দার্জিলিঙের চিড়িয়াখানায়
রওনা দিল জার্মানির অতিথি
জার্মানির নুরেমবার্গ থেকে বাংলার দার্জিলিং। মাঝে কলকাতা বিমানবন্দরে ঘণ্টাখানেকের বিশ্রাম। এগিয়ে দেওয়া হয়েছিল পরিশুদ্ধ জল, কিঞ্চিৎ বোনলেস চিকেনও। তবে সে সব মুখে তোলা দূরে থাক, বিরক্তিতে থাবা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে সে।
বয়স বছর আড়াই। নুরেমবার্গ থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে লুফৎহানসার পণ্যবাহী বিমানে মঙ্গলবার সন্ধেয় কলকাতা পৌঁছল স্নো-লেপার্ডটি। রাতেই তাকে রওনা করিয়ে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের পথে। দার্জিলিঙের পদ্মজা নায়ডু চিড়িয়াখানার পাশেই দেশের একমাত্র স্নো-লেপার্ড (তুষার চিতাবাঘ) প্রজনন কেন্দ্র। সেখানে আরও দশটি স্নো-লেপার্ড রয়েছে। জার্মানি থেকে আসা নতুন অতিথির ঠিকানাও হবে সেখানেই। বিশ্বের ১১টি স্নো-লেপার্ড প্রজনন কেন্দ্রের মধ্যে পদ্মজা নায়ডু চিড়িয়াখানার বিশেষ সমাদর রয়েছে। গত কয়েক বছরে ওই প্রজনন কেন্দ্রে অন্তত পাঁচটি শাবকের জন্ম হয়েছে বলে বন দফতরের দাবি। মাস কয়েক আগে পাহাড় সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদ্যোজাত একটি স্নো-লেপার্ড শাবকের নামকরণও করেছেন, ‘স্মাইলি’। শীত শেষে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ তাদের প্রজননের সময়। সে কথা মাথায় রেখেই প্রাক্ শীতে এই স্ত্রী লেপার্ডটিকে উড়িয়ে আনা হয়েছে বলে বনকর্তারা জানান।
কলকাতায় নেমে ভ্যাপসা গরমে যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য আগাম বাতানুকুল খাঁচার ব্যবস্থা করেছিল বন দফতর। কিন্তু কলকাতা থেকে দার্জিলিং, এই দীর্ঘ পথ সে পাড়ি দেবে কী করে? কলকাতায় হাজির দার্জিলিং চিড়িয়াখানার কর্তারা কথা বলেছিলেন জেট এবং এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। বিমানে চাপিয়ে যদি তাকে বাগডোগরা নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বিমান সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয়, সেটা সম্ভব নয়।
কেন? বিমান সংস্থা সূত্রের খবর, কলকাতা-বাগডোগরা সহ দেশের বেশির ভাগ রুটে যে ধরনের বিমান চলে, সেগুলি যাত্রী ছাড়া বেশি পণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে পারে না। বিমানের পেটের ভিতরে যেখানে পণ্য নিয়ে যাওয়া হয়, তার দু’টি খোপ থাকে। যাত্রীদের কেবিনে যে অক্সিজেন ও তাপমাত্রা থাকে, পণ্যের একটি খোপে সেই অক্সিজেন ও তাপমাত্রা সরবরাহ করা হয়। সেখানে প্রয়োজনে ছোট প্রাণী বহন করা গেলেও বড় প্রাণী নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বিমান সংস্থার এক কর্তার কথায়, “বিমানের যে ছোট অংশে অক্সিজেন সরবরাহ থাকে, সেখানে খাঁচাসমেত স্নো-লেপার্ড নিয়ে যাওয়ার মতো জায়গা নেই।”
তা হলে? বন দফতরের প্রধান মুখ্য বনপাল অতনু রাহা বলেন, “রাতেই গাড়িতে স্নো-লেপার্ডটিকে সড়ক পথে দার্জিলিং রওনা করে দেওয়া হয়েছে।” তবে বাতানুকুল খাঁচা নয়, সাধারণ খাঁচাতেই। এতে অসুবিধা হবে না ওর? দার্জিলিং চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অলঙ্কার ঝা বলেন, “যাওয়ার সময়ে রাতে তাপমাত্রা বড়জোর ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে। খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বাতানুকূল বদ্ধ খাঁচার চেয়ে হাওয়া চলাচল করে এমন খাঁচা এখন ওর বেশি প্রয়োজন।” তিনি জানান, এর আগে দার্জিলিং থেকে নৈনিতাল, চার দিনের রাস্তা পাড়ি দিয়েছে স্নো-লেপার্ড। তবে সেটা ছিল ঘোর শীতকাল। বন-কর্তাদের একাংশের মনে তাই একটু দুশ্চিন্তা রয়েই যাচ্ছে। যাত্রাপথে তাই সঙ্গে রাখা হয়েছে এক জন পশু চিকিৎসকও। নতুন অতিথি আপাতত সুস্থই আছে বলে জানা গিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.