নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠল স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মঙ্গলবার চাপড়ার কাঠগড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিদাস প্রামাণিক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রেকসোনা খাতুনকে বেত দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। দেওয়ালের সঙ্গে ওই ছাত্রীর মাথাও ঠুকে দেন তিনি। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার এলাকার লোকজন স্কুলে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। রেকসোনার পরিবারের ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাপড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি বুধবার তারা জখম ছাত্রীটিকে নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেকা করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন।
ঘটনাচক্রে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক আবার চাপড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমানে কোর কমিটির সদস্য। এছাড়াও তিনি তৃণমূলের শিক্ষা সেলের প্রাথমিক শাখার জেলা সভাপতি। এই ঘটনায় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। হরিদাসবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। পড়া না পারার জন্য আমি ওই ছাত্রীকে বকাঝকা করেছিলাম মাত্র। রাজনৈতিকভাবে চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” অসুস্থ ওই ছাত্রী রেকসোনা খাতুন বলেন, “মাস্টার মশাই আমাকে খাতায় ইংরেজী লিখতে দিয়েছিল। আমি না পারায় বেত দিয়ে মারে ও দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেয়। আমাদের স্কুলে আরও দু’জনকে এভাবে মেরেছে।” অভিযোগ, এভাবে মার খেয়ে ছাত্রীটি যন্ত্রণায় কষ্ট পেলেও হরিদাসবাবু চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা না করেই স্কুল ছুটির পর বাড়ি চলে যান। ওই ছাত্রীর বাবা নজরুল শেখ বলেন, “বাড়ি আসার পর মেয়ে প্রচন্ড মাথা যন্ত্রনায় ছটফট করছিল। পিঠে একাধিক কালসিটের দাগ। ওকে যেভাবে মেরেছে তা শুনলে শিউরে উঠতে হয়।” রাতেই ওই ছাত্রীটিকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নজরুল শেখ বলেন, “ওই শিক্ষক মেয়েকে এমন মেরেছেন যে ডাক্তার সিটি স্ক্যান করাতে বলেছেন। আমরা গরীব মানুষ এত টাকা পাব কোথায় থেকে পাব বুঝতে পারছি না।” সম্প্রতি চাপড়ায় এক স্কুল ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাহলে একই অভিযোগে অভিযুক্ত হরিদাসবাবুও গ্রেফতার হবেন নিশ্চয়? জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র বলেন, “ওই ছাত্রীকে নিয়ে তার পরিবারের লোকজন এসেছিলেন। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে বলেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |