এক সময় পুজোমণ্ডপে দৃশ্যপট আঁকার জন্যই ‘সিনারি’র গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল দুবরাজপুরের গাঁড়া গ্রাম। যাঁর হাত ধরে এই সিনারি গ্রামের মর্যাদা পাওয়া সেই নিমাই সাহা কাজের সূত্রে বর্তমানে দুর্গাপুরে থাকেন। সেখান থেকেই তিনি কাজ করছেন। তবে তাঁর শিষ্য হিসেবে এই সিনারি গ্রামের মর্যাদা ধরে রেখেছেন প্রদীপ গড়াই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব ছোটবেলায় পুজো মণ্ডপের জন্য দৃশ্যপট আঁকার কাজ নিমাই সাহার কাছে শিখতে শুরু করেছিলেন প্রদীপবাবুর মতো আরও দু’তিনজন যুবক। তাঁদের মধ্যে স্বপন সাহা অসুস্থতার কারণে সেই কাজ থেকে সরে গিয়েছেন। বর্তমানে প্রদীপবাবুই গ্রামের এই সুনামকে জিইয়ে রেখেছেন। |
দীর্ঘদিন গুরু নিমাই সাহার সঙ্গে কাজ করার পর গত ছয় বছর একাই জেলা ও জেলার বাইরে একাধিক দুর্গাপুজো মণ্ডপে দৃশ্যপট তৈরি করে যথেষ্ট পরিচিতি পেয়ে গিয়েছেন প্রদীপবাবু। সঙ্গে আয়ও বেড়েছে। তবে এ জন্য মাস চারেক আগে থেকে রাত দিন পরিশ্রম করতে হয় বলে জানান প্রদীপবাবু। পুজো উদ্যোক্তাদের ভাবনা আনুযায়ী প্রথমে ছবি এঁকে সেটাকে পাতলা প্লাইউডের উপর স্কেচ করে সেগুলিকে প্রয়োজন আনুযায়ী কেটে তার উপরে রঙের কাজ করতে হয়। এখানেই শেষ নয়। দৃশ্যপট তৈরি করে সেগুলিকে যথাস্থানে বসাতে হয় শিল্পীকেই।
তাঁর কথায়, “এবার বীরভূম, বর্ধমানের বিভিন্ন কয়লাখনি অঞ্চল, বাঁকুড়া এবং ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ-সহ মোট ১৬টি পুজো মণ্ডপের জন্য দৃশ্যপট তৈরি করছি। ১১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ত্রিশ হাজার টাকা বাজেটের এই দৃশ্যপট এঁকে সারা বছরের সংসার খরচের টাকা উঠে যায়। কালীপুজো ও সরস্বতী পুজোয়ও একাজ থেকে আয়ও হয়।”
প্রদীপবাবু বলেন, “মুষ্টিমেয় কয়েকজন গুরু নিমাইবাবুর কাছে কাজ শিখেছিলাম। কিন্তু মূল লক্ষ্যটা থাকে দুর্গাপুজোর উপরেই। ভাই ও স্ত্রী যেমন একাজে সাধ্যমতো সাহায্য করেন তেমনি গ্রামের অনেকে এই কাজে হাত দিচ্ছেন।” |