কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল এখনই কাজে লাগছে না। তবে তার বিদ্যুৎ এ বার কাজে লাগবে। স্থির হয়েছে, আচমকা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে বিমানবন্দরের পুরনো টার্মিনাল যাতে থমকে না-পড়ে, সে জন্য নতুন টার্মিনালে বসানো বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে ব্যবহার করা হবে। সরকারি সূত্রের খবর, এই ‘বিকল্প সন্ধানের’ পিছনে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের ভূমিকা রয়েছে।
বিমানবন্দরে গত মাসে তিন বার, এবং এই মাসে এ পর্যন্ত এক বার বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। নিউ কাশীপুরে সিইএসসি-র উৎপাদনকেন্দ্র থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে দু’টো লাইন গিয়েছে। একটা নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। অন্যটি ‘ব্যাক-আপ,’ অর্থাৎ প্রথম লাইন বসে গেলে তা সচল হয়। কিন্তু সম্প্রতি নিউ কাশীপুর কেন্দ্রে বড় গোলযোগের দরুণ দু’টো লাইনই অকেজো হয়ে পড়েছিল বলে সিইএসসি-সূত্রের খবর।
ফলে ঘোর বিপত্তির মুখে পড়ে বিমানবন্দর। নিজস্ব জেনারেটর চালিয়েও অবস্থা সামাল দেওয়া যায়নি। কারণ, সাধারণ সময়ে যেখানে টার্মিনাল স্বাভাবিক রাখতে ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে, সেখানে জেনারেটর চালিয়ে মিলেছে সাকুল্যে ২ মেগাওয়াট। আর রানওয়ে, এক্স-রে মেশিন ও কনভেয়ার বেল্ট এই তিনটে জরুরি পরিষেবা চালু রাখতেই তা খরচ হয়ে গিয়েছে। তাই টার্মিনালের ভিতরে বাতানুকূল যন্ত্র চালানো যায়নি। লিফ্ট-এসক্যালেটর চলেনি। পাম্প বন্ধ থাকায় জলও পাওয়া যায়নি।
সব মিলিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে প্রতি বার ভোগান্তির একশেষ হয়েছে যাত্রীদের। মুখ্যমন্ত্রীর কানেও খবরটা পৌঁছে গিয়েছিল। সমস্যার সুরাহার তিনি উদ্যোগী হন। তাঁরই নির্দেশে সোমবার এ নিয়ে মহাকরণে বৈঠক ডাকেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। বৈঠকে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ, সিইএসসি ও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার প্রতিনিধিরা ছিলেন। সেখানে ঠিক হয়েছে, নতুন টার্মিনালের বিদ্যুৎ সংযোগ এখন পুরনো টার্মিনালের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে। সিইএসসি-র এক অফিসার বলেন, “নতুন টার্মিনালে আর একটা বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। পুরনো টার্মিনালে বিভ্রাট হলে সেটা ব্যবহার করা যেতেই পারে।” কী ভাবে? ওই কর্তার ব্যাখ্যা, দুই টার্মিনালের দু’টি বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন জুড়ে দেওয়া গেলে এখনকার টার্মিনালে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মোকাবিলা করা যাবে। তেমনই দু’টি সাব-স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত থাকলে নতুন টার্মিনালেরও সুবিধা। চালু হওয়ার পরে সেখানেও বিপর্যয় প্রতিরোধ করা যাবে। উল্লেখ্য, নতুন টার্মিনালের জন্য সিইএসসি’র বজবজ উৎপাদনকেন্দ্র থেকে ৬ মেগাওয়াটের লাইন রয়েছে। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ চাইলে বণ্টন সংস্থাও বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ জোগাতে রাজি আছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার এক কর্তা। জানুয়ারির শেষে নতুন টার্মিনাল খুলে দেওয়ার কথা। না-খোলা পর্যন্ত অন্তত তার বিদ্যুৎ ব্যবস্থার একটা সুফল কলকাতার বিমানযাত্রীরা পেতেই পারেন। |