চব্বিশ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও নদিয়ার হরিণঘাটা কলেজের বিএ (সাধারণ) প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুদীপ্তার খুনিদের গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। রবিবার সুদীপ্তার মা সবিতা পাল সুদীপ্তার দুই সহপাঠী সহ তিন জনের বিরুদ্ধে হরিণঘাটা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার দুপুরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ হরিণঘাটা থানা ঘেরাও করে।
তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর শনিবার হরিণঘাটার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে এক কলাবাগান থেকে সুদীপ্তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি চশমাও উদ্ধার করে। সুদীপ্তার পরিবারের দাবি অভিযুক্ত সুমন সুতারের।
কল্যাণীর এসডিপিও চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, “চশমাটি কার সেটা এখনও জানা যায়নি। সেটা নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের ধরতে চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। সেই সূত্র ধরেই এগোনো হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে কলেজে যাওয়ার নাম করে কল্যাণী থানার সগুনা উত্তরপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সুদীপ্তা। তারপর আর সে ফিরে আসেনি। খোঁজাখুঁজির পর শুক্রবার সুদীপ্তার পরিবারের তরফে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। শনিবার পুলিশ সুদীপ্তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। রবিবার হরিণঘাটা থানায় সুদীপ্তার মা তিন জনের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
কিন্তু চব্বিশ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও দোষীরা গ্রেফতার না হওয়ায় সোমবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ১ ঘন্টা হরিণঘাটা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। সংগঠনের রানাঘাট শহরের সভাপতি রাকেশ পাড়ুই বলেন, “আমরা খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে কলেজের পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। পুলিশকে ৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা না হলে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
এসএফআই এর জেলা সম্পাদক জাহাঙ্গির আলি বিশ্বাস বলেন, “অভিযুক্তরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত। অভিযুক্তদের আড়াল করতেই ওরা (তৃণমূল) বিভিন্ন ধরনের নাটক শুরু করেছে।” তিনি বলেন, “রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকেই অপরাধীদের আড়াল করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি এক্ষেত্রে যেন তেমনটা না ঘটে।” অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত পাল বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। আমরা তাদের আড়াল করতেও চাইছি না। পুলিশের কাছে দাবি করছি ওদের গ্রেফতারের জন্য।” |