|
|
|
|
|
|
|
নানা রকম... |
|
সৃষ্টি ও ভাবনার মেলবন্ধন |
কথায় ও গানে। রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিখা বসু |
সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় রবীন্দ্রসদনে দু’টি অন্য ভাবনায় সমৃদ্ধ সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠানে মন ভরিয়ে দিলেন নাচ-গান-ভাষ্যের প্রত্যেক শিল্পী। চলতি নৃত্যনাট্য নয়। দু’টি সম্পূর্ণ নতুন সৃষ্টি, নতুন চিন্তাভাবনা। পুরো অনুষ্ঠানের মূল ভাবনায় তরুণ নৃত্যশিল্পী অভিরূপ সেনগুপ্ত। আয়োজনে ‘প্রয়াস’। |
|
প্রথম পর্বে ‘পঞ্চকবির গান’। রবীন্দ্রনাথ তো আছেনই, তার সঙ্গে অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত, দ্বিজেন্দ্রলাল আর নজরুল এই পাঁচ কবির গান ও ভাষ্য নিয়ে একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। অত্যন্ত সুচারু বিন্যাস। তবে ভাষ্যের অংশ একটু সংক্ষিপ্ত হতে পারত অনায়াসে। ভাষ্যপাঠে রায়া ভট্টাচার্য, অগ্নিমিত্রা পল, সত্যম রায়চৌধুরী, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের মধ্যে অবশ্যই প্রখর হয়ে উঠেছেন রায়া ভট্টাচার্য। তাঁর কণ্ঠের লাবণ্য, উচ্চারণ-বৈশিষ্ট্য, সর্বোপরি কাব্যময়তা ভাল লাগে। সত্যম রায়চৌধুরীর ভাষ্যপাঠে ফুটে ওঠে চর্চা ও অনুশীলনের সুন্দর মেলবন্ধন। ব্যতিক্রম নন অগ্নিমিত্রা বা কনীনিকাও। প্রশংসা করতেই হয় ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গানের অংশে একক শিল্পী তিনি। আর পাঁচ কবির গানেই তাঁর সমান দাপট। এ দিন বেশ ভাল লেগেছে ঋদ্ধির গান।
একেবারে শিশু-সহ বেশ কিছু শিল্পী নিয়ে কিছুটা ওড়িশির ছাঁচকে ইমপ্রোভাইজ করে পাঁচ কবির গানেরই নৃত্যরূপ দিয়েছেন অভিরূপ। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত বিন্যাস। তবে একেবারে বাচ্চাদের নাচে খুব ভারী গান নির্বাচন না করলেই হয়তো ওরা প্রাণময় হয়ে উঠতে পারত। একটিই একক নাচ অতুলপ্রসাদের ‘যাব না যাব না’। দ্বিজেন্দ্রলালের ‘ধনধান্যে’ বা নজরুলের ‘রণরঙ্গিনী’ সুন্দর। এই নৃত্যবিন্যাসের দায়িত্ব সামলেই অনেকগুলি অংশে অভিরূপের নিজের নাচ খুব স্বচ্ছন্দ। তাঁর নাচে লাবণ্য আছে। আছে যথাযথ তালিমের ছাপ। |
|
দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘সূর্যের সিঁড়ি’। আজকের এই কম্পিউটার আর টিনটিনের যুগে রূপকথাকে ফিরিয়ে এনেছেন দীপান্বিতা রায়। সংলাপ, গান সবই তাঁর একক কৃতিত্ব। পাশে পেয়েছেন উর্মিলা ভৌমিকের মতো নৃত্য নির্দেশক। খুদেদের দিয়ে যিনি প্রায় পেশাদারি দক্ষতায় কাজ করিয়েছেন। গানের সুরে পেয়েছেন জয় সরকারকে। আবেগ টানটান হয়ে ওঠে শ্রীকান্ত আচার্য, লোপামুদ্রা মিত্র-সহ প্রত্যেকের গানে, গানের নাটকীয়তায়। সূর্যের সঙ্গে মেঘের রাজার শত্রুতা, তার পর কী করে রামধনুর পথ বেয়ে সূর্যদেব আবার পৃথিবীতে নেমে আসেন, ছোটদের সঙ্গে বড়রা এবং বুড়োরাও সমান উপভোগ করবেন। শুধু তাই নয়, অভিনয় অংশও সমান জোরদার। বছর তিন-চার বয়স থেকে কিশোরী পযর্ন্ত একশো কুড়ি জন শিল্পী তুমুল ভাবে মঞ্চ জুড়ে নাচ-গান-অভিনয় করেছেন। মঞ্চসজ্জা, পোশাক, সুর সংযোজনা সব মিলিয়ে ‘সূর্যের সিঁড়ি’ বারবার মঞ্চস্থ হওয়া উচিত। এবং প্রথম অনুষ্ঠান, পঞ্চকবির গান-এর পুনঃপ্রযোজনাও পুরোনো সময়ের গানের সম্ভারের প্রতি আমাদের আগ্রহী করে তুলবে। |
|
|
|
|
|