নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
রাজ্যের স্বার্থে মাথা ঠান্ডা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিলেন কংগ্রেস বিধায়ক তথা সদ্য প্রাক্তন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া দশদরগায় দলের জনসভায় তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করে মানসবাবু বলেন, “দিদিভাই, মাথাটা একটু ঠান্ডা রাখুন। দিল্লির যন্ত্রমন্তরে গিয়ে ধর্না না দিয়ে রাজ্যের কথা ভেবে বরং প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসুন। রাজ্যের উন্নয়নের নির্দিষ্ট প্রকল্প দিন, কেন্দ্র সরকার টাকা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।” কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট বিচ্ছেদের পরে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণের প্রসঙ্গ তুলে মানসবাবু বলেন, “কংগ্রেসকে গালি দিচ্ছেন, তাঁর বিচার মানুষ করবে। রাজ্যের স্বার্থে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। সিপিএমের অপশাসনের প্রতিবাদেই মানুষ কংগ্রেস-তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিল তা মনে রাখতে হবে। তবে তৃণমূল নেত্রীর সিদ্ধান্তে তাঁর দলের নেতা অসন্তুষ্ট। সৌগত রায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যে তা স্পষ্ট।” ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস, তার পরে ২০০৬ সালে বিজেপি এবং ফের ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে ফিরে আসার ঘটনা তুলে তৃণমূল নেত্রীকে ঘড়ির পেন্ডুলামের সঙ্গে তুলনা করেন মানসবাবু। |
তিনি বলেন, “দিদিভাই যখন যেখানে সুবিধা পেয়েছেন সেখানেই গিয়েছেন। বারবার পেন্ডুলামের মত নিজের অবস্থান বদলেছেন। তবে জেনে রাখুন কংগ্রেস ছাড়া তৃণমূলের অস্তিত্ব নেই।” রায়গঞ্জের বদলে কল্যানীতে এইমস ধাঁচের হাসপাতাল নিয়ে সম্প্রতি রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে একহাত নিয়ে মানসবাবু বলেন, “রাজ্যের প্রথম এইমস রায়গঞ্জেই হবে। তার পর যদি সুব্রতবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে কেন্দ্রের থেকে কল্যানীর জন্য এইমস আনতে পারেন তবে ভালও কথা।” প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার প্রকাশ্য মঞ্চে মানসবাবুর উদ্দেশ্যে বলেন, “গ্যাসের দাম নিয়ে নিম্নবিত্ত মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আমি মানসবাবুকে বলব দলের নেতৃত্বের সঙ্গে এবিষয়ে একটু আলাপ আলোচনা করতে। মানসবাবু অবশ্য তার বক্তবে এই প্রসঙ্গে এনে দেশের অর্থনীতিতে ভর্তুকির কারণ বিশ্লেষণ করে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, “কেন্দ্র তো ভর্তুকিতে ৬টি সিলিন্ডার দিচ্ছে। যে সরকার জনদরদী বলে নিজেদের প্রচার করছে তারা আরও ৪টি গ্যাসে ভর্তুকি দিক না। তবেই তো মানুষ ১০টি সিলিন্ডার ভর্তুকিতে পেতে পারে।” সভায় জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু, বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা, যোশেফ মুন্ডা, সদর ব্লক সভাপতি দুলাল দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন। গায়ের জোরে পঞ্চায়েত ভোট জেতার জন্য তৃণমূল সন্ত্রাসের আশ্রয় নিতে পারে বলেও মানসবাবু আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেছেন, “রাজ্যের মানুষের স্বার্থে তৃণমূল নেত্রী যে স্বার্থ ত্যাগ করেছে তা মানুষ জানেন।’’ |