শহরে যত্রতত্র বাড়ি ও ভবন তৈরি নিয়ে কোচবিহার পুরসভার ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৃহস্পতিবার সাগরদিঘির পাড়ে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর ওই কথা বলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। এমনকি প্রকাশ্যেই জেলাশাসককে তিনি যত্রতত্র বেআইনি নির্মাণ বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, রাজ্যে জোট ভাঙলেও এখনও কোচবিহার পুরসভায় জোটের পুরবোর্ড রয়েছে। কংগ্রেসের পুর চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান পুরসভার পদাধিকারি হিসাবে আছেন। মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “যত্রতত্র বাড়ি, ভবন তৈরিতে কোচবিহারের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে। বাড়ি তৈরিতে পুর আইন মানা হচ্ছে না। বহুতলগুলিতে পার্কিংয়ের জায়গা নেই। এসব আর বরদাস্ত করা হবে না।” এর আগে মহারাজার সার্ধশতবর্ষের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, “জেলাশাসকে বলব কড়া হোন। বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিন।” তবে জোটের পুরসভা থাকার পরেও এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, “কংগ্রেস, তৃণমূল বা সিপিএমের বিষয়ে রাজনীতি করতে আসিনি। কোনও রকম সংকীর্ণ গন্ডির মধ্যে যেতে চাইছি না। ঐতিহাসিক শহকে বাঁচাতে কিছু করা দরকার বলেই এসব বলেছি।” পাশাপাশি পর্যটক টানতে কোচবিহার রাজবাড়ি সাজা, সাগরদিঘি চত্বরের সমস্ত অফিস ভবনে একই রঙ করা-সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনার বিষয়ে জোর দেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর ক্ষোভের পরেই বেআইনি নির্মাণের ‘দায়ভার’ নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে। কংগ্রেস চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডু বলেন, “শহরে বোর্ড অব কাউন্সিলরদের অনুমোদন সাপেক্ষে সমস্ত বাড়ি, বহুতল তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। সুনির্দিষ্টভাবে কোনও ব্যাপারে অভিযোগ এলে পুরসভা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।” পুরসভার তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা আহমেদ অবশ্য বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পরেই আমরা বোডর্র্ মিটিঙে বেআইনি নির্মাণের ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছিলাম। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” মন্ত্রীর নির্দেশের পরেই জেলা প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে তৎপরতা দেখা দিয়েছে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “পুর কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সমীক্ষা করা হবে। তারপরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |