নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সেবক রোডের ধারে একটি নির্মীয়মান ভবনের এক অংশ থেকে অপর অংশে যাতায়াতের জন্য অনুমোদন ছাড়া ‘গ্যাংওয়ে’ তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৫ তলা ওই ভবনের তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম তলায় ভবনের এক অংশে থেকে অপর অংশে যাতায়াতের জন্য ওই গ্যাংওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। সোমবার রাতে শিলিগুড়ির সেবক রোডে ‘ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট’ নামে একটি ভবনে এই কাজ করা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অনুমোদন না-থাকার জন্যই রাতারাতি তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ভবনের প্ল্যান পাসের সময় এ ধরনের গ্যাংওয়ে তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কি না মেয়র, ডেপুটি মেয়র বা বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ কেউই বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু জানাতে পারেননি। তাতে সন্দেহ আরও বেড়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল বলেন, “অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। অবিলম্বে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। শহরের সর্বত্র অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দিতে হবে।” |
ভবনের মালিকপক্ষের অন্যতম অনিল মাসানি দাবি করেন, তাঁদের ওই ভবনে এ ধরনের গ্যাংওয়ে তৈরি করেত পুরসভার অনুমোদন রয়েছে। প্ল্যানেও তা উল্লেখ করা আছে।” তাঁর দাবি, রাতে কাজ করা হলেও চুপিসাড়ে কিছু করা হচ্ছে না। সেবক রোডের ধারেই ভবনের ওই অংশে কাজ হচ্ছে। সকলেই দেখছেন।
বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “শহরে এ ধরনের গ্যাংওয়ে তৈরির অনুমোদন সাধারণত দেওয়া হয় না। ওই ভবনে গ্যাংওয়ে তৈরির অনুমোদন রয়েছে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। বাস্তুকারদের পাঠিয়ে মঙ্গলবারই বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তবে শহরে কিছু প্রভাবশালী প্রমোটার নিজেদের মর্জি মতো অবৈধ নির্মাণ করছেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত জানিয়েছেন, সেবক রোডের এই ভবনের ক্ষেত্রে এ ধরনের গ্যাংওয়ে তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কি না তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, “দমকল থেকে অনেক সময় ভবনের পাশাপাশি দুটি অংশে এক তলা থেকে অপর তলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য এ ধরনের ব্যবস্থা করার কথা জানানো হয় আপতকালীন পরিস্থিতির কথা ভেবে। ওই ভবনের মালিকরা লাগোয়া একটি রাস্তা চওড়া করতে তাঁদের জমির একাংশ ছেড়েছেন। সে কারণে কোনও ছাড় দেওয়া হয়েছিল কি না দেখতে হবে।” ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা জানিয়েছেন, তিনিও এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।
পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাম জমানায় ওই ভবনের প্ল্যান পাশ হয়েছে। সে সময় থেকেই এলাকার কাউন্সিলর রয়েছেন সিপিএম নেতা কমল অগ্রবাল। ওয়ার্ডে কোনও বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে কি না তা দেখার দায়িত্ব যাঁর সেই কাউন্সিলর কমলবাবু অবশ্য বলেছেন, “আমার কাছে এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ নেই। অবৈধ নির্মাণ হলে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ তা ভেঙে দিক।” এর পরেই কমলবাবুর কটাক্ষ, ‘‘এই পুরবোর্ড অবশ্য অবৈধ নির্মাণ ‘ভাঙছি-ভাঙব’ করেই তিন বছর কাটাল। জানি না এর পিছনে কী রহস্য!” |