নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
নিয়ম ভেঙে মাত্রাতিরিক্ত পার্কিং ফি আদায় করলেও অভিযুক্ত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কেন পুলিশে অভিযোগ না-জানিয়ে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল। শিলিগুড়ির সেবক রোডে দুই মাইলে পার্কিং ফি সংগ্রহের বরাত পাওয়া ঠিকাদার মিন্টু করের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে বেশি টাকা পার্কিং ফি সংগ্রহের অভিযোগ ওঠে। আগেও তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া মেয়র বা কাউন্সিলরকে তারা টাকা দেন বলে প্রাকাশ্যে জানানোয় তা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। তার পরেও পুলিশে অভিযোগ না-জানিয়ে সোমবার ওই ঠিকাদারকে পুরসভায় ডেকে পাঠিয়ে কেবল মাত্র সতর্ক করায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুর কর্তৃপক্ষের একাংশ বিষয়টিকে আড়াল করতে চাইছেন কি না তা নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কৃষ্ণবাবু বলেন, “ফি সংগ্রহের স্লিপ ওই ঠিকাদার ছাপিয়েছেন তা দেখেছি। নিয়ম মেনে তা ছাপানো হয়নি। প্রতি ঘন্টায় পার্কিং ফি বাবদ কত টাকা নেওয়ার নিয়ম তা স্লিপে লিখতে হবে। কিছুক্ষণের জন্য বাইক বা চার চাকার গাড়ি রাখলেই তার লোকেরা জবরদস্তি ৬ টাকা, ১০ টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জনাতে বলেছি মেয়রকে।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “মেয়র বা কাউন্সিলদের নাম করে টাকা নেওয়ার কথা কেন তারা বলছে বুঝতে পারছি না। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পার্কিং ফি সংগ্রহে অনিয়মের জন্য ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” জোট শরিক তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা না-নিলে জনমানসে পুরসভারই ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তা ছাড়া ঠিকাদারের লোকজন মেয়র, কাউন্সিলরদের নাম করে টাকা নেওয়ার বদনাম করায় বিষয়টি লঘু করে দেখা ঠিক নয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইক রাখলে ঘন্টায় ২ টাকা পার্কিং ফি নেওয়ার কথা। অথচ কিছুক্ষণের জন্য বাইক রাখলেই তাঁর লোকজন জবরদস্তি ৬ টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চার চাকার গাড়ি দাঁড়ালেই ৫ টাকার পরিবর্তে তিনি ১০ টাকা নিচ্ছেন। ১ ঘন্টা হিসাবে ২ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্লিপে লেখা থাকার কথা। অথচ মিন্টুবাবুদের স্লিপে তা লেখা নেই। সেবক রোডের দুই মাইলে একটি সিনেমা হলের সামনে থেকে চেকপোস্ট মোড় পর্যন্ত পার্কিং ফি সংগ্রহের বরাত পেয়েছেন মিন্টুবাবু। গত অগস্ট মাস থেকে তিনি ফি সংগ্রহ করছেন। ফি সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর পুরসভার তরফে তাকে চিঠি পাঠিয়ে লিখিত ভাবে সতর্ক করা হয়। তার আগেও আগেও একই ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। মিন্টুবাবু বলেন, “অভিযোগ পেয়েই ফি সংগ্রহের কাজে যে কর্মীরা রয়েছেন তাদের এক জনকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিন পুর কর্তৃপক্ষ ডেকেছিলেন। কর্মীদের কেউ মেয়র বা কাউন্সিলরের নাম করে টাকা নেওয়ার কথা জানায়নি বলে দাবি করেছেন। পার্কিং ফি সংগ্রহের কাজে আমার ৯ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের সকলকেই এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।” |