|
|
|
|
কর্মবিরতি হিমঘর শ্রমিকদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মজুরি বৃদ্ধি ও বোনাসের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার হিমঘর শ্রমিকেরা। তাঁদের দাবি, হিমঘরে আলু রাখার সময় বস্তা প্রতি ৫ টাকা ও নামানোর সময় বস্তা পিছু সাড়ে ৫ টাকা করে মজুরি দিতে হবে। পুজোর সময় ন্যূনতম ৫০০ টাকা বোনাসেরও দাবি করেছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক ঠিকাদার অ্যাসোসিয়েশন হিমঘর নামে আন্দোলনকারী ওই সংগঠনের বক্তব্য, মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় বসার দাবি জানালেও হিমঘর কর্তৃপক্ষ তা মানছেন না। তাই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত। হিমঘর মালিকদের পাল্টা দাবি, চলতি বছরে কত মজুরি হবে তা সমস্ত কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে বসে আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছিল।
এ দিকে, হিমঘরে কর্মবিরতি চলায় আলু বার করা যাচ্ছে না। ফলে বাজারে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি এই সময় আলু চাষ হওয়ায় হিমঘরেই বীজ রাখেন চাষিরা। বীজ না পেলে চাষে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
সোমবার থেকেই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ওই শ্রমিক সংগঠন। তাঁদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ জোর করে কম টাকায় খাটিয়ে নিচ্ছে। শ্রমিক সংগঠনগুলিকে গুরুত্বই দিচ্ছে না। শ্রমিকদের দাবি, বর্তমানে মজুরি ‘লোডিংয়ে’র ক্ষেত্রে বস্তা প্রতি ৩ টাকা ৬০ পয়সা (যে হিমঘরে লিফট রয়েছে) ও ৩ টাকা ৭৫ পয়সা (যেখানে লিফট নেই)। আর ‘আনলোডিংয়ে’র ক্ষেত্রে ৩ টাকা ৪০ পয়সা ও ৩ টাকা ৫৫ পয়সা। আন্দোলনকারী সংগঠনের রাজ্য কমিটির সহ-সম্পাদক মধুসূদন দাস বলেন, “হিমঘর কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসতে চাইছেন না। তাই কর্মবিরতি। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার জন্য শ্রমিকদের উপর চাপও দিচ্ছেন তাঁরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শ্রমিকেরা” কিন্তু বছর শেষে আচমকা মজুরি বাড়ানোর দাবি কেন? মধুসূদনবাবুর যুক্তি, “জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। ওই টাকায় কাজ করা সম্ভব নয়। অন্ততপক্ষে আগামী বছর থেকে লোডিংয়ে বস্তা পিছু ৫ টাকা ও আনলোডিংয়ে বস্তা পিছু সাড়ে ৫ টাকা দিতে হবে। এখন থেকেই মালিকপক্ষকে সেই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার দাবি জানিয়েছি আমরা। তারই সঙ্গে বোনাসও দিতে হবে।” হিমঘর অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিম মেদিনীপুরের চেয়ারম্যান সুনীল রাণা অবশ্য সাফ জানান, চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ ওয়ার্কাস অ্যান্ড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন, পশ্চিমবঙ্গ শ্রমিক ঠিকাদার অ্যাসোসিয়েশন হিমঘর, পশ্চিমবঙ্গ মুটিয়া মজদুর ইউনিয়ন কো-অর্ডিনেশন কমিটি ও ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই ২০১২ সালের এই মজুরি ঠিক করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও মাঝপথে একটি শ্রমিক সংগঠন কর্মবিরতি ডেকে কাজে বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “চুক্তিপত্রে সই করেও হঠাৎ কর্মবিরতি ডাকা চলবে না। এমন চলতে থাকলে বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব।” আর বোনাসের প্রসঙ্গে সুনীলবাবু বলেন, “প্রতি বছরই পুজোর আগে মালিকেরা বসে বোনাস নিয়ে আলোচনা করেন। বছরে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বোনাস বৃদ্ধি হয়। এই বছর এখনও সেই আলোচনা হয়নি। শ্রমিকেরা যাতে বঞ্চিত না হন তা খতিয়ে দেখেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|