|
|
|
|
মায়ার ধোঁয়াশাতেই আশা খুঁজছে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ইউপিএ সরকারকে সমর্থনের প্রশ্নে ধোঁয়াশাই রেখে দিলেন মায়াবতী। তবে দলিত নেত্রী এখনই সরকার ফেলার পথে যাবেন না বলেই মনে করছে কংগ্রেস।
খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি লগ্নির প্রশ্নে বিরোধী শিবির এখন এককাট্টা। সংস্কারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সরকার থেকে আগেই সমর্থন তুলে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী এফডিআই নীতি নিয়ে আপত্তি রয়েছে সরকারের শরিক ডিএমকে-ও। এই পরিস্থিতিতে লোকসভায় ২১ সাংসদের দল বিএসপি এফডিআই প্রশ্নে সরকারকে সমর্থন করবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত আগামিকালের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকেই নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মায়াবতী। তাঁর কথায়, “এই সিদ্ধান্তে আম-আদমি ও কৃষকদের ভাল হলে তবেই আমি সমর্থন জানাব, নচেৎ নয়।” পেনশন-বিমা বিলে বিদেশি বিনিয়োগ ও ডিজেল-রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি হ্রাসের প্রশ্নে অবশ্য এ দিন মনমোহন সিংহ সরকারকে তুলোধোনা করেন উত্তরপ্রদেশেরপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ায় রাজ্যসভার মতো লোকসভাতেও এখন কার্যত সংখ্যালঘু ইউপিএ। যে কোনও বিল পাশ করাতে সরকারের এখন ভরসা সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। এই পরিস্থিতিতে মায়াবতীর সমর্থন পাওয়াটা জরুরি কংগ্রেসের কাছে। মায়াবতী ইউপিএ থেকে সমর্থন তুলে নিলে সরকার বাঁচানোটাই সমস্যা হয়ে যেতে পারে কংগ্রেসের।
এ দিকে আজ বিএসপি-র জনসভা শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, মায়াবতীর বিরুদ্ধে সঙ্গতিহীন আয়ের মামলা সিবিআই তদন্ত করতে পারবে না, এমন কোনও রায় তারা দেয়নি। এর অর্থ হল, ‘প্রয়োজনে’ ফের মায়াবতীর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করতে পারে সিবিআই। সমর্থনের প্রশ্নে মায়াবতী ধোঁয়াশা সৃষ্টির কিছু ক্ষণের মধ্যেই শীর্ষ আদালতের এই রায় সামনে আসায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বিজেপি মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সিবিআই-জুজু দেখিয়ে সমর্থন জোগাড় করার অভিযোগ নতুন নয়। আমরা বহু দিন ধরেই এই অভিযোগ জানিয়ে আসছি। তারাও বরাবর এই কাজ করে চলেছে।”
তবে আজ সরকারের সমালোচনা করলেও মায়াবতী এখনই সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে না। ফলে আশাবাদী কংগ্রেস শিবির।
আজ জনসভায় মায়াবতী আগাম লোকসভা নির্বাচনের জন্য কর্মীদের তৈরি থাকতে বললেও, কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন এখনই সরকার ফেলার মতো পরিস্থিতি চাইবেন না দলিত নেত্রী। যে ভাবে মাস কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে দলের ভরাডুবি হয়েছে, তাতে ঘর গুছোতে আরও সময় দরকার বিএসপির। দ্রুত নির্বাচন হলে সে ক্ষেত্রে তার ফায়দা পেয়ে যাবে সপা। তাই কংগ্রেস মনে করছে, সরকার ফেলার ঝুঁকি নেবেন না মায়াবতী। তার বদলে ডিজেল বা রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি হ্রাসের মতো অপ্রিয় সিদ্ধান্ত থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রচনা করে মায়াবতী তাঁর ভোটারদের কাছে বার্তা দিতে চাইবেন যে এ সবের দায়ভার তাঁর নয়। আজ এফডিআই-এর বিরোধিতায় ফের এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে বাম ও বিজেপি নেতৃত্বকে। যন্তরমন্তরের পর ফের আজ দিল্লির একটি সভায় বিজেপি সাংসদ মুরলীমনোহর জোশী ও সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া বক্তৃতা দেন।
ব্যবসায়ী সংগঠনের এই অনুষ্ঠানে এক যোগে সরকারের নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন দুই সাংসদ। হলদিয়ায় আজ একটি জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ফের খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি বিনিয়োগের বিরোধিতা করে বলেন, “সংস্কারের নামে লুঠ চলছে। কেন্দ্র দেশকে বিক্রি করে দিতে চাইছে। আর আমরা টাকা চেয়ে পাচ্ছি না।” |
|
|
|
|
|