র্যান্টি মার্টিন্স-কেন ভিনসেন্ট জুটির বিরুদ্ধে ধুন্ধুমার ‘যুদ্ধে’ নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে ওডাফা-টোলগে যুগলবন্দিকে কেমন যেন অগোছালো দেখাচ্ছে!
দু’জনে দু’জনের মতো তৈরি হচ্ছেন ম্যাচ জিততে। বুধবার সকালের অনুশীলনে ওডাফা একের পর পেনাল্টি কিক করেছেন, শুক্রবারের লক্ষ্য নির্ভুল রাখতে। উল্টো দিকে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার অনুশীলন ম্যাচে মাথা খুঁড়ে মরেছেন একটা গোলের আশায়।
মাঠের বাইরে অবশ্য দু’জনের দূরত্ব বারবার চোখে পড়েছে! অধিনায়ক ওডাফা গলা উঁচিয়ে বলে দিয়েছেন, “একটা ম্যাচ, মাত্র একটা ম্যাচ জিতলেই দেখবেন আমাদের টিমের চেহারাটা কেমন বদলে গিয়েছে। এখন শুধু প্রয়াগ ম্যাচটা জেতা দরকার।” সন্তোষ কাশ্যপের কোচিংয়ে জেতার জন্য ‘গোলমেশিন’-এর গলায় যখন মরিয়া মনোভাব তখন উল্টো পথে হেঁটেছেন টোলগে। কোচের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলে দিয়েছেন, “পজিটিভ স্ট্রাইকার হিসেবে খেলাটাই আমার পছন্দের। ইস্টবেঙ্গলেও তো তাই খেলে এসেছি। ওটাই তো আমার জায়গা। রাইট উইংয়ে খেলার অভ্যেস নেই বলেই লাজংয়ের বিরুদ্ধে সমস্যা হয়েছিল।” |
প্রস্তুতি। বুধবার মোহনবাগান মাঠে। ছবি: উৎপল সরকার |
যা শুনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি টিমে কোচের ‘বন্ধু’ বলে পরিচিত ওডাফা। যদিও মোহন-কোচ ওই দিন অনুশীলনে ওডাফার সঙ্গী রেখেই স্ট্রাইকারে খেলিয়েছেন টোলগেকে। ওডাফা-টোলগের মানসিক দূরত্ব যে কর্তাদের ভাবাচ্ছে না তা নয়। মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বলেও দিলেন “এ বার থেকে চেষ্টা করব টোলগে-ওডাফার যাতে আর কোনও মতভেদ না হয়।” ক্লাবের বেশির ভাগ কর্তার অবশ্য ধারণা, দল জিততে শুরু করলেই সব সমস্যা মিটে যাবে। এক কর্তা বললেন, “দুই তারকা এক টিমে থাকলে মানসিক দূরত্ব বাড়তেই পারে। দু’জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলে দল অনেকক্ষেত্রে লাভবানও হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত লড়াই শুরু হলেই সমস্যা হয়। সে দিকে আমরা শিলিগুড়ির ব্যর্থতার পরই নজর দিতে শুরু করেছি। কোচকেও সাবধান থাকতে বলেছি।” টিমের বোঝাপড়ায় যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য বুধবারও অন্য দিনের মতো সচিব অঞ্জন মিত্র অনুশীলনে হাজির ছিলেন। শ্যেন দৃষ্টি নিয়ে বসেছিলেন কোচ ও ফুটবলারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখতে।
দু’জনের মধ্যে মানসিক দূরত্ব মাঝেমধ্যে প্রকট হলেও প্রয়াগ ইউনাইটেডকে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের সময় ওডাফা এবং টোলগে কিন্তু দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন একই বিন্দুতে। শুক্রবারের ম্যাচ র্যান্টি বনাম ওডাফার লড়াই কি না জানতে চাইলে মোহন-অধিনায়ক রে রে করে উঠেছেন, “লড়াইটা প্রয়াগ বনাম মোহনবাগানের। আমার সঙ্গে কোনও ফুটবলারের ব্যক্তিগত লড়াই নেই। সবাই নিজের নিজের মতো খেলে।”
ওডাফা বলে যাওয়ার মিনিট পনেরো পরে টোলগের গলাতেও একই সুর। ময়দানে তাঁর সবথেকে অভিন্নহৃদয় বন্ধু কেন ভিনসেন্ট উল্টো দিকে খেলবেন। তা সত্ত্বেও টোলগে কিন্তু র্যান্টিকে নিয়ে বেশি চিন্তিত। বলছিলেন, “র্যান্টি প্রচুর গোল করেছে। কিন্তু ও খেলবে ওর মতো। আমার আমাদের মতো। এই ম্যাচটা কিন্তু আমাদের ওদের হারিয়ে জিততেই হবে।”
টোলগে-ওডাফা জুটি সামলাবেন না নিজের রক্ষণভাগ আঁটোসাঁট করবেন তা নিয়ে সন্তোষ কাশ্যপের অবশ্য রাতের ঘুম ছুটেছে। এমনিতেই কর্তারা তাকে বেশি কথা বলতে বারণ করে দিয়েছেন। তার উপর শুক্রবারের ম্যাচটা তাঁর কাছে ডু অর ডাই ম্যাচ। তাঁর মুখ থেকে তাই শুধু বেরোল, “প্রয়াগ খুব ভাল দল।” কর্তারা অবশ্য এরই মধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছেন, পুজোর সময় ফুটবলারদের ছুটি নেই। |