|
|
|
|
বাংলার পুতুলেই এ বার বাজিমাত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
কেজো হাতে শয়ে শয়ে পুতুল গড়ছেন উপল পাহাড়ি এবং তাঁর সহকারীরা। ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরায় তরুণ এই শিল্পীর সৃজনাগারে তৈরি হচ্ছে হরেক রকম পুতুল। এই সব পুতুলই ঝাড়গ্রাম শহরের কোর্ট রোডে ‘দুরন্ত সর্বজনীনে’র থিম এই বছরের ‘থিম’।
ঝাড়গ্রাম শহরের কোর্ট রোডে ‘দুরন্ত সর্বজনীনে’র থিম পুজোর পরিকল্পনায় রয়েছেন শিল্পী উপল পাহাড়ি। পুজোর থিম ‘বাংলার পুতুল’। থিমের পুতুলগুলি নিজের স্টুডিয়োয় বানাচ্ছেন শিল্পী। গত বছর থেকে শুরু হওয়া এই পুজোর এটা দ্বিতীয় বছর। শহরের কোর্ট রোডে ব্যস্ত রাস্তার ধারে এক চিলতে জায়গায় তাক লাগানো আটচালার আদলে মণ্ডপ গড়া হচ্ছে। মণ্ডপের দেওয়ালে দীর্ঘ কুলুঙ্গিতে সার সার থাকবে পুতুলগুলি। উপল জানালেন, মণ্ডপের অঙ্গসজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে রং বৈচিত্র্যে ভরা হরেক রকম আকার ও আয়তনের বাহারি পুতুল। যার মধ্যে রয়েছে জঙ্গলমহলের চিরাচরিত পোড়ামাটির হাতি-ঘোড়া পুতুল, বর্ধমানের কাঠের পুতুল, পূর্ব মেদিনীপুরের গালা পুতুল ও সীমান্ত বাংলার মিশ্র ধাতু দিয়ে তৈরি ডোকরা পুতুল। |
|
থার্মোকল দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপসজ্জার পুতুল। ঝাড়গ্রামের ঘোড়াধরায় ছবি তুলেছেন দেবরাজ ঘোষ। |
কিন্তু হঠাই পুতুল কেন? শিল্পী উপলের পাশাপাশি পুজোর কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ প্রধান জানান, বিভিন্ন ব্রান্ডের বিদেশি পুতুলে গ্রামগঞ্জের বাজার ছেয়ে গিয়েছে। ফলে আগামী দিনে বাংলার এই পুতুলগুলি থাকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই “বাংলার নিজস্ব ঐতিহ্যের পুতুল গুলির প্রচার ও রক্ষা প্রয়োজন। তা থেকেই এই থিম ভাবনা।”
বুধবার উপলের স্টুডিয়োতে গিয়ে দেখা গেল, থার্মোকল কেটে ‘কাঠের পুতুল’ তৈরি করা হচ্ছে। স্তূপীকৃত রয়েছে নানা শৈলির আরও কয়েকশো পুতুল। শিল্পীর কথায়, “কাঠের পুতুলের মধ্যে বিশেষ ভাবে জনপ্রিয় রাজা, রানি ও পেঁচা বানাচ্ছি। জঙ্গলমহলের পোড়া মাটির হাতি-ঘোড়া পুতুলগুলি অবশ্য একক শৈলির। ডোকরা পুতুলের মধ্যে কেবল পশুপাখি বানানো হয়েছে।” আর এই থিমের সঙ্গে মানানসই করে গড়ে উঠছে ডোকরা শৈলির মৃণ্ময়ী দুর্গা।
থার্মোকল দিয়েই সাত ফুটের দু’টি ‘মনের পুতুল’ও গড়ছেন উপল। বাংলার বিভিন্ন শিল্প আঙ্গিকের মিশেলের এই দুই ‘মনের মানুষ’ ঊর্ধ্ববাহু হয়ে মণ্ডপের খড়ের চালা ধরে থাকবে, যা এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ। |
|
|
|
|
|