ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে পড়ায় প্রায় এক মাস যাবত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে মেজিয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ইসিএলের একটি খনিতে। আর বিদ্যুৎ না থাকায় সাতগ্রাম এরিয়ার সেই কালীদাসপুর কোলিয়ারির উৎপাদনও স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। কোলিয়ারির আবাসিকেরাও পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
আর এই ঘটনা একমঞ্চে নিয়ে এসেছে বাম, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপি-র শ্রমিক সংগঠনকে। অবিলম্বে বিকল ট্রান্সফর্মার মেরামতি করে ওই খনির উপাদন শুরু করার দাবি তুলেছেন শ্রমিকেরা। বুধবার এই দাবিতে ওই কোলিয়ারির মূল দরজার পাশেই একটি মঞ্চ গড়ে সিটু, আইএনটিটিইউসি, আইএনটিইউসি এবং ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের নেতৃত্বে ধর্নায় বসেছেন কয়েকশো শ্রমিক। কোলিয়ারির আইএনটিটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক রামনিরঞ্জন আচার্য বলেন, “প্রায় এক মাস ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে খনিতে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ উদাসীন। আমাদের আশঙ্কা, কেলিয়ারি বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা তাই দ্রুত কাজ শুরুর দাবিতে ধর্নায় বসেছি।” ওই কোলিয়ারির এক আধিকারিক জানান, তিন মেগাওয়াটের দু’টি ট্রান্সফর্মার দিয়ে খনির কাজ চলত। একটি কয়েক বছর আগেই খারাপ হয়ে যায়। মাসখানেক আগে অন্যটিও বিকল হয়ে পড়ে। তখন থেকেই উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে রয়েছে। আবাসিকদের জেনারেটর চালিয়ে প্রতিদিন দফায় দফায় বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে।
কালীদাসপুর কোলিয়ারি সূত্রের খবর, এখানে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ টন ‘বি’-গ্রেডের কয়লা উপাদন হয়। এই কয়লার মূল্য টন পিছু প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। ফলে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হচ্ছে। ওই কোলিয়ারি সংলগ্ন আবাসনটিতে শতাধিক মানুষের বাস। এক আবাসিকের ক্ষোভ, “রাতে ও দিনে দু২দফায় মাত্র ঘণ্টা ছয়েক বিদ্যুৎ পাচ্ছি। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি।” শালতোড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা আইএনটিটিইউসি-র বাঁকুড়া জেলা সভাপতি স্বপন বাউরি বলেন, “আমি সাতগ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজারকে যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা কাটিয়ে কোলিয়ারির উৎপাদন শুরু করতে বলেছি।” সাতগ্রাম এরিয়ার জিএম এন ঝা বলেন, “বর্তমানে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে রয়েছে ওই কোলিয়ারিতে। বিকল ট্রান্সফর্মারটি কুলটির নিয়ামতপুরে ইসিএলের নিজস্ব ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। সেটি মেরামত হয়ে গেলেই ফের উৎপাদন চালু হবে। আবাসিকদের সমস্যাও অনেকটা মিটবে।” |