নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এ বার এক পুলিশ অফিসার-সহ ৩ জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেস কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠকের অনুগামী এক পার্কিং-আদায়কারী ও তাঁর সহকর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে প্রধাননগর থানার ঠিক সামনে। ওই ঘটনায় জেরে বেশ কিছুক্ষণ হিলকার্ট রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় ব্যবসীয়ারা। পুলিশ অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। সেবক রোডে দুই মাইলে একটি সিনেমা হলের সামনে থেকে চেক পোস্ট পর্যন্ত পার্কিং ফি সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঠিকাদার মিন্টু করের বরাত খারিজ করেছে পুর কর্তৃপক্ষ। ২ টাকার জায়গায় বাইক দাঁড়ালেই ৬ টাকা, গাড়ি দাঁড়ালে ৫ টাকার বদলে ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এ দিন প্রধাননগরের ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম বিজেন্দ্র কাপুর, সুরেন্দ্র কাপুর এবং। তাদের বাড়ি প্রধাননগরের জংশন এলাকায়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “ওই ঘটনায় পুলিশের উপরে হামলার একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” শহরে পার্কিং নিয়ে একের পর এক অভিযোগকে কেন্দ্র করে অভিযোগ ওঠায় উদ্বিগ্ন পুলিশে প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই। পার্কিংয়ের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্বব্যবহারের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এখন পুলিশকে মারধরের অভিযোগ ওঠায় শহরবাসীদের মধ্যেই ক্ষোভ বাড়ছে। কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা পুরসভার বস্তি উন্নয়ন বিভাগের মেয়র পারিষদ সঞ্জয়বাবু বিষয়টি নিয়ে প্রধাননগর থানার আইসি রাজীব ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানান, সোমবার ওই কয়েকজন ব্যবসায়ী পার্কিং নিয়ে প্রধাননগর থানায় অভিযোগ করেন। তার পরেই এদিন গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটে। মেয়র পারিষদ সঞ্জয়বাবু বলেন, “ধৃত তিন জন কংগ্রেস কর্মী। পুলিশ ওই ঘটনা তদন্ত করে দেখুক। যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তাঁর শাস্তি প্রয়োজন। কিন্তু ব্যবসায়ীদের একটি অংশ অভিযোগ করে তা তুলে নিয়েছেন বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। সেটা কেন হল তা দেখা দরকার। এর পিছনে অন্য কোনও বিষয় রয়েছে কি না তা দেখা দরকার।” স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, পার্কিংয়ের দায়িত্বে থাকা আদায়কারী অতিরিক্ত হারে টাকা তোলে। বাইকের ক্ষেত্রে ২ টাকার জায়গায় ৫ টাকা বা তার বেশি দাবি করা হয়। চার চাকার ক্ষেত্রে দ্বিগুণ হারে টাকা দাবি করে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করা হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এদিন দুপুরে এক গ্রাহক পার্কিংয়ের জায়গায় বাইক রাখতে চান। সেই সময় আদায়কারী বিজেন্দ্রবাবু তাঁর কাছে টাকা দাবি করেন। তিনি ফিরে এসে টাকা দেবেন বলে জানালেও আদায়কারী তা মানতে চাননি। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। এক ব্যবসায়ীকে সেখানে গিয়ে পার্কিংয়ের ওই আদায়কারীর বিরুদ্ধে কথা বললে বিজেন্দ্রবাবু কয়েকজন যুবককে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের উপরে হামলা করেন। প্রধাননগর থানার সাব ইন্সপেক্টর প্রাণকৃষ্ণ দাস সেখানে যান। তিনি গণ্ডগোল থামাতে চেষ্টা করলে তাঁর উপরে কয়েকজন চড়াও হন বলে অভিযোগ। পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করে। উত্তরাপন ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে সঞ্জয় সাহা বলেন, “অভিযোগ করেও কাজ হয়নি। অভিযুক্তদের শাস্তি চাই।” |