কন্যে চাইল সুখ, তিনি দিলেন শাড়ি
ভারী সুন্দরী, পুজোবেলায় ওর সঙ্গে মানিয়ে খুব জমজমাট সাজা যায়, আর? ওমা! শাড়ি কত কায়দায় পরা যায় বলুন দেখি? দেশি-বিদেশি, আর কোন পোশাক এমনিধারা এলেম রাখে? সাবেকি মতে আঁচল ঘুরিয়ে, আঁচল লুটিয়ে নায়িকা সেজে বা ঠাকুর-নন্দিনীদের মতো বোম্বাই-দস্তুর, যা খুশি পরুন। সময় এগোনোর সঙ্গে শাড়ি কখনও হল্টারনেক টপ-এর সঙ্গী, অবাঙালি লহেঙ্গার ছাঁদেও বদলেছে। উফ্, রূপ নিয়ে তার বড্ড অহংকার। আর তাই একটু সংবেদনশীলও যেন। পরন-বিন্যাস এতটুকু এদিক ওদিক হলে, গয়নাগুলো মনের মতো না হলেই সব সাজ, শখ বরবাদ। তাই, পুজোতেও শাড়ি শুধু কিনে ফেললেই হচ্ছে না, ওর মন মানিয়ে ব্যাকরণ মেনে সাজতেও জানতে হবে।
রোম্যান্টিক ডিনারে অষ্টমীর সকাল

মটকা ঘিচা’দের জন্য
নতুন নকশার মটকা ঘিচা শাড়িগুলি রঙের খেলায় স্বতন্ত্র। কনে লাল রঙের ওপর স্বচ্ছ বুটি কাজ, আঁচলটা সোনালি, খাঁটি রেশম সিল্কের। একেবারে অফশোল্ডার সোনালি ব্লাউজ সব থেকে বেশি মানায়। কিন্তু তা না হলে পাড়ের রঙের টু স্ট্র্যাপ ব্লাউজও চলে। যাঁরা দক্ষিণি কিনবেন, কাঞ্জিভরম ছাড়াও চওড়া পাড় ভারী সাউথ কটন, চেন্নাইয়ের নল্লি সিল্ক দেখতে পারেন। সামলানো সহজ। আর শাড়িতে অভ্যস্ত ও অনভ্যস্ত নির্বিশেষে অনেক মেয়েই পঞ্চমীর বিকেল বা ষষ্ঠীর সকালে শাড়ি পরে, পুজোর সাজটা শুরু করতে চান। তখন এই ধরনের শাড়ি আদর্শ। একই সঙ্গে জমকালো ও স্নিগ্ধ। কমবয়সিরা প্রথম দিন মারওয়াড় বা রাজস্থান প্রিন্ট-এর শাড়িগুলো পরতে পারেন। অদ্ভুত সব রং, নরম গোলাপি, তুঁতে বা আশ্চর্য হলুদ। তবে সঙ্গে চোলি না পরলে এ সাজ খুলবে না। আর মারমেড কাট পেটিকোট পরবেন। শাড়ির ঘেরটা খুব সুন্দর দেখাবে।

