চাণক্য শ্লোক
‘কিছুই শেখার নেই, আকাশ-পাতাল তফাত’
ফর অ্যাকাডেমি: জাভি, ইনিয়েস্তা, মেসি-রা বার্সেলোনার অ্যাকাডেমিতেই বড় হয়েছে। পারফেক্ট কোচিং পেয়েছে খুব ছোট বয়স থেকে। কলকাতা ময়দানে বড় ক্লাবগুলোয় সেই পরিকাঠামো কোথায়? বড় হয়ে নবি-মেহতাবদের পক্ষে এত পারফেক্ট খেলতে শেখাটা সম্ভব নয়। তার জন্য ‘এ ফর অ্যাপেল’ শেখার মতোই একেবারে বাচ্চাবেলা থেকে ফুটবলটা অ্যাকাডেমিতে শেখা দরকার।
পাস, পাস আর পাস: রবিবার বিকেলে টিভিতে আই লিগ ম্যাচে ময়দানের এক বড় দলকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ২০টা মিস পাস করতে দেখলাম। রাতে ‘এল ক্লাসিকো’য় মেসিদের দেখলাম নিজেদের মধ্যে টানা ২৭ সঠিক পাস খেলল। এখানে তো স্টপার উইংয়ে পাস করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে গ্যালারিতেও বল পাঠায়। ময়দানের ম্যাচে টানা চারটে পাসও সঠিক ভাবে খেলা হয় না বলে গোটা ম্যাচটাকেই অগোছাল দেখায়।
বলের সঙ্গে বন্ধুত্ব: ন্যু কাম্পে দুটো দলেই কয়েক জনকে দেখলাম বাঁ পায়ের আউটসাইড দিয়ে পাস দিতে। মাসচেরানোকে তাদের মধ্যে সেরা লেগেছে আমার। এ রকম চেটো দিয়ে পাস বাড়াতে আমাদের এখানে সে ভাবে দেখাই যায় না। বেশির ভাগ পায়ের ইনসাইড দিয়ে পাস দেয়। আউটসাইড দিয়ে পাস দেওয়ার জন্য দরকার পায়ের পুরো পাতার সঙ্গে বলের সখ্যতা। আমাদের সময় গৌতম-প্রসূন-প্রশান্ত ওই রকম সোয়াভির্ং পাস দিতে পারত। বিপক্ষের দুই বা তিনজন ডিফেন্ডারের মাঝে বলটা পড়লে নিজের দলের অ্যাটাকার সেই ফাঁকা জায়গাটায় পৌঁছে গিয়ে গোলে পাঠাতে পারে। রবিবার রাতে মেসির প্রথম গোলটা অনেকটা সে ভাবে হয়েছে।
দূরের নীহারিকা
গতির রথে: ম্যাচটায় রোনাল্ডো বল পায়ে ১৪ সেকেন্ডে একশো মিটার দৌড়নোর গতিতে অপারেট করেছে। আমাদের এখানে বিদেশ বসু বল ছাড়া ১২ সেকেন্ডে একশো মিটার দৌড়ের গতিতে মাঝে-মধ্যে ছুটত ম্যাচে। কিন্তু রোনাল্ডোর মতো বল পায়ে ওই স্পিড ময়দানি ফুটবলে স্রেফ অসম্ভব। রোনাল্ডোর মতো অতটা না হোক, দু’দলের বেশ কয়েক জন ফুটবলারেরই অবিশ্বাস্য স্পিড। অনেক আগে প্রদীপদা, আমাদের সময় সুভাষ ভৌমিকের বল নিয়ে দৌড়ের মধ্যে তবু একটা আন্তর্জাতিক মানের গতি ছিল। এখন কারও নেই। ইউরোপিয়ান ফুটবলে খুব ছোট বয়স থেকে প্লেয়ারের পায়ের পেশির শক্তি বাড়ানোর দিকে প্রচণ্ড নজর দেওয়া হয়। ডায়েট, জিম, ফিজিক্যাল ট্রেনিং, ক্রীড়াবিজ্ঞান সব এখানকার থেকে একেবারে আলাদা। ময়দানের কোনও ক্লাব বা কোনও কোচিং ক্যাম্পের পরিকাঠামো এর ধারেকাছে নয়।
গণ-বোঝাপড়া: গোলকিপার থেকে উইঙ্গারএগারো জন যেন অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা। মাঝমাঠে এক জন বল ধরল তো সঙ্গে সঙ্গে তার সাপোর্টে মাঠের চার ভাগের তিন ভাগ জুড়ে দলের বাকিরা পজিশন নিতে ছড়িয়ে পড়ছে। তাদের মধ্যে সব সময় বাধ্যতামূলক হিসেবে থাকছে এক জন সারভাইভ্যাল ফুটবলার। যার কাছে বল গেলে বিপক্ষ দলের থেকে বিপদের আশঙ্কা নেই। সেই সারভাইভ্যাল ফুটবলার কোনও কোনও সময় দলের গোলকিপারও হতে পারে। বার্সেলোনা-রিয়াল, দু’টো দলকেই দেখলাম দু’-তিন বার ভালদেস কিংবা কাসিয়াসকেও ব্যাক পাস দিয়ে একবারে লাস্ট লাইন অব ডিফেন্স থেকে পরের আক্রমণটা শুরু করতে। ময়দানেও গোলকিপার থেকে সেই দলের আক্রমণ শুরু হয়। কিন্তু সেটা বেশির ভাগ সময় উঁচু করে মারা শটে। পৈলানের টিমটা আমাদের ফেডারেশনের জুনিয়র টিম। বেশির ভাগ ফুটবলার ঊনিশের কম। মানে যারা আমাদের দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ। তা ওদের আই লিগ ম্যাচে দেখলাম, সারভাইভ্যাল ফুটবলার হিসেবে গোলকিপার দু’-দু’বার বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে বিপক্ষের পায়ে জমা দিয়ে নিজের দলকেই গোল খাওয়াল! সেখানে এল ক্লাসিকোয় গোলকিপার থেকেই এক-এক সময় পরের বারো-চোদ্দোটা পাসের ফুলঝুরির জন্ম হয়েছে। সোজা কথা, আকাশ আর পাতালের তফাত ‘এল ক্লাসিকো’ আর ময়দানি ফুটবল দুটোর মধ্যে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.