কোষের বয়স কমিয়েই হাতের মুঠোয় নোবেল গর্ডন-ইমানাকার
খুব শিগগিরি বদলে ফেলতে হবে স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ের লেখাগুলো। এমনটাই বলছে স্টকহলমের নোবেল কমিটি।
কেন? কারণ এ বার মেডিসিনের নোবেল পুরস্কার যাঁরা ছিনিয়ে নিলেন, তাঁদের গবেষণাই যে বদলে দিয়েছে জীববিজ্ঞানের পুরনো সব ধ্যানধারণা। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন গর্ডন এবং জাপানের শিনয়া ইমানাকা। মেডিসিনে এ বছরের নোবেলজয়ী। আজই তাঁদের নাম ঘোষণা করলেন স্টকহলমের নোবেল কমিটি।
এমন কী তথ্য, যার জন্য নতুন করে বই লিখতে হবে?
এত দিন মনে করা হত, প্রত্যেক পরিণত কোষেরই একটা নির্দিষ্ট কাজ আছে। এবং সে শুধু তার জন্য বরাদ্দ কাজটুকুই করে। এই ধারণাটাই বদলে দিয়েছেন গর্ডনরা। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞান বলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই
শিনয়া ইমানাকা
জন গর্ডন
প্রাপ্তবয়স্ক কোষেদের বিভাজন হয়ে আর নতুন নতুন কোষ তৈরি হয় না। পরীক্ষাগারে কোষের সে চরিত্রও পাল্টে দিয়েছেন তাঁরা। ‘বয়স’ হয়ে যাওয়া পরিণত কোষকে ‘রিপ্রোগ্রাম’ করে ফেলেছেন তাঁরা। ‘বয়স’ কমিয়ে অপরিণত কোষে বদলে ফেলেছেন সেগুলোকে। এবং নতুন সেই অপরিণত কোষগুলো থেকে বিভাজনের মাধ্যমে তৈরি করে ফেলেছেন নতুন ধরনের কলাকোষ।
একবিংশ শতাব্দীর আবিষ্কার নয়। এমনটা যে সম্ভব, বহু দিন আগেই তা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন গর্ডন। ১৯৬২ সালেই তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন, বিশেষ কাজের দায়িত্বে থাকা পরিণত কোষের চরিত্রবদল সম্ভব। এবং পরে তাকে ফের পুরনো ভূমিকাতেও ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। অনেকটা উভমুখী বিক্রিয়ার মতো।
গর্ডন একটি ব্যাঙের ডিম্বাণুর অপরিণত নিউক্লিয়াসটিকে সরিয়ে, সে জায়গায় পরিণত অন্ত্র কোষের (ইনটেসটিনাল) নিউক্লিয়াসটিকে প্রতিস্থাপণ করেন। দেখা যায়, পরিবর্তিত ওই ডিম্বাণু থেকেও নির্দিষ্ট সময়ে ব্যাঙাচির জন্ম হয়েছে। আবার পরিণত অন্ত্র কোষের ডিএনএ-চরিত্রও বলছে, ওই কোষ থেকে ব্যাঙের দেহের যে কোনও কোষ তৈরি হওয়া সম্ভব।
গর্ডনের প্রায় চল্লিশ বছর পরে ২০০৬ সালে ফের সেই বয়স কমানোর ‘খেলায়’ মাতেন ইমানাকা। ইঁদুরের প্রাপ্তবয়স্ক কোষের ডিএনএ-তে কয়েকটা জিন ঢোকানোর কিছু দিন পরে তিনি দেখেন কোষের বয়স একেবারে কমে গিয়েছে। পরিণত কোষগুলো বদলে গিয়েছে ‘প্লুরিপোটেন্ট’ স্টেম কোষে (এমন সব অপরিণত কোষ, যার বিভাজনে ওই নির্দিষ্ট প্রাণীটির যে কোনও ধরনের কোষ তৈরি হতে পারে)।
কিন্তু এ সব নিয়ে এত মাতামাতি কেন?
আপাতদৃষ্টিতে নেহাতই বিজ্ঞানের ভয়াবহ কচকচি মনে হলেও, এই তথ্যটাই এক দিন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে। এই পদ্ধতিতেই যদি মানুষের দেহকোষের স্বভাবও বদলে ফেলা যায়, তা হলে হয় তো একদিন জটিল রোগেরও মুশকিল আসান হয়ে যাবে। জেনেটিক পরিবর্তনই হোক বা নিউক্লিয়াসে বদল, রোগাক্রান্ত কোষগুলোর স্বভাব বদলে দিলেই রোগও উধাও।
স্বপ্ন দেখছেন বিজ্ঞানীরা।

অর্থনীতির কোপে নোবেল
বিশ্বঅর্থনীতির বাজারে ব্যাপক মন্দার জেরে নোবেলজয়ীদের পুরস্কারমূল্যেও কোপ পড়তে চলেছে। অ্যালফ্রেড নোবেলের উইলে রেখে যাওয়া অর্থ বিনিয়োগ করে যে পরিমাণ আয় হয়, তা থেকেই পুরস্কার মূল্য। কিন্তু অর্থসঙ্কটের জেরে কমছে আয়। তাই বিশ্ব জুড়ে এই সঙ্কটের কথা মাথায় রেখেই এ বছর জুন মাসে নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল, ২০ শতাংশ কম পুরস্কার মূল্য দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে নোবেলজয়ীরা হাতে পাবেন ১১ লক্ষ ডলার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.