বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানে এক মাসের মধ্যে ফের একটি শিশু সহ ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এই নিয়ে দেড় বছরের মধ্যে ওই বাগানে ১০ জনের মৃত্যু হল। বিষয়টি জানার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “প্রশাসনিক সূত্র থেকে দুজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। একটি ক্ষেত্রে মদ্যপানের কারণে রোগে ভুগে মৃত্যু হয়েছে বলে বলে অফিসার ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। বিশদে খোঁজ নিচ্ছি।” পাশাপাশি, গৌতমবাবু জানান, ঢেকলাপাড়া বাগানের শ্রমিকদের নিয়মিত সরকারি অনুদান দেওয়া হচ্ছে। অন্ত্যোদয় যোজনার চাল,গম দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া নানা ভাবে সাহায্য করছে রাজ্য সরকার। তবে বাগানটি খোলার বিষয়টি নিয়ে তিনি স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। তাঁর কথায়, “বাগানটির বিষয় হাইকোর্টে বিচারাধীন।” গত ২৬ সেপ্টেম্বর জন্ডিসে ভুগে মারা গেছেন উঁচু লাইনের বাসিন্দা রীতা সোনার (৪২)। একই দিনে পেটের অসুখে ভুগে মারা যায় তিন বছর বয়সী শিশু জ্যোতিষ ওঁরাও। দীর্ঘদিন ভুগে ৩ অক্টোবর মারা যান ধীরেন লোহার (৪৫)। রীতা দেবী বাগানের শ্রমিক ছিলেন। তাঁর স্বামী কৃষ্ণ ছোট একটি মুদিখানা চালান। কৃষ্ণবাবুর কথায়, “সারা দিনে দোকানে ২০০ টাকার বেশি বিক্রি হয় না। ৩৫-৪০ টাকা লাভ হয়। স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। আমার স্ত্রী মদ খেত না। মন্ত্রী ঠিক বলছেন না।” একই প্রতিক্রিয়া নিচু লাইনের মৃত ধীরেন লোহার স্ত্রী সনমিত ও তার ছেলে বীরেনের। তাঁদের কথায়, “আমরা খাবার খেতে পাই না। মদ খাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।” ধীরেনবাবুর স্ত্রীর কথায়, “কিছু টাকা উপার্জনের খোঁজে ও প্রতিদিন নদীতে পাথর ভাঙতে যেত। ছমাস ধরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মৃত্যুর আগে তিন মাস বিছানা ছেড়ে উঠতে পারতেন না টাকার অভাবে ঠিক মত চিকিৎসা হয়নি।” ২০০২ সালের অগস্ট মাসে বাগানটি বন্ধ করে চলে যান কর্তৃপক্ষ। টানা ১০ বছর ধরে বাগান বন্ধ থাকায় অভাব ও অনটনে জর্জরিত শ্রমিক পরিবারে নেমে আসে চরম দুর্দশা। শ্রমিক সহ পরিবারের লোকজন মিলিয়ে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শ্রমিকরা দাবি করেছেন। বাম আমলে বন্ধ চা বাগানের মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল সরব হয়। বন্ধ কাঁঠালগুড়ি চা বাগানে গিয়ে অনাহারে মৃত্যুর জন্য বাম সরকারকে দায়ী করেন মমতা। |