সিকিমে ঢোকার পারমিট নেই, রাস্তায় আটকে থাকলেন চিডিরা |
বৃহস্পতিবার ৫৮০০ ফুট উচ্চতায় গ্যাংটকে প্রতিদ্বন্দ্বী দুরন্ত ফর্মে থাকা ইউনাইটেড সিকিম। লাল-হলুদ কোচ ট্রেভর মর্গ্যান কোথায় ভেবেছিলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্যাংটকে পৌঁছে বিশ্রামের ফাঁকে তৈরি করবেন ভাইচুং ভুটিয়ার দলকে হারানোর ছক। তার বদলে দলবল নিয়ে দু’ঘণ্টা আটকে থাকলেন সিকিমে ঢোকার মুখে রংপো চেকপোস্টে।
কারণ, লাল-হলুদের তিন নাইজিরিয়ান ফুটবলারের সঙ্গে ছিল না সিকিমে ঢোকার বিশেষ পারমিট। একেই গোয়ায় সমুদ্রের ধারে খেলার চার দিন পর শৈলশহর গ্যাংটকে খেলা এবং তার জন্য বিস্তর ‘ট্র্যাভেল’ করতে হওয়ায় ক্ষোভ ছিলই মর্গ্যান ব্রিগেডের। তার সঙ্গে যোগ হল পারমিট-সমস্যা।
দু’টো ক্ষেত্রেই ফেডারেশনের দায়িত্বজ্ঞনহীনতার দিকে আঙুল তুলছেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব-কর্তারা। আর লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ পুরো ঘটনাটাকে বলছেন, “হাস্যকর।” বিরক্ত তিন নাইজিরিয়ান ফুটবলার-সহ গোটা ইস্টবেঙ্গল দলই।
নিয়ম অনুযায়ী নাইজিরিয়া, পাকিস্তান, মায়ানমার-সহ কিছু দেশের নাগরিকদের সিকিমে ঢুকতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষ পারমিটের দরকার পড়ে। আই লিগে খেলা ক্লাবগুলোয় ওই সব দেশের ফুটবলার থাকলে তাঁদের জন্য এই পারমিটের ব্যবস্থা করার কথা ফেডারেশনের। কিন্তু লাল-হলুদের তিন বিদেশিই নাইজিরিয়ান হওয়া সত্ত্বেও মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সেই পারমিটের ব্যবস্থা হয়ে ওঠেনি। এ দিকে বৃহস্পতিবারের ইউনাইটেড সিকিমের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে মঙ্গলবারই পেন-চিডিরা রওনা হয়ে যান গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে। |
|
|
|
উৎকণ্ঠার যাত্রা। ওপারা-চিডি-পেন। |
|
এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ লাল-হলুদ ফুটবলাররা রংপো পৌঁছলে আটকে দেওয়া হয় এডে চিডি, পেন ওরজি এবং উগা ওপারাকে। কোচ-ফুটবলাররা ছিলেন ছ’টা গাড়িতে। তাঁদের বলা হয়, পারমিট ছাড়া সিকিমের মাটিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তখন কোচ ট্রেভর মর্গ্যান-সহ পুরো ইস্টবেঙ্গল টিমই বাধ্য হয়ে রাস্তাতেই অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। কলকাতায় ক্লাব কর্তাদের মাধ্যমে সেই খবর ফেডারেশনকে জানানো হয়। দিল্লিতে ফেডারেশন কর্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। তার পর চিডি-ওপারা-পেনদের ছাড়া পেতে পেতে দু’ঘণ্টা কেটে যায়। সন্ধে সাতটারও কিছু পরে ইস্টবেঙ্গল টিম গ্যাংটকের উদ্দেশে রংপো থেকে ফের রওনা দেয়।
আই লিগের প্রথম রাউন্ডে সালগাওকর সিকিমে খেলতে গেলেও করিম বেঞ্চারিফার দলকে এই সমস্যায় পড়তে হয়নি। কারণ, তাঁর দলে কোনও নাইজিরিয়ান নেই। তাই প্রথম কোপ পড়ল লাল-হলুদের উপরই। ক্লাবের অন্যতম প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকারের কথায়, “ফেডারেশনের ব্যর্থতাতেই ওই পারমিট এসে পৌঁছয়নি। ফুটবলারদেরও দু’ঘণ্টা আটকে থাকতে হল।” কোচ মর্গ্যানও লুকিয়ে রাখেননি তাঁর বিরক্তি। গাড়িতে যেতে যেতে ফোনে বলছিলেন, “গোয়ায় খেলার চার দিন পরেই পাহাড়ে খেলতে হয়তো অতটা অসুবিধা হবে না। কিন্তু এখন যেটা অসহ্য মনে হচ্ছে সেটা হল, এই পাহাড়ি রাস্তায় দীর্ঘ সময়ের জার্নি। এতক্ষণে তো হোটেলে পৌঁছে বিশ্রাম নেওয়ার কথা আমাদের!” দলে নাইজিরিয়ান না থাকায় সালগাওকরকে সমস্যায় ভুগতে হয়নি শুনে মর্গ্যান বলছিলেন, “আমাদেরও তো সমস্যায় পড়ার কথা ছিল না।” ফেডারেশনের ভূমিকা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ব্রিটিশ কোচ।
এ ব্যাপারে ফেডারেশনের আই লিগ সিইও সুনন্দ ধর বললেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে আগেই জানানো ছিল পারমিটের জন্য। কিন্তু সেটা কোনও কারণে আসেনি। ইস্টবেঙ্গলের থেকে খবর পেয়ে ফের মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরাই ওই ফুটবলারদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।” যদিও এই যুক্তিতে খুব খুশি হতে পারছেন না লাল-হলুদের কেউ। তবে আপাতত সব ভুলে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা ইউনাইটেড সিকিমকে হারানোর ছক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন মর্গ্যান। পালজোর স্টেডিয়ামে প্র্যাক্টিসে নামছেন বুধবারই।
|
বুধবারে
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ:
মহামেডান-পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
(যুবভারতী, ২-৩০)। |