হোমকর্তার নামে খুনের অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও চুঁচুড়া |
গুড়াপের হোমের মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিক গুড়িয়া-হত্যা মামলার চার্জশিটে হোমের সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমার ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শ্যামল ঘোষের বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক অভিযোগ আনল সিআইডি।
৪ অক্টোবর চুঁচুড়া আদালতে জমা দেওয়া ওই চার্জশিটে উদয়চাঁদ, শ্যামল-সহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ডিআইজি (সিআইডি) শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “উদয়চাঁদ এবং শ্যামল ঘোষের বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, মৃতদেহ লোপাটের মতো অভিযোগ রয়েছে। ১১ জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।”
গত ৩ জুলাই গুড়াপের ‘দুলাল স্মৃতি সংসদ’ নামে ওই হোমের পাঁচিলের পাশের একটি পুকুরের ধার থেকে গুড়িয়ার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গুড়িয়া-কাণ্ডে পুলিশের কাছে এফআইআর করেন হুগলি জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের অন্যতম আধিকারিক রমা মুখোপাধ্যায়। এফআইআরে উদয়চাঁদ এবং শ্যামলের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। পরে এক-এক করে অন্যদের নামও উঠে আসে। ওই ঘটনার পরে তৎকালীন জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন তদন্তের নির্দেশ দেন। প্রশাসন সূত্রের দাবি, আবাসিকদের সম্পর্কে ভুল তথ্য সরবরাহ করতেন ওই হোম কর্তৃপক্ষ।
চার্জশিটে গুড়িয়ার মৃত্যুর কারণ হিসেবে সিআইডি জানিয়েছে, আবাসিক যুবতীদের উপরে শ্যামল ঘোষ ও কিছু কর্মী মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালাত। তারই প্রতিবাদ করতেন গুড়িয়া। সেই কারণেই ২ জুলাই গুড়িয়াকে হোমের দোতলায় ব্যাপক মারধর করে শ্যামল ও হোমের কয়েক জন কর্মী। সেখানেই গুড়িয়ার মৃত্যু হয়। পরে মৃতদেহ লোপাটের জন্য কবর দেওয়া হয়।
গুড়িয়ার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল রাজনৈতিক মহল এবং রাজ্য প্রশাসনেও। নানা হোমের নানা কাণ্ডকারখানাও প্রকাশ্যে আসতে থাকে। সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন সময়ে মৃত জনা ছয়েক আবাসিকের দেহ বর্ধমানের জামালপুর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। ওই হোম-সহ রাজ্যের নানা হোমের পরিস্থিতি এবং সমাজকল্যাণ দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সিআইডি-র দাবি, গুড়িয়া ছাড়াও দুই মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিককে খুন করা হয়েছে ওই হোমে। সে ক্ষেত্রেও অভিযুক্তরা মৃতদেহ গায়েব করে দেয় বলে মনে করছে সিআইডি। তবে, গুড়িয়াকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, চার্জশিটে সে ব্যাপারে কিছু বলেনি সিআইডি। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে না পাওয়ায় ওই ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। |