হিন্দুত্ব নিয়ে ধন্দ বাড়িয়ে দিল গডকড়ীর সভা
গোবলয় উত্তরপ্রদেশ থেকেই কংগ্রেসের ‘উপযুক্ত বিকল্প’ হিসেবে বিজেপিকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন নিতিন গডকড়ী। প্রার্থী বাছাই থেকে কর্মীদের গুরুত্ব বাড়ানোর মতো নানা দাওয়াই তিনি দেওবন্দের জনসভা থেকে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গোল বাধাল সেই ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম হিন্দুত্বের সঙ্কট। ফলে ধন্দ গেল বেড়ে।
সদ্য সমাপ্ত দলের কর্মসমিতি ও পরিষদের বৈঠকে কংগ্রেসের বিকল্প হয়ে ওঠার জন্য এনডিএ-র বিস্তার ও বিজেপি সম্পর্কে সংখ্যালঘুদের ভয় দূর করার দাওয়াই দিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীরা। এ জন্য উন্নয়নের মডেলের পাশাপাশি ‘বিশ্বাসযোগ্য ধর্মনিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তি গড়ার পরামর্শও দেন তিনি। কিন্তু আজ লোকসভার প্রস্তুতি হিসাবে উত্তরপ্রদেশে প্রথম জনসভায় গডকড়ীর সঙ্গে সমান গুরুত্ব দেওয়া হল কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা বিনয় কাটিয়ারকেও। পোস্টার-ব্যানার-কাট আউটে সমান স্থান পেলেন দুই নেতা। কিন্তু কথা বললেন দুই ভিন্ন সুরে। গডকড়ী যখন দলের লাইন মেনে জাত-পাত-ধর্মের উপরে উঠে চলার কথা বললেন। আমেরিকায় ইসলাম-বিরোধী চলচ্চিত্র প্রচারের ঘোর নিন্দা করলেন। কাটিয়ার তখন উস্কে দিলেন অযোধ্যা প্রসঙ্গ। জানতে চাইলেন, রামমন্দির কী পাকিস্তানে হবে? দেওবন্দে ‘সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ’ বন্ধ করার ব্যাপারে অতীতে করা তাঁর নিজের মন্তব্যও যথার্থ বলে তুলে ধরলেন।
দেওবন্দে গডকড়ী। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ শহর খ্যাত প্রভাবশালী দারুল-উলুম মাদ্রাসার জন্য। আবার সেই দেওবন্দই হিন্দুদের আস্থার প্রতীক। মা দুর্গা এখানেই না কি মহাসুরকে বধ করেছিলেন। এখানকার দেবীকুণ্ড শক্তিপীঠের অঙ্গ। ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা দেওয়ার জন্য সেই দেওবন্দকেই বেছে নিয়েছিলেন গডকড়ী। সংখ্যালঘুদের সিনেমা-ক্ষতে প্রলেপের কথা বলে অভয় দিতে চাইলেন।
কিন্তু এ পথে চলে কি বাড়তি লাভ পাবে বিজেপি?
দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করেন, না। বরং হিন্দু-মুসলিম বিভাজনেই সংহত হতে পারে বিজেপির ভোট-ব্যাঙ্ক। শাসক সমাজবাদী পার্টির সংখ্যালঘু তোষণে ক্ষুব্ধ অংশের ভোটও পেতে পারে বিজেপি। রামমন্দির আন্দোলনের সুফল ঘরে তোলার বিষয়টিও রয়েছে। তাই গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরতে হয় বিনয় কাটিয়ারের কট্টরপন্থী ভাবমূর্তিকে। আর সেখানেই ধন্ধ। তাই যদি হয়, তবে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা কেন তুলতে গেলেন গডকড়ী?
অথচ লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে এগিয়ে থাকতে এ দিন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন গডকড়ী। যেমন লোকসভা নির্বাচন যখনই হোক, এ বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। বাবুসিংহ কুশওয়াহা বা বাদশা সিংহের মতো বিতর্কিত নেতাদের সঙ্গে জোট বাঁধা হবে না। কল্যাণ সিংহকে শীঘ্রই দলে ফেরানো হবে, তবে কোনও শর্ত ছাড়া। রাজ্য স্তরের কোনও নেতাকেই আর প্রাধান্য দেওয়া হবে না। গোটাটাই নিয়ন্ত্রিত হবে দিল্লি থেকে। গুরুত্ব দেওয়া হবে কর্মীদের। তাঁদের মনোবল বাড়িয়ে জনভিত্তি বাড়ানোই দলের সব থেকে বড় লক্ষ্য।
কিন্তু তাতেও সঙ্কট মিটছে না। দলের অনেক নেতাই মনে করছেন, এই বিভ্রান্তির বার্তার জন্যই দলকে বারবার খেসারত দিতে হয়। এ বারও হয়তো হবে। দলের নেতৃত্ব নিজেরাই স্থির করে উঠতে পারেন না, কোন কৌশল নেবেন। যার ফলে আম-জনতার কাছেও কোনও স্পষ্ট বার্তা পৌঁছয় না। তা ছাড়া, গডকড়ী উত্তরপ্রদেশে নেতাদের দ্বন্দ্বের কতা বলছেন। কিন্তু দলের শীর্ষ স্তরে যে নেতায়-নেতায় লড়াই চলছে, তা যে কিছুতেই মিটছে না। আজও তাই গডকড়ীর সামনেই উঠল নরেন্দ্র মোদীর জয়ধ্বনি!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.