কাজ শুরু হুগলিতে
একশো দিনের কাজে ‘ইলেকট্রনিক্স মাস্টার রোল’
কশো দিনের কাজে দুর্নীতি রুখতে এবং প্রকল্পের গতি বাড়াতে তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে সরকার। রাজ্যের মধ্যে হুগলি জেলায় প্রাথমিক ভাবে এই কাজ শুরু হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে জেলায় গত সোমবার থেকে ‘ইলেকট্রনিক্স মাস্টার রোল’ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে জেলার ১৮টি ব্লকের ৩টি পঞ্চায়েতে কাজ শুরু হয়েছে। বাকি সমস্ত পঞ্চায়েতে এই ব্যবস্থা চালু হবে ১ নভেম্বর। প্রশাসনের দাবি, এই ব্যবস্থায় শ্রমিকেরা কাজ শেষ হওয়ার চার দিনের মাথায় মজুরি পাবেন। মাস্টার রোলে ভুয়ো শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত করারও উপায় থাকবে না। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “কেন্দ্রের নির্দেশে কাজ চালু হয়েছে। এই কাজে সম্ভাব্য অসুবিধাগুলি নিয়ে বিডিওদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”
কী ভাবে কাজ হবে নতুন প্রযুক্তিতে?
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অত্যাধুনিক অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তির মোবাইল ফোন দেওয়া হচ্ছে সুপারভাইজারদের। কাজ শুরু হতেই সমস্ত তথ্য সুপারভাইজাররা দফতরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। প্রকল্পের সমস্ত তথ্য কম্পিউটারে নথিভুক্ত করার জন্য ব্লক অফিসে রয়েছেন একাধিক এপিও (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার)। কত জন কাজে এসেছেন, জবকার্ড কত জনের কাছে আছে, সকলের জবকার্ড নম্বর তৎক্ষণাৎ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে দফতরে। ফলে কাজে না এসে সুপারভাইজারকে চাপ দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া, কম কাজ করে কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে লেখানোর সুযোগ কমবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিব তথা এমজি এনআরইজিএ কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার বলেন, “প্রকল্পে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার প্রথম হুগলিতেই চালু হয়েছে। শীঘ্রই সারা রাজ্যে এই ব্যবস্থা চালু হবে। এর ফলে এত দিন যা সমস্যা হত, তা থাকবে না।”
ব্লক প্রশাসনের কর্তারা জানান, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে মাস্টার রোলে ভুয়ো শ্রমিকের নাম তোলা, একই জায়গায় বারবার কাজ করে নতুন সংস্কারের কাজ দেখিয়ে দুর্নীতি চলে। ‘ইলেকট্রনিক্স মাস্টার রোল’ চালু হওয়ায় এই সব দুর্নীতি আটকানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। নতুন মাস্টার রোলে থাকছে যাবতীয় জবকার্ডের তথ্য, প্রকল্পগুচ্ছের তথ্য, প্রতিদিনের কাজের পরিমাণ, শ্রমিকের হাজিরা-সংক্রান্ত তথ্য। এ ছাড়া, কাজের দাবিদার এবং কাজ পাওয়া পরিবারের সংখ্যা, মাসে প্রত্যেক পরিবার গড়ে কত দিন কাজ পাচ্ছেন, সে সব তথ্যও নথিবদ্ধ থাকছে। একই জায়গায় বারবার কাজ করা আটকাতে প্রতিটি ব্লককে ‘গ্লোবাল পজিশন রিসিভার’ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা চিহ্নিত করা যাবে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তারা সরাসরি দেখতে পাবেন।
এ দিকে, সম্প্রতি এনআরইজিএ কমিশনারের নির্দেশিকায় বিভ্রান্ত ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। বিষয়টি অনেক বিডিও জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। ব্লক কর্তারা জানান, প্রাপ্য মজুরি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ২০০৫-এর আইনে বলা রয়েছে, শ্রমিকেরা ন্যূনতম মজুরি পাবেন।
অন্য দিকে, রাজ্যের নিয়মাবলীতে বলা রয়েছে কাজের পরিমাপ অনুযায়ী মজুরি দিতে হবে। আবার এ বছর ৩০ জুলাই এনআরইজিএ কমিশনার নির্দেশ পাঠান, কোনও শ্রমিককেই ন্যূনতম মজুরির কম দেওয়া যাবে না। বর্তমানে অদক্ষ শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৩৬ টাকা। কাজের পরিমাপও মাথা-পিছু ৯৯ সিএফটি থেকে নেমে ৬৯ সিএফটি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কেউ কম কাজ করলে মজুরি দেওয়া হবে কী ভাবে? দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “শ্রমিকদের কাজ করিয়ে ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে। তারপরেও কেউ কম কাজ করলে কম মজুরি পাবেন।”
বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যেও বিভ্রান্তি আছে। নতুন ব্যবস্থায় সেই সমস্যা কাটে কিনা, সেটাই দেখার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.