|
|
|
|
সংস্কার নিয়ে বৈঠকেও সূত্র অধরা বিজেপির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সংস্কার নিয়ে দলের অবস্থান কী হবে, আজ প্রাথমিক আলোচনায় তার কোনও সূত্র খুঁজে পাননি নিতিন গডকড়ী। তার উপরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিজেপি-সহ বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের আপত্তির কথা শুনবেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি অনেক নেতাই বলছেন, শেষ পর্যন্ত যদি পেনশন ও বিমা ক্ষেত্রে তাঁদের আপত্তি সরকার মেনে নেয়, তা হলে সেই বিল দু’টিকে সমর্থন করা ছাড়া দলের কোনও পথ থাকবে না।
কেন? কারণ, পেনশন বা বিমা ক্ষেত্রে সংস্কার শুরু হয়েছিল বিজেপির আমলেই। আবার বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হা যে অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, সেই কমিটি পেনশন,বিমা ক্ষেত্রে ২৬% বিদেশি লগ্নির সুপারিশ করেছে। তাই খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে বিজেপির পক্ষে গলা খুলে বিরোধিতা যত সহজ, সেটা পেনশন-বিমা সংস্কারের ক্ষেত্রে নয়। এ কথা দলের নেতৃত্ব জানেন। কিন্তু চলতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংস্কারের বিরোধিতায় যে ভাবে বিরোধী দলগুলি এক হচ্ছে, তাদের সঙ্গত্যাগ করে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিতেও তাঁরা চাইছেন না। তাই এমন রণকৌশল নিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব, যাতে সব দিক রক্ষা হয়।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতা আজ বলেছেন, “আমরা কোনও ভাবেই বার্তা দিতে চাই না যে, আমাদের দল সংস্কার বিরোধী। আবার মনমোহন সরকার যে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ করেছে, তাকে সমর্থন জানিয়ে কংগ্রেস-বিরোধিতার জায়গাটাকেও লঘু করে দেওয়াটা ঠিক হবে না।” তা হলে? বিজেপি সূত্রের খবর, তাঁরা এখন গরিব-মধ্যবিত্তের স্বার্থে কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি করতে চান। কিন্তু সরকার যদি শেষ পর্যন্ত যাবতীয় বিষয় মেনে নেয়? বিজেপির এক নেতার মতে, সেই পরিস্থিতিতে বিলের সমর্থন করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।
আজ নিতিন গডকড়ী দলের নেতাদের সঙ্গে যে ঘরোয়া বৈঠক করেন, সেখানে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। আডবাণীর ঘনিষ্ঠ নেতা গুরুমূর্তি বিজেপি সভাপতিকে জানিয়ে দেন, অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান যশবন্ত সিন্হা যখন যাবতীয় বিল পর্যালোচনা করেছেন, তখন তাঁর বিদেশ সফর থেকে ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হোক।
বিজেপি নেতৃত্ব অন্য একটি সম্ভাবনার কথাও ভেবে রেখেছেন। দলের নেতাদের একাংশের মতে, সংসদের আগামী অধিবেশনে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে হট্টগোল হবে। তৃণমূলের মতো দলগুলি হইচই করবে রান্নার গ্যাস, পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও। সঙ্গে কয়লা কেলেঙ্কারি এবং সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ আছেই। তার উপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতো তৃণমূল যদি অনাস্থা প্রস্তাব আনার চেষ্টা করে, তবে তো কথাই নেই। বিজেপির মতে, এই যাবতীয় বিষয় নিয়ে সংসদে হাঙ্গামা তীব্র হলে এমনিতেই সংস্কারের বাকি বিষয়গুলি ধামাচাপা পড়ে যাবে। তাতে দলের সুবিধাই হবে। কারণ সংস্কারের বিরোধিতাও করতে হবে না, আবার সমর্থন করার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হবে না।
সরকার যে বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে বিজেপির সঙ্গে আলোচনা চায়, সেটা মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে চিদম্বরম জানিয়েছেন। আরও সংস্কারের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে পেনশন-বিমার মতো বিল পাশের ব্যাপারে বিরোধীদের বোঝাতে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশা তাঁর। বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রা ২৬% থেকে বাড়িয়ে ৪৯%নিয়ে বিজেপির যে আপত্তি রয়েছে, তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে মতপার্থক্যের কথা জানি। কিন্তু বিরোধীদের বুঝিয়ে এই মতান্তর ঘোচানো সম্ভব হবে বলে মনে করি।” |
|
|
|
|
|