|
|
|
|
বাড়তি কুকুর ও রক্ষীর নজরদারি পুজোর ট্রেনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দিন পনেরোর মধ্যেই দক্ষিণমুখী দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় চুরি ও লুঠপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। একটি চেন্নাই মেল। অন্যটি হাওড়া-পুরী এক্সপ্রেস। চেন্নাই মেলের বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণির কয়েক জন যাত্রীর মালপত্র চুরি যায়। তার কয়েক দিন পরেই পুরী এক্সপ্রেসের একটি বাতানুকূল প্রথম শ্রেণির কামরায় ঘুমের ওষুধ ছড়িয়ে যাত্রীদের আচ্ছন্ন করে টাকা ও মালপত্র লুঠ করা হয়। এখনও ওই দু’টি ঘটনার কিনারা করতে পারেনি রেল পুলিশ। ধরাও পড়েনি কেউ। শুধু দূরপাল্লার ট্রেন নয়, শহরতলির লোকাল ট্রেনেও চুরি-ছিনতাই লেগেই রয়েছে।
পুজোর মরসুমে ট্রেনে দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বাড়তে পারে বলে যাত্রীদের আশঙ্কা। পুরীর প্রতি বাঙালি ভ্রমণার্থীর টান তো আছেই। ছুটিতে দক্ষিণের সব ট্রেনেই ভিড় বাড়ে বাঙালির। দক্ষিণমুখী দু’টি ট্রেনের ওই দু’টি ঘটনা পর্যটকদের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। বস্তুত, সব ট্রেনেই যাত্রী-নিরাপত্তার হাল ঠেকেছে তলানিতে। এই অবস্থায় উৎসবে ট্রেনযাত্রা মসৃণ করতে বাড়তি নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছে রেল। পুজোর ভিড়ে নিরাপত্তা-পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না-হয়, সেই জন্য সম্প্রতি পূর্ব রেলের সদরে একটি বৈঠক হয়। হাজির ছিলেন পাঁচটি জোনের রেল পুলিশ, আরপিএফ এবং রেলের কর্তারা। নিয়মিত যাত্রী-সুরক্ষা তো বটেই, বিশেষ করে পুজোয় নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে রেল পুলিশ ও আরপিএফের সমন্বয় নিয়ে আলোচনা হয়। |
|
বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে কীসের ব্যবস্থা হচ্ছে?
রেল পুলিশ সূত্রের খবর: • পুজো উপলক্ষে এ বারেও সব বড় স্টেশনে অনেক বেশি রেল পুলিশকর্মী ও আরপিএফ মোতায়েন করা হবে। রাতের লোকাল ট্রেনেও থাকবে রেল পুলিশ।
• লাগানো হচ্ছে সিসিটিভি ও মেটাল ডিটেক্টর।
• অনেক বেশি সংখ্যক গোয়েন্দা কুকুরও আনা হয়েছে।
• খোলা হবে সহায়তা বুথও।
• যাত্রীদের স্বার্থে অনেক বেশি ঘোষণার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
• বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে মাদক খাইয়ে বা ছড়িয়ে লুঠপাট রোখার উপরে। এই ব্যাপারে যাত্রীদের কাছে কোনও তথ্য থাকলে রেল পুলিশ ও আরপিএফ-কে জানাতে বলা হয়েছে। ট্রেনে ভিড় জমানো অবাঞ্ছিত
ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেওয়া খাবার বা পানীয় খেতে নিষেধ করে ট্রেনে, প্ল্যাটফর্মে পর্যাপ্ত ঘোষণার ব্যবস্থা হচ্ছে। লাগানো হচ্ছে অনেক পোস্টার। বিলি করা হবে প্রচারপত্রও।
নিরাপত্তা নিয়ে রেল ও রেল পুলিশ বড় গলা করে নানা কথা বললেও যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বলছে, পুজোর মুখে ট্রেনে ভিড় শুরু হতেই দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বেড়ে গিয়েছে। শহরতলির লোকাল ট্রেনে বেড়েছে পকেটমারি, ছিনতাই। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য চলছে ট্রেনে। বড় বড় স্টেশনে সমাজবিরোধী কাজকর্মও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা ও গেদে সীমান্ত স্টেশনে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল।
প্রতি বছরের মতো এ বারেও দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব রেল পুজোর দিনগুলিতে সারা রাত লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু রাখছে। দুই রেলই জানিয়েছে, হাওড়া-বর্ধমান মেন ও কর্ড শাখা, শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর, শিয়ালদহ-বনগাঁ ও শিয়ালদহ-ডানকুনি এবং শিয়ালদহ দক্ষিণ-সহ সব শাখাতেই বেশি রাত থেকে ভোর পর্যন্ত অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে।
কিন্তু যাত্রীদের প্রশ্ন একটাই, ট্রেনে যে-হারে চুরি-ছিনতাই বাড়ছে, তাতে পুজোর ক’দিন মানুষ শান্তিতে যাতায়াত করতে পারবেন তো? |
|
|
|
|
|