দাওয়াই নজরদারির
শৃঙ্খলায় ঘুণ ধরেছে, মানছে লালবাজারই
সবা কানেক্টরে ট্যাক্সিতে মহিলার কাছ থেকে টাকা লুঠের ঘটনায় অভিযোগ না-নিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেটা ছিল কর্তব্যে গাফিলতি। আর অরবিন্দ সেতুতে ট্যাক্সি দিয়ে এক ব্যবসায়ীর গাড়ির পথ আটকে ৪৩ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সরাসরি লুটেরার ভূমিকায় অবতীর্ণ দুই রক্ষক পুলিশই!
লুঠের ঘটনায় মানিকতলা থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর এবং এক কনস্টেবল গ্রেফতার হওয়ার পরে কলকাতা পুলিশের শীর্ষকর্তারাও রাখঢাক না-করে স্বীকার করে নিচ্ছেন, বাহিনীতে শৃঙ্খলার ঘাটতি রয়েছে।
কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার শিবাজী ঘোষ বলেন, “বাহিনীতে শৃঙ্খলা আনতে হবে। এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে গেলে বাহিনীতে শৃঙ্খলা আনাটাই প্রধান কাজ।” কী ভাবে ফিরবে শৃঙ্খলা? শিবাজীবাবুর নিদান, “অফিসারদের উপরে নিয়মিত নজরদারি করতে হবে। এই ব্যাপারে শীঘ্রই কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি।” কিন্তু প্রায় ২৬ হাজার কর্মীর পুলিশবাহিনীতে প্রায় সাত হাজার অফিসারের উপরে কী ভাবে নজর রাখা হবে, কে-ই বা রাখবে প্রশ্ন সেটাই।
ব্যবস্থা যা নেওয়ার, সে তো পরের ব্যাপার। তার আগে ওই ঘটনায় জনমানসে কলকাতা পুলিশের ভাবমূর্তি যে অনেকটাই টাল খেয়ে গেল, বাহিনীর অধিকাংশ অফিসারই সেটা স্বীকার করে নিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, বছরের পর বছর ছোটখাটো বিশৃঙ্খলা, ঊর্ধ্বতন অফিসারদের অমান্য করার মতো ঘটনাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তারই পরিণতিতে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেরই থানা এলাকায় টাকা লুঠে নেমে পড়েছেন এক জন অফিসার। এক সময় কলকাতা পুলিশকে সুশৃঙ্খল রাখতে পুলিশ কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনার (সদর)-এর প্যারেড হত। এখন কমিশনারের প্যারেড হয় বছরে এক বার। ডিসি (সদর)-র প্যারেডও বছরে এক বারের বেশি হচ্ছে না।
বছর চারেক আগে এক শীতের রাতে দক্ষিণ কলকাতার একটি থানায় ঢুকে এক ডেপুটি কমিশনার দেখতে পান, এক জন সার্জেন্ট বসে মদ খাচ্ছেন। সাধারণ পোশাকে থাকা ওই ডিসি-কে চিনতে না-পেরে মদ্যপ অবস্থায় সার্জেন্ট তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন। ডিসি-র রিপোর্টের পরেও সেই সার্জেন্টের বিরুদ্ধে তেমন কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রথমে থানা থেকে পুলিশ লাইনে সরানো এবং পরে সেই সার্জেন্টকে অন্য থানায় বদলি করা হয়। এখন তিনি একটি থানার ওসি। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনার সেই সময় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বুক পেতে দাঁড়িয়েছিলেন বিভাগীয় ডিসি।
অরবিন্দ সেতুতে লুঠের ঘটনায় ধৃত এসআই সুনীল দাসের মানিকতলা থেকে বদলির আদেশ হয়েছিল গত জানুয়ারিতে। তার পরেও তিনি কী ভাবে ওই থানায় থেকে গেলেন, পুলিশকর্তাদের কাছে তার সদুত্তর নেই।সুনীল ছিলেন মানিকতলা থানার ‘অ্যান্টি রাউডি অফিসার’ (এআরও) বা ‘ক্রাইম অফিসার’। নিজের এলাকায় অপরাধমূলক কাজকর্ম হতে না-দেওয়া এবং অপরাধ হলে তার কিনারা করাই এআরও-র কাজ। তা করতে গিয়ে সাধারণ পোশাকে এলাকায় ঘুরে অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে হয় তাঁকে। কিন্তু সুনীল সেটা করতে করতে কনস্টেবল সৌমেন মাঝিকে নিয়ে কখন নিজেই অপরাধীদের দলে ভিড়ে গিয়েছিলেন, জানা ছিল না লালবাজারের কর্তাদের।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.