ভাড়া বৃ্দ্ধির দাবিতে রাস্তাঘাটে বাস এমনিতেই কম। শহরবাসীর ভরসা ছিল মেট্রো। কিন্তু সপ্তাহের প্রথম দিনেই লাইনে ‘ঝাঁপ’-এর জেরে থমকে গেল সেই পরিষেবাও। অগত্যা মেট্রো স্টেশন ছেড়ে রাস্তায় উঠে নাকাল যাত্রীরা দেখলেন, থমকে রয়েছে রাস্তাঘাটও। সৌজন্যে, সাতসকালে বাগমারি ব্রিজে বেলাইন হওয়া ট্রাম।
যাত্রী-ভোগান্তির শুরু সোমবার সকাল ন’টা নাগাদ। পুলিশ জানায়, মানিকতলা থানার সামনে বাগমারি ব্রিজের উপরে মানিকতলাগামী একটি ট্রাম বেলাইন হয়ে রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ে। অফিসটাইমে মানিকতলা মেন রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তায় এই ঘটনার জেরে ক্যানাল ওয়েস্ট রোড দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ি-বাসও পরপর দাঁড়িয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, লাইনচ্যুত ট্রাম সরাতে এবং যানজট এড়াতে প্রায় দু’ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দিতে হয় মানিকতলা মেন রোড। এই সময়ে কাঁকুড়গাছি মোড় থেকে সিআইটি রোড দিয়ে ফুলবাগানের দিকে গাড়িগুলি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। মানিকতলা থেকে কাঁকুড়গাছি বা উল্টোডাঙামুখী গাড়িগুলিকে ঘোরানো হয় এপিসি রোড দিয়ে। যানজট তখন ছড়িয়েছে সিআইটি রোড, বিবেকানন্দ রোড, বিধান সরণি, ক্যানাল ইস্ট রোড ও এপিসি রোডে। |
পুলিশ জানায়, ট্রাম কোম্পানির ক্রেন সাড়ে ১০টা নাগাদ ট্রামটি সরাতে গেলেও বেশ কয়েক বার চেষ্টার পরে অবশেষে বেলা ১২টা নাগাদ ট্রামটি সরানো যায়। ট্রাফিক দফতর সূত্রে খবর, প্রায় প্রতি মাসেই তিন-চার বার বাগমারি ব্রিজের উপরে বেলাইন হচ্ছে ট্রাম। কখনও আবার বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গিয়ে লাইনের উপরে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকছে। ফলে যানজট হচ্ছে। এ দিন ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হতে প্রায় দেড়টা বেজে যায়।
ভোগান্তি পিছন ছাড়েনি মেট্রোতেও। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে শ্যামবাজারে কবি সুভাষগামী মেট্রোর সামনে ‘ঝাঁপ’ দেন অরিজিৎ নন্দী (৩৪) নামে এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি বরাহনগরে। দেহটি এমন ভাবে আটকে যায় যে, তা বার করতে নাকাল হন মেট্রোকর্মীরা। ঘণ্টাখানেক মেট্রো চলাচল ব্যাহত হয়। সেই সময়ে কবি সুভাষ থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত ট্রেন চললেও যাত্রী-দুর্ভোগ অব্যাহত থাকে। স্টেশনগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে। এক সময়ে দমদম স্টেশনে ঢোকার জন্য যাত্রীদের লাইন চলে আসে কার্যত স্টেশনের বাইরে। মেট্রোগুলিতে ঠাসা ভিড় চলেছে বিকেল পর্যন্ত। দুর্ভোগ আরও বাড়ে ভিআইপি রোডে উল্টোডাঙা মোড়ের দিকে যাওয়া একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে উঠে গেলে। লেকটাউনের শ্রীভূমির সামনে ঘটনাটি ঘটে পৌনে ১১টা নাগাদ। বাসের পিছন দিকের অনেকটাই ভিআইপি রোডের একাংশে সরে যায়। ফলে সঙ্কীর্ণ হয়ে যায় এক দিকের রাস্তা। যানজট ছড়ায় কেষ্টপুর, দমদম পার্ক পর্যন্ত। ফলে পথ থেকে পাতালে দিনভর যাত্রী দুর্ভোগের ছবিটায় বদল বিশেষ হয়নি বললেই চলে। |