বারাক ওবামা হেরে ভূত হয়েছেন। না, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তো দেরি আছে, ৬ নভেম্বর। ওবামা হেরেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রমনির কাছে ‘প্রেসিডেনশিয়াল’ বিতর্কের মঞ্চে। তিন রাউন্ডের মধ্যে প্রথম রাউন্ডে।
কিন্তু কী ভাবে বোঝা গেল তিনি হেরেছেন? কেননা, পুরো সময়টা জুড়ে রমনি উজ্জ্বল ঝকঝকে। তিরের মতো প্রশ্ন। জলের মতো রসিকতা। পিনের ডগার মতো ব্যঙ্গ। আর ওবামা? অন্যমনস্ক ভাব। উদাস মুখ। নিষ্প্রভ ভাষা। থেমে থেমে কথা। ভেবে ভেবে যুক্তি। অর্থনীতি নিয়ে যেই না কঠিন প্রশ্নের চাপ, ইতস্তত স্বরে তাঁর অনিশ্চিত মন্তব্য, বুশ জমানার ভুল নীতি... ইত্যাদি। সঙ্গে সঙ্গে রমনির বিদ্রূপ: ওবামা ভুলে যাচ্ছেন যে এটা ২০০৮ নয়, ২০১২! গত চার বছর তিনিই তো প্রেসিডেন্ট ছিলেন, বুশ নন! পরে অবশ্য জানা গেল, রমনির বাক্যবাগীশতার মধ্যে অসত্য ও অর্ধসত্যের প্রচুর টকঝাল মশলা ছিল, কিন্তু সে তো পরের কথা! বিতর্কের পর স্পষ্ট জনমত ৭৫% রমনির পক্ষে, ২৫% ওবামার। |
তাই তো! বিতর্কটা রাজনীতির, আর রাজনীতি মানেই সপ্রতিভতা ও বাগ্মিতা। রাজনীতি মানেই নিজের যুক্তিটা ক্ষুরধার কোপে অন্যের মাথার মধ্যে প্রোথিত করে দেওয়া। রাজনীতি মানে, ঠিক ভুল সত্যি মিথ্যে যা-ই হোক, আমি যখন কথা কব অন্যকে নিরুত্তর করে দেওয়ার দক্ষতা। রাজনীতি মানে, আমার মনে কোনও সংশয় না রাখা, এবং অন্যের মনে সংশয়ের ফুলকি দেখলেই এক শটে তাকে উড়িয়ে দেওয়া। নিশ্চিত এবং স্পষ্ট। সরব এবং আক্রমণাত্মক। নিজে কাজ না করলেও হবে, কিন্তু অন্যে যা-ই করে থাকুক, সেটা অ-কাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। সেই জন্যই, মনমোহন সিংহ কোনও রাজনীতিকই নন। ঠিক সেই জন্যই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেরা রাজনীতিক। দ্বিতীয় রাউন্ড বিতর্কের আগে ওবামা এক বার চট করে ঘুরে যান না কেন, রাজনীতির রাজধানী কলকাতায়! |