সাইবার-অস্ত্রে শান দিতে
সেনাবাহিনীও বাজারমুখী

যুদ্ধ এখন শুধু জলে-স্থলে-আকাশে নয়। নতুন দুনিয়ায় ইন্টারনেট হল নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। আর প্রথাগত যুদ্ধে জিততে যেমন আধুনিক থেকে আধুনিকতর কামান-বন্দুক-বোমারু বিমানের দরকার, তেমন সাইবার-রণাঙ্গনে টিকে থাকতে প্রয়োজন যুতসই ‘ই-হাতিয়ার।’
ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিজস্ব গবেষণা-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর একার পক্ষে যে সব সময় ওই চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়, সেনা-কর্তারা তা বুঝেছেন। নেট-যুদ্ধে অস্ত্রের জোগান নিশ্চিত করতে বেসরকারি সংস্থার হাত ধরতে চান তাঁরা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, বেসরকারি উদ্যোগের সঙ্গে জোট বেঁধে সাইবার-শত্রু প্রতিরোধের ‘রোড ম্যাপ’ তৈরি করবে সেনাবাহিনী। লক্ষ্যপূরণের প্রথম ধাপ হিসেবে আজ, বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে তথ্য-প্রযুক্তি ও টেলিকম শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ফৌজি কর্তারা। দেশে এমন বৈঠক প্রথম। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে সংস্কারের পথে হাঁটছে ভারতীয় সেনাকেও।
বস্তুত তামাম বিশ্ব জুড়েই নেট-সুরক্ষা নিয়ে এখন সাজো-সাজো রব। ২০০৯-এ খোদ পেন্টাগন জানিয়েছিল, শুধুমাত্র সাইবার-হামলার জের সামলাতে ছ’মাসে তারা খরচ করেছে অন্তত দশ কোটি ডলার! তবে সামরিক পরিকাঠামোয় সাইবার-বিপদ প্রতিরোধ করতে হলে টেলি-যোগাযোগ বা তথ্য পরিবহণের অন্যান্য অসামরিক পরিকাঠামোতেও সতর্ক নজর রাখা সমান জরুরি। “কারণ ওই সব জায়গায় প্রযুক্তিগত আপস করলে সামরিক ব্যবস্থাও বিপদের মুখে পড়বে।” বুধবার দিল্লি থেকে ফোনে বলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসপি কোছার।
এবং এ জন্য নিরাপত্তার খাতিরেই যতটা সম্ভব দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের পক্ষপাতী ভারতীয় সেনার ‘সিগন্যালস’ বিভাগের এই কর্তা। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বেসরকারি সংস্থাগুলোকে নিয়ে সাইবার-সুরক্ষার সুসংহত পরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে সেনার সিগন্যালস বিভাগই আজ দিল্লিতে আলোচনাসভার আয়োজন করেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ন্যাশনাল সেমিনার অন টেকনোলজি সভরেনিটি ইন ইনফর্মেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি।’ নয়াদিল্লির মানেক্শ সেন্টারের সভায় সিগন্যালস কর্তাদের মুখোমুখি বসবেন ‘সেন্টার ফর ডিজিট্যাল ইকনমি পলিসি রিসার্চ (সিডিইপি)-এর প্রতিনিধিরা। দেশের তথ্য-প্রযুক্তি, টেলিকম বা ই-গভর্নেন্সের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শিল্পসংস্থার সংগঠন হল সিডিইপি। কিছু বেসরকারি সংস্থা এখনও সেনার জন্য কাজ করে। কিন্তু তার ধরন অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকল্প-ভিত্তিক। সার্বিক পরিকল্পনার অভাবে অনেক সময়ে কাজের ধারাবাহিকতাও থাকে না বলে সংশ্লিষ্ট শিল্প-কর্তাদের একাংশের আক্ষেপ। তাঁদের মতে, ফৌজের প্রযুক্তিগত চাহিদা ও বেসরকারি সংস্থার দক্ষতা এক জায়গায় আনতে নির্দিষ্ট নীতি দরকার। তবে সেনার নতুন উদ্যোগ শিল্পমহলকে উৎসাহিত করে তুলেছে। তারা মনে করছে, ফলে দেশের ডিজিট্যাল শিল্পক্ষেত্রের সামনে বিশাল বাজার খুলবে।
সিডিইপি-র প্রধান জয়জিৎ ভট্টাচার্যের কথায় “তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় এখনও অনেকটা পথ হাঁটা বাকি। সেনার নতুন চিন্তা-ভাবনা ওই ঘাটতি পূরণে সহায়ক হতে পারে,” বলছেন তিনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.