেশ কিছু ‘বিশেষ বিভাগ’ খোলার কথা স্বাস্থ্য দফতরের। প্রয়োজনীয় অর্থেরও অভাব নেই। কিন্তু তাও এই গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা চালু করা যাচ্ছে না পশ্চিম মেদিনীপুরে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পড়ে রয়েছে সেই তিমিরেই।
অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতার জন্যই এই দু’টি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পিছিয়ে পড়া পশ্চিম মেদিনীপুরের হাজার হাজার মানুষ। আর স্বাস্থ্য দফতরের ব্যাখ্যা, উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি না করে এই পরিষেবা চালু করা সম্ভব নয়। অভাব রয়েছে কর্মী, নার্স ও চিকিৎসকেরও। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “ইউনিটগুলি চালু করার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করতে কিছু সময় লাগছে। যেখানে পরিকাঠামো তৈরি করা গিয়েছে, সেখানে চিকিৎসক ও কর্মীর অভাবে চালু করা যাচ্ছে না। এই কারনেই কিছুটা সময় লাগছে।” তবে যত দ্রুত সম্ভব ইউনিটগুলি চালু করার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩টি এসএনসিইউ (সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট) ও ৭টি এসএনএসইউ (সিক নিউ বর্ণ সাপোর্ট ইউনিট) খোলার কথা। এর সঙ্গেই জঙ্গলমহলের ১১টি ব্লকে ১১টি পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র খোলার কথা রয়েছে। এসএনসিইউ-এর জন্য কয়েক মাস আগেই টাকা বরাদ্দ হয়। চলতি মাসের মধ্যে তিনটি ইউনিট চালু করারও কথা ছিল। কিন্তু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছাড়া অন্য দু’টি হাসপাতালে তা চালু করা যায়নি। কেন?
স্বাস্থ্য দফতর জানায়, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ইউনিটটি তৈরিই হয়ে রয়েছে। শুধুমাত্র বাতানুকুল যন্ত্র বসানো বাকি। দ্রুত যন্ত্রটি বসিয়ে পুজোর আগেই ওই ইউনিট চালু করার জন্য উদ্যোগ করা হবে। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালেও ইউনিট তৈরির কাজ শেষের পথে। কিন্তু চিকিৎসক ও কর্মী সঙ্কটের কারণে কবে ওই ইউনিট চালু করা যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ স্বাস্থ্য-কর্তাদের মধ্যেই। এসএনএসইউ চালু হওয়ার কথা সবং, বেলদা, চন্দ্রকোনা, কেওয়াকোল (গোয়ালতোড়), কেশপুর ও বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালেও। মেডিক্যাল কলেজ বা মহকুমা হাসপাতালের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাতেও সদ্যোজাত শিশুরা যাতে উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা পায় সে জন্যই এই উদ্যোগ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ইউনিটগুলির পরিকাঠামোও প্রায় তৈরি। কিন্তু কর্মী সঙ্কট। তাই চালু হতে দেরি। স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে ইউনিট চালু হলে যে চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন, তাঁদের উপর বেশি চাপ পড়বে। সেই চাপ নিতে রাজি নন তাঁরা। ফলে কবে ব্লক স্তরের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ এই সুবিধা পাবেন তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট হল পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র। হাসপাতালের মধ্যেই ১০ শয্যার একটি ওয়ার্ড থাকবে। সেখানে চিকিৎসক, পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, সহায়িকা, রাঁধুনী থাকবেন। অপুষ্টিতে ভোগা রোগীদের সেই ওয়ার্ডে রেখে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার দেওয়া হবে। চলবে চিকিৎসাও। ১১টি পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রের মধ্যে নয়াগ্রামের খনিকামাথানি, বিনপুর ও শালবনি হাসপাতালে পরিকাঠামো তৈরি করছে স্বাস্থ্য দফতর। বাকি ৮টি-র জন্য ৩২ লক্ষ ৬২ হাজার করে টাকা দিচ্ছে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও কাজ ঢিমেতালে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী খড়িকামাথানি ও বিনপুর কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হলেও ওয়ার্ডটি চালু করা হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও স্বাস্থ্য দফতর জানায়, খড়িকামাথানি ও বিনপুরে ভবন সংস্কারের কাজ শেষ হলেও শয্যা পাতা বাকি। বাকি রয়েছে কর্মী নিয়োগের কাজও। তবে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, বাকি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “ওই দু’টি কেন্দ্র দ্রুত চালু করার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বাকি ক্ষেত্রে ভবন তৈরি হলে ধীরে ধীরে কেন্দ্রগুলি চালু করা হবে।”
কিন্তু দ্রুত গতিতে কাজ এগোচ্ছে না কেন? স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তি, কর্মী না থাকলে কাজ করবে কে? এখন সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতি হলেই চিকিৎসকদের মারধর করা হচ্ছে। তাই সম্পূর্ণ পরিকাঠামো তৈরি না হলে এই ইউনিটগুলি চালু করতে রাজি হচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.