কম বৃষ্টিতে ফলন কম ধানের
ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হল না জেলায়। গত বছর যেখানে ৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪২ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছিল, এবার সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারল না জেলা। কম বৃষ্টিপাতের কারণে আটকে যেতে হল ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯২০ হেক্টরেই। ফলন কম হওয়ায় চাষিদের সঙ্গে সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে সাধারণ মানুষেরও।
অন্য বছরের তুলনায় প্রতি মাসেই গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমছে। এতে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। আবার কম বৃষ্টিপাতে ফলন কম হওয়ারও আশঙ্কা আছে। আশার কথা এটাই যে, এ বার রোগপোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। যদি মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হয় তাহলে ভাল ফলন হবে বলেই কৃষি দফতরের অনুমান। কৃষি দফতরের তথ্য আধিকারিক দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “এ বার ৮৫ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়েছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে ফলন ভাল হবে। না হলে যে সমস্ত জমিতে একেবারে শেষের দিকে রোওয়া হয়েছিল সেই ধান বাঁচানো যাবে কিনা সংশয় রয়েছে।”
চলতি বছরের গোড়ায় তুলনায় বৃষ্টি হয়েছিল বেশিই। গত ১০ বছরে যেখানে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে গড় বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১২.৮ মিলিমিটার ও ৮.৯ মিলিমিটার সেখানে এ বছর জানুয়ারি মাসে বৃষ্টি হয়েছে ৪৮.৮ মিমি ও ৩৫.১ মিমি। কিন্তু ধান চাষের সময় শুরু হতেই বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করে। অথচ, এই সময়েই বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল বেশি। গত ১০ বছরের হিসাব বলছে মে মাসে গড় বৃষ্টি হয়েছে ১২৭.২ মিমি। সেখানে এ বছর হয়েছে ৫২.৭ মিমি। জুন মাসে ২৬৬ মিমির পরিবর্তে ১২৫ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে, জুন মাসে ২৬৬ মিমি-র পরিবর্তে ১২৫ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কেবলমাত্র জুলাই মাসে অন্যান্য বছরের মতোই বৃষ্টিপাত হয়েছিল, ৩১৪.৯ মিমি। ফলে চাষিরা দ্রুত গতিতে অনেকটাই ধান রোওয়ার কাজ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকেই বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করে। অগস্টে গড় বৃষ্টিপাতের থেকে ৩১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসেও ২৩ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে শেষের দিকে যাঁরা রোওয়া করেছিলেন তাঁদের সব ধান বাঁচবে কি না সংশয়। কারণ, চড়া রোদে দ্রুত জমির রস শুকিয়ে যাচ্ছে। সব জায়গায় সেচের সুবিধা না থাকায় চাষ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বাড়বে চালেরও। কৃষি দফতর জানিয়েছে, সাধারণত আউসের ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৩.৫৮ টন ধান উৎপাদন হয়। আর আমনের ক্ষেত্রে হেক্টর প্রতি ৪ টন বা তার থেকে সামান্য বেশি ধান উৎপাদন হয়। জেলায় আউস ধানের চাষে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ৮২ হাজার ১২২ হেক্টর জমি পতিত থেকে গিয়েছে। ফলে জেলায় যেখানে ১৮ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৪১ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হত সেখানে জমি পতিত থাকার কারণে এ বছর ৩ লক্ষ ২৮ হাজার ৪৮৮ মেট্রিক টন ধান এমনিতেই কম উৎপাদন হবে। তার উপর চাষ করার পরেও বৃষ্টির অভাবে চাষ নষ্ট হলে ফলন আরও কমতে পারে। তাই যাতে চাষ হওয়া জমিতে ফলন না কমে সে জন্য এবার চাষিদের জিঙ্ক দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছে সরকার। কৃষি দফতর জানিয়েছে, ধানে শিস আসার সময় জমিতে জিঙ্ক দিলে ধানের ফলন বাড়ে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.