বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে থাকা
মহারাক্ষস ধরলেন বাঙালি মন্দা
দূরে, বহু দূরে। এত দূরে যে সেখান থেকে আলো এসে পৌঁছতেই লেগে যায় ১১০০ কোটি বছর। মহাবিশ্বের এমন এক প্রান্তে বসে রাক্ষসেরা গিলে খাচ্ছে শ’য়ে শ’য়ে সূর্য। তেমনই এক মহারাক্ষসের খোঁজ পেয়েছেন কেমব্রিজের বিজ্ঞানীরা। এবং যে আবিষ্কারে নেতৃত্ব দিয়ে বিজ্ঞানীকুলে সাড়া ফেলে দিয়েছেন আর এক বাঙালিনী। মন্দা
মন্দা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বন্দ্যোপাধ্যায়। ক’দিন আগে মঙ্গলে নিখুঁত ভাবে বড়সড় রোভার নামিয়ে বিস্তর প্রশংসা কুড়িয়েছেন নাসার বিজ্ঞানী অনিতা সেনগুপ্ত। এ বার পালা মন্দার। তাঁদের আবিষ্কৃত মহারাক্ষসটি আসলে এক পেল্লায় কৃষ্ণগহ্বর। নাম কিছুটা খটোমটো, ULASJ1234+0907। রয়্যাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল সোসাইটির জার্নালে মন্দাদের আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্রটির মূল লেখিকাও তিনি।
লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে পিএইচডি করেছেন ২০০৯-এ। তার পর থেকে কেমব্রিজের ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রনমিতে পোস্ট-ডক্টরাল রিসার্চ অ্যাসোসিসেয়েট হিসেবে ঘেঁটে চলেছেন মহাকাশের নাড়িনক্ষত্র। হলিউডি কল্পবিজ্ঞান মেন ইন ব্ল্যাক টু ছবিতে মার্বেলের মধ্যে সেঁধিয়ে ছিল গোটা একটা নক্ষত্রপুঞ্জ। সকলে হন্যে তাকে খুঁজতে। মন্দার কাজকর্মও এই সব নিয়েই। তবে কি না বাস্তবের মহাকাশে দাঁড়িয়ে। মিলিমিটারের চেয়েও ছোট নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে শুরু করে হাই রেডশিফট কোয়াসার তাঁর অনুসন্ধানের ক্ষেত্র।
আর এই সব নিয়ে কাজ করতে করতেই মন্দা ও তাঁর সতীর্থদের নজরে এসেছে ওই মহাকায় কৃষ্ণগহ্বরটি। আকারে যা সূর্যের চেয়ে হাজার গুণ বড়। আমাদেরই আকাশগঙ্গায় এত বড় একটা কৃষ্ণগহ্বর, এত দিন নজরে আসেনি কেন? মন্দারা জানাচ্ছেন, চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে ছিল। চারপাশে ধুলোর আবরণেই ঢাকা পড়ে ছিল এটি।
মহাকায় কৃষ্ণগহ্বর। (ছবিতে লাল বিন্দু)।
তবে এখন দেখা গেল কী ভাবে? প্রথম উত্তর অবশ্যই, প্রযুক্তির উন্নতি। ইনফ্রা রেড তরঙ্গের মাধ্যমে দেখার ক্ষমতা এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে যে কাজটা করেছে ইউকে ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ (ইউকেআইআরটি)। দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটি দিলেন মন্দা নিজেই, “এই সব বড় কৃষ্ণগহ্বর যখন তার আশপাশের গ্রহ-তারাগুলিকে গিলে খেতে থাকে তখন সেই বস্তুগুলিও গরম হয়ে ওঠে। ফলে সেগুলি থেকে বিকিরণ ছড়াতে থাকে হয়। সেই বিকিরণ দেখেই আমরা খুঁজে পেয়েছি ‘ULASJ1234+0907’-কে।
মহাবিশ্বের যে এলাকায় আমরা আছি, সেই অংশেই এমন ৪০০টির মতো মহাকায় কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে বলে মনে করছেন কেমব্রিজের এই বিজ্ঞানী দলটি। তাঁদের মতে, গ্রহতারা গিলে মহাকাশের গোকুলে কী ভাবে বাড়ছে এই সব মহারাক্ষস, তা বোঝার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে মন্দার নেতৃত্বে এই আবিষ্কার।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.