পরিকল্পনা করে নিখুঁত চুরি, টের পেল না পুলিশ
বাড়ির সামনের রাস্তায় নাকি সারা রাত ধরেই সাইকেল, মোটরবাইক এবং জিপে চলে পুলিশি টহল। অন্তত তেমনটাই দাবি। অথচ, কার্যত সেই বাড়িরই দোরগোড়ায় বসে লুঠের পরিকল্পনা করেছে চার-পাঁচ জন দুষ্কৃতী। আর সেই পরিকল্পনা মাফিক বাড়ির পিছন দিক দিয়ে ছাদে উঠেছে তারা, ছাদের খোলা দরজা দিয়ে নেমেছে বাড়ির নীচের যন্ত্রাংশ তৈরির দোকানে। গ্রিল খোলার যন্ত্রপাতি জোগাড় করে ফের ছাদে উঠে পৌঁছেছে পাশের ক্লাবের ছাদে। সেখান থেকে পাশের বাড়ির জানলার গ্রিল খুলে ঢুকে আলমারি থেকে টাকা-গয়না-মোবাইল মিলিয়ে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার জিনিস নিয়ে পালিয়েছে চোরেরা। অথচ, এতক্ষণ ধরে এত নিখুঁত ভাবে সব কিছু ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও টেরও পায়নি পুলিশ।
সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সিঁথির কালীচরণ ঘোষ রোডে। পুলিশেরই এক প্রাক্তন অফিসারের মতে, পুরো ‘অপারেশন’ চালাতে সময় লাগার কথা এক ঘণ্টারও বেশি। স্বভাবতই ফের প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি টহলদারি নিয়ে। পুলিশের অবশ্য এখনও দাবি, ওই রাতে নিয়ম মাফিক টহল দিয়েছে সিঁথি থানার পুলিশ। নজরদারিতে গাফিলতির অভিযোগও মানতে চায়নি তারা। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি যুগ্ম কমিশনার (এস্টাব্লিশমেন্ট) শিবশঙ্কর দত্তও।
গ্রিল খুলে এ পথেই ঢুকেছিল চোরেরা। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র
যাঁদের বাড়িতে ওই চুরির ঘটনা ঘটে, সেই সুব্রত সরকারের পরিবারেও কেউ কিছু টের পাননি বলে পুলিশকে জানান তাঁরা। টের পাননি পাশের ক্লাবের কেয়ারটেকারও। পুজোয় পরবেন বলে সুব্রতবাবুর স্ত্রী অঞ্জনাদেবী বাড়িতে এনে রেখেছিলেন কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না। সেই সঙ্গে নতুন গাড়ি কেনার জন্য আনা হয়েছিল দেড় লক্ষ টাকা। পুলিশের অনুমান, সবিস্তার খবর নিয়েই এসেছিল চোরেরা।
সুব্রতবাবুর তিনতলা বাড়ির একতলায় তাঁর নিজেরই একটি জামাকাপড়ের দোকান রয়েছে। দোতলায় দু’টি অফিস ভাড়া দেওয়া। তিনতলায় সপরিবার থাকেন সুব্রতবাবু। পুলিশ জানায়, রাতে পরিবারের সবাই একটি ঘরেই ছিলেন। সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ অঞ্জনাদেবী ঘুম থেকে উঠে দেখেন, অন্য ঘরের আলমারি খোলা। লণ্ডভণ্ড ঘরের আলমারি থেকে উধাও সোনার গয়না ও নগদ টাকা। পুলিশকে ওই দম্পতি জানিয়েছেন, জানলার গ্রিল খোলা বা আলমারি খোলার শব্দ পাননি তাঁরা। পুলিশের অনুমান, ঘুমপাড়ানি রাসায়নিক ব্যবহার করেছিল দুষ্কৃতীরা। অঞ্জনা জানান, রোজই তিনি ভোর পাঁচটায় উঠে পড়েন। কিন্তু এ দিন তাঁর ঘুম ভাঙতে অনেক দেরি হয়েছে।
পুলিশ জানায়, তাঁদের অভিযোগে সুব্রতবাবুরা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা নগদ দু’লক্ষ টাকা, কয়েক লক্ষ টাকার গয়না ও কয়েকটি মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) গৌরব শর্মা বলেন, “চুরির ঘটনায় বেশ কিছু তথ্য পুলিশ পেয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কালীচরণ ঘোষ রোডের দু’টি গ্যারাজের চার জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে।” প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, পরিচিত কেউই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের দাবি, লাগোয়া ক্লাবের ছাদ থেকে গ্রিল খোলার বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের পিছনে একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি খালি গয়নার বাক্স ও স্কুলের সার্টিফিকেটও পেয়েছেন পুলিশকর্মীরা। যা দেখে তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, দুষ্কৃতীরা ওই বাড়িটির সামনে বসেই চুরির মাল ভাগ-বাঁটোয়ারা করে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.