|
|
|
|
স্কুলে ত্রাণ শিবির, রাজপথেই ক্লাস করল ছাত্রছাত্রীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
স্কুলে রয়েছে ত্রাণ শিবির। তাই তিন মাস ধরে স্কুলছাড়া ছাত্র-ছাত্রীর দল। আজ বিলাসিপাড়ার রাজপথে ক্লাস করে তারা অভিনব ভাবে প্রতিবাদ জানাল।
জুলাই মাস থেকেই বড়ো স্বশাসিত পরিষদে অশান্ত পরিস্থিতি চলছে। গত মাসে শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, সব স্কুলে অবিলম্বে পড়াশোনা শুরু হবে। কিন্তু তারপরও তিরিশ দিন কেটে গেল। বহু স্কুল থেকেই ত্রাণ শিবির সরানো হয়নি। নষ্ট হচ্ছে শিক্ষাদিবস। সিলেবাস শেষ হওয়ারও আশা নেই। এই পরিস্থিতিতে আজ বিলাসীপাড়ার রোকাখাটা হাই স্কুল, ইন্দ্রনারায়ণ অ্যাকাডেমি, বিলাসিপাড়া পাবলিক হাই স্কুল, বিলাসিপাড়া টাউন হাই স্কুল ও পূর্ব বিলাসিপাড়া গার্লস হাইস্কুলের প্রায় হাজারখানেক ছাত্র-ছাত্রী আচমকাই স্কুলের পোশাকে খাতা-বই নিয়ে ব্যস্ত জে পি রোডের উপরে বসে পড়ে। তাদের দাবি, স্কুল খালি না হলে রাজপথেই তাদের ক্লাস নেওয়া হোক।শিক্ষকরাও ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সামিল হয়েছেন। ধমক নয়, ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি মেনে তাঁরাও ব্ল্যাক বোর্ড, চক, ডাস্টার-সহ রাজপথেই ক্লাস করাতে থাকেন। চারদিকে ভিড় জমে যায়। উৎসাহী পথচারীদের নানা মন্তব্য। কিন্তু শ্রেণিকক্ষের চেয়েও বেশি মন দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে ক্লাস করল। প্রতি আধঘণ্টা অন্তর বাজল পিরিয়ড শেষ হওয়ার ঘন্টাও। ও দিকে, ঠায় দু’ঘণ্টা থমকে গেল জে পি রোডের যান চলাচল।
কিন্তু কেন এমন অভিনব প্রতিবাদ?ছাত্র-ছাত্রীদের জবাব, ‘‘গত তিন মাস ধরে স্কুল বন্ধ। নেতারা রাজনীতি করছেন। মন্ত্রীরা আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আমরা কী ভাবে পড়াশোনা করব তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।’’ সামনেই পরীক্ষা। দরজায় কড়া নাড়ছে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক। কোথাও সিলেবাস শেষ করা যায়নি। শিক্ষকরা জানান, রাজ্য মাধ্যমিক পর্ষদের অধীনে থাকা স্কুলগুলিতে বার্ষিক পরীক্ষা ডিসেম্বর মাসে। তার আগে জুলাই থেকে অক্টোবর ক্লাস বন্ধ থাকায় বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। এরপর স্কুল খুললেও তিন মাসের পড়া বাকি দেড় মাসে শেষ করা অসম্ভব।
তিন মাস ধরে, জেলার ১৭০টি স্কুলে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। প্রায় ষাট হাজার ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিবাদে বিরক্ত নয়, বরং সহানুভূতিশীল শিবিরবাসীরাও। রোকাখাটা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিরণ্য নাথ নিজেও রাজপথে ক্লাস নিলেন। তাঁর কথায়, “ক্লাস না হয় করানো হল, কিন্তু অস্থায়ী ছাউনিতে পরীক্ষণাগারের সুবিধা কী ভাবে পাওয়া যাবে? ভাল ফলের জন্য দু’বছর আমারা সেরার সম্মান পেয়েছে। কিন্তু এ বার আর আশা নেই।” |
|
|
|
|
|