নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ির সেবক রোডে মেয়র হোটেল-সহ একাধিক অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠার পরেও পুরসভা ব্যবস্থা না নেওয়ায় ফের কংগ্রেসকেই দূষলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার মন্ত্রী বলেন, “আমার হাতে বুলডোজার নেই, তাই বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পারছি না। পুরসভাকে বহুবার বলেছি, কেন কাজ হচ্ছে না জানি না। এই ক্ষেত্রে যৌথ দলের বোর্ড বললে চলবে না। কারণ বিল্ডিং বিভাগটি প্রথম থেকেই কংগ্রেসের হাতে রয়েছে। প্রথমে মেয়র নিজে তা দেখভাল করতেন। এর আমরা কোনও দায়ভার নেব না।” পাশাপাশি তিনি জানান, বেআইনি বিল্ডিং-এর তালিকা তৈরি হয়েছিল। তার পরে সেগুলি কেন ভাঙা হল না তা বুঝতে পারছেন না তিনি।
পুরসভা সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই শহরের সেবক রোড, বিধান রোড, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট, বর্ধমান রোড এলাকায় একাধিক বেআইনি বাণিজ্যিক ভবন তৈরির অভিযোগ রয়েছে। সেবক রোডের ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে, কয়েকমাস ধরে ফুটপাথের অংশে বাঁশ দিয়ে মাচা বেঁধে অবৈধ ভাবে নির্মাণ কাজ করছেন হোটেল মেয়রের লোকজন। এলাকার কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল, চেয়ারম্যান নান্টু পাল, কাউন্সিলর সুজয় ঘটক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছেন। ভবনের নিচ তলায় দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা কারবার করছেন তাঁরা বারবার পুরসভায় জানালেও কর্তৃপক্ষ সদর্থক ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। ব্যবস্থা না-নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী এক বা একাধিক নেতার হাত রয়েছে বলে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “ওই ভবনে যে অংশে নির্মাণকাজে অনিয়ম রয়েছে চিঠি দিয়ে তা ভাঙতে বলা হয়েছে। ভবনের মালিকানা নিয়ে মামলা চলায় অবৈধ নির্মাণের অংশ পুরসভার তরফে ভেঙে দিতে উদ্যোগ নেওয়া যায়নি। অন্যান্য ক্ষেত্রে মেয়র পারিষদদের সঙ্গে আলোচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” হোটেল মেয়রের বর্তমান মালিক বলে নিজেকে দাবি করেন ব্যবসায়ী কাজল সরকার। তিনি বলেন, “যে অংশে অবৈধ নির্মাণ ছিল তা আমরা ভেঙে দিয়েছি। ভবনের নিচে থাকা ব্যবসায়ীরা অসহযোগিতা করছেন। কাজ করতে দিচ্ছেন না বলেই মেরামতির কাজে দেরি হচ্ছে। না হলে এতদিনে কাজ সেরে ফুটপাথের অংশে থাকা বাঁশের মাচা খুলে দেওয়া যেত।”
পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল বলেন, “ওই হোটেল নির্মাণ কাজে অনিয়মের জন্য ব্যবসায়ীরা তাদের সমস্যার কথা অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছেন। বরো কমিটির বৈঠকে আলোচনার পরও সমস্ত কাউন্সিলররা অবৈধ নির্মাণ ভাঙার পক্ষে মত দেন। এ ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।” কাউন্সিলর সুজয় ঘটকের প্রশ্ন, “পুরসভার তরফে নোটিশ পাঠানোর পরেও কী ভাবে অবৈধ নির্মাণ কাজ চলছে? এর পিছনে রহস্য কী?” অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে যুব কংগ্রেসের তরফে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা হবে বলে তিনি সাফ জানিয়েছেন।
এ দিকে সেবক রোডে নির্মীয়মান যে ভবনে অবৈধ ভাবে গ্যাংওয়ে তৈরির অভিযোগ রয়েছে তাদের পুরসভার তরফে চিঠি দিয়ে শুক্রবারের মধ্যে খুলে ফেলতে বলা হয়েছে। রাস্তা চওড়ার জন্য ওই ভবনের সীমানা প্রাচীর পুরসভার তরফে ভেঙে দেওয়ায় প্রোমোটারকে তার খরচ দিতে বলা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল। ভবনের মালিকপক্ষের অন্যতম অনিল অগ্রবাল বলেন, “খরচ দিতে হবে বলে পুরসভার কোনও চিঠি পাইনি।” |