‘উদ্বোধনে আসবেন মমতা, তার আগেই সারানো হবে’
যেখানে পার্থর ভয়, সেখানেই গর্ত হয়!
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নাকতলার একটি পুজো এখন কলকাতার রীতিমতো নজরকাড়া ঠিকানা। ভিড় উপচে পড়ে। আর সেই পুজোমণ্ডপে যাওয়ার পথেই বড় রাস্তার উপরে খানাখন্দ। ঘনঘন টাল সামলাচ্ছে অটো-মোটরবাইক। পার্থবাবু ভীত হতেই পারেন এই ভেবে যে, তাঁর পুজো দেখতে এসে গর্তে পড়ে আহত হবেন কত জন!
পুজোর আগে কেমন আছে দক্ষিণ কলকাতার রাস্তাঘাট, তা দেখতে বেরিয়ে মঙ্গলবার এটাই প্রথম অভিজ্ঞতা। বিশাল সেই গর্তেই এ দিন দুপুরে আটকে যায় যাত্রীভর্তি এক অটোর চাকা। কোনও মতে দু’চার জনের সাহায্য নিয়ে অটোটিকে তোলা হয় রাস্তায়। হিমশিম খান অটোর চালক। ঘটনাস্থল: এনএসসি বসু রোডে নাকতলা বাজার এলাকা।
এন এস সি বসু রোড
ওই পুজোর সহ-সম্পাদক অঞ্জন দাসের অবশ্য দাবি, “রাস্তার এ রকম হালের কথা জানা নেই। তবে আজই দেখে নেব। চতুর্থীতে আমাদের পুজোর উদ্বোধন। রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী আসবেন। তার আগেই রাস্তা সারিয়ে ফেলা হবে।”
টালিগঞ্জ থেকে এনএসসি বসু রোড গিয়ে মিলেছে গড়িয়া মোড়ে। আপাতদৃষ্টিতে দেখে কেউ ভাবতেই পারবেন না, এই রাস্তাতেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু রাস্তার মধ্যে মারাত্মক অবস্থায় থাকা কয়েকটি গর্ত আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই পথে যাতায়াতকারী দুই ও তিন চাকার যানের আরোহীদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, “মাঝেমধ্যেই ভেঙেচুরে যাওয়া জায়গাগুলিতে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রশাসনকে কত বার জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি।” পূর্ত দফতরের অধীন ওই রাস্তাটি সারাতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে পুলিশও। পূতর্র্ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘‘এমনিতে ওই রাস্তার হাল ভালই। বিশেষ কোনও জায়গা খারাপ হয়ে থাকলে তা দেখা হবে।”
দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোডের অবস্থা তুলনায় ভাল হলেও বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে শুরু হওয়া হাজরা রোডে পুজোর ক’দিন কী ভাবে যান চলাচল করবে, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পুলিশ-প্রশাসন। লালবাজারের এক পদস্থ অফিসার জানিয়েছেন, পুরসভাকে দেওয়া তালিকায় হাজরা রোডের দ্রুত সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পুরসভার নিকাশি কাজের জন্য যে বড় বড় পলিথিনের পাইপ ওই রাস্তার দু’পাশে রাখা হয়েছে, সরাতে বলা হয়েছে সেগুলিকেও। সে কাজ না হলে পুজোয় হাজরা রোড পুরোপুরি থমকে যাবে বলে মনে করছেন ট্রাফিক পুলিশের পদস্থ কর্তারা।
পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ রাজীব দেব বলেন, “পুলিশকে বলেছি, চিন্তার কোনও কারণ নেই। পুজোর আগেই ওই পাইপ বসানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
রাজা সুবোধ মল্লিক রোড
পুজো উপলক্ষে সারানোর জন্য দক্ষিণ কলকাতার যে সমস্ত রাস্তার তালিকা কলকাতা পুলিশ দিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, ব্রড স্ট্রিট, গোলপার্ক থেকে যাদবপুর থানা মোড়, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ ও কর্নফিল্ড রোডের মোড়, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের কিছু অংশ। তবে সেই তালিকা মতো সারাইয়ের কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্তারা।
বাইপাস ও রাসবিহারী কানেক্টরের উপরে কয়েকটি গর্তে পিচের প্রলেপ পড়েছে। কিন্তু তাতে রাস্তা কোনও ভাবেই বিপন্মুক্ত হয়নি। নবদিগন্ত কো-অপারেটিভ হাউজিংয়ের কাছে রাস্তার উপরে এখনও বড়সড় একটা গর্ত ভাবিয়ে তুলেছে এলাকাবাসীদের। ওই পথে অনেক ম্যানহোলই রাস্তার তুলনায় এতটা নীচে যে, তা ছোট চাকার গাড়ির জন্য বিপজ্জনক। টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে চিরন্তনী মাঠের কাছে বিরাট দু’টো গর্ত। যাদবপুরে সুলেখা মোড়েরও কাছে দু’টি বিশাল গর্ত। যা এ পথে নতুন চালককে যে কোন সময়ে বিপদে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দা বৃন্দাবন দাসের। একই হাল টালিগঞ্জের করুণাময়ী থেকে শুরু হওয়া মহাত্মা গাঁধী রোডের কিছু অংশেও। স্থানীয় ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রত্না শূরও বলেন, “করুণাময়ী থেকে সিরিটি শ্মশানের রাস্তাটা খারাপ। ওটা সারানো দরকার।”
পুরসভার রাস্তা দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য দাবি করেন, পুলিশের দেওয়া তালিকা ধরে কাজ না করলেও দক্ষিণে অনেক আগেই কাজ করা হয়েছে। তুলনায় উত্তরের রাস্তার অনেক কাজ এখনও বাকি বলে জানালেন ওই অফিসার।
পুজোর মুখে দক্ষিণ কলকাতার রাস্তার অবস্থা নিয়ে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় যদিও বলেন, “কলকাতা পুরসভার রাস্তার হাল অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার অনেক ভাল।”

ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.