পঞ্চায়েতের ৩টি সভায় হাজির না থাকায় সদস্যপদ খারিজ হল বনগাঁ ব্লকের সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক বাম সদস্যের। বনগাঁর মহকুমা শাসক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের নির্দেশে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউটন বিশ্বাস নামে ওই পঞ্চায়েত সদস্যের সদস্যপদ খারিজ হওয়ায় পঞ্চায়েতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল বামফ্রন্ট। অভিজিৎবাবু বলেন, “পঞ্চায়েত আইনেই আছে পঞ্চায়েতের পরপর তিনটি সভায় অনুমতি না নিয়ে অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট সদস্যের সদস্যপদ বাতিল হবে। আইন মোতাবেক নিউটনবাবুর সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে।”
ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরপুর পঞ্চায়েতে মোট সদস্য ১৪ জন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ও বামফ্রন্ট পেয়েছিল ৬টি করে আসন। কংগ্রেস ও বিজেপি ১টি করে আসন পায়। বোর্ড গঠনের সময় কংগ্রেস ও বিজেপি হাজির ছিল না। তখন লটারিতে জয়ী হয়ে প্রধান হন সিপিএমের শোভন সরকার, উপপ্রধান হন তৃণমূলের সন্ধ্যা রায়। এখন নিউটনবাবুর সদস্যপদ খারিজ হওয়ায় তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে ব্লক প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে। বনগাঁ বিডিও অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ অক্টোবর পঞ্চায়েতের অফিসে এ বিষয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
সদস্যপদ খারিজের পাশাপাশি প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্লক প্রশাসন এবং বনগাঁ থানায় প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁকে শো-কজ করা হয়েছে।
বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের সৌমেন দত্ত বলেন, “গ্রামবাসীরা আমাদের কাছেও অভিযোগ করেছিলেন। ব্লক প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে প্রধানের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে।” প্রধান শোভনবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তৃণমূলের পক্ষ থেকে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ জেলাশাসকের কাছেও জমা দেওয়া হয়েছিল। বিডিও গত এক বছর ধরে তদন্ত করেও অভিযোগের সত্যতা পাননি। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গেই পঞ্চায়েত পরিচালনা করেছি।”
সুন্দরপুর পঞ্চায়েত ছাড়াও সিপিএম পরিচালিত ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন বেআইনি কাজের অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। মহকুমাশাসক বলেন, ব্লক প্রশাসনের অর্ন্তবর্তী তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছি। বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কিছু গরমিল পাওয়া গিয়েছে। যদিও বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল পরিকল্পিত ভাবে ভুয়ো অভিযোগ তুলছে।” তাঁর দাবি, প্রশাসনিক আধিকারিকরা তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাননি। ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল জোর করে একশ দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। |