বুটিক সংবাদ
ঘুরলেই বুঝতে পারবেন, এক একটা বুটিকে এক একটি বিশেষ ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। কোনও বুটিক হয়তো বিশেষ ধরনের প্রিন্টেড সিল্ক, হাতে বোনা হাল্কা টাঙ্গাইল বা ফুলিয়ার তাঁত নিয়ে কাজ করে। ওই একটু সাদামাটা ধরনের নকশাই ওই বুটিকের এক্সক্লুসিভ বৈশিষ্ট্য। আবার কোনও বুটিকের বৈশিষ্ট্য একটু ম্যাট ফিনিশড প্রিন্ট বা ফিউশন বেনারসি বা সিল্কের নানা রকম শাড়ি। যাঁরা সাজবার জন্যই শাড়ি কেনেন, তাঁরা এগুলো দেখে পুজোর জন্য একটু নিষ্প্রভ মনে করতে পারেন। কিন্তু এই সব শাড়িই একটু অন্য ভাবে ড্রেপ করলে, আর তার সঙ্গে অপ্রচলিত অ্যাকসেসরি ব্যবহার করলে লুক পুরো চেঞ্জ হয়ে যাবে। যেমন ওই ধরনের স্কার্ট-পাড় শাড়িই স্লিভলেস জ্যাকেটের সঙ্গে অপ্সরা স্টাইলে পরে, ঝুটো কোমরবন্ধ পরে নিন। বাড়িতে পুজো থাকলে আদর্শ ‘লুক’। তবে এতে অস্বস্তি থাকলে ওই বুটিকগুলোয় ময়ূরকণ্ঠী নকশার পৈঠানি সিল্ক, হাফ অ্যান্ড হাফ ইক্কত ইত্যাদি খুঁজে নিন। এই শাড়িগুলিতে দু’তিনটে রং মিশে থাকে। সান্ধ্য সাজের জন্য বেশি ভাবতেই হবে না। তবে, পুজোর সন্ধ্যেবেলাগুলোয় জমিয়ে সাজার জন্য, কোষা সিল্ক বা জুট সিল্ক, জুট জারদোসি, ব্রোকেড সিল্কের ওপর কাজ করা নানা শাড়ি, নেট টিস্যু ইত্যদির ওপর আস্থা রাখতে পারেন।

অষ্টমীর অঞ্জলি, দশমীর সিঁদুরখেলা
দশমীর বিকেল
এমন কোনও দোকান বা বুটিক খুঁজে নিন যারা তাঁতিদের সঙ্গে হাতে কলমে কাজ করে। শাড়ির যাবতীয় নতুন সংস্করণ তৈরি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখানেই আগে হয়। হয়তো কোনও শাড়ি এমন পেয়ে গেলেন যার জমিটা তাঁতের, দুই রঙের বড় স্ট্রাইপ দেওয়া। এ দিকে পাড় সিল্কের আর আঁচলে কাপড় মুড়ে থুপির মতো করা হয়েছে। এ ধরনের শাড়ির নাম অঙ্গামী। অষ্টমীর সকালে প্যান্ডেলের ভিড়ে নজর কাড়বেই। এই রকম শাড়ি কিনলে একটা বেজ আর একটা কালো হল্টার নেক ব্লাউজ করিয়ে রাখুন। পরলে দুর্দান্ত মানাবে। কিংবা কাঁথা স্টিচের এমন কোনও শাড়ি যা ভাঁজ করা অবস্থায় দেখলে রুচিশীল বেড কভার মনে হবে কিন্তু মেলে ধরা মাত্র সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে দেবে।
আগুন ও আবির শাড়ি ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছে, কিন্তু তার নকলও বেরিয়েছে প্রচুর। এই শাড়িগুলির একটি বিশেষ কারিগরি আছে। তাই উৎপত্তিস্থল ছাড়া অন্য কোথাও থেকে নকশাপাড় আবির, আবির জামদানি বা ধুতি পাড় ইত্যাদি না কিনলে, নকলগুলির রং জ্বলে যাওয়ার এবং পরে ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া এই লুক অ্যালাইক শাড়িগুলি দৈর্ঘ্যেও ছোট। যদি কোনও এক পুজো-সকালে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরতে চান, তা হলে ক্রিম রঙা ধনেখালি, তাঁত বা লিনেনের জমির ওপর লাল পাড় বসানো শাড়ি কিনে নিন। আর দশমীর জন্য সূক্ষ্ম কারুকাজের জামদানি, চান্দেরি, মসলিন বা টাঙ্গাইল কিনে নিতে পারেন। কিংবা রাজশাহির সূতির শাড়ি। পারলে আটপৌরে করে পরবেন। অবশ্য তাতে অনেকেরই চোখে প্রতিমা দর্শনের মুগ্ধতা লাগবে, তখন লজ্জা পেলে চলবে না কিন্তু, কেমন?
এক্সক্লুসিভ হতে
শাড়ির এগজিবিশন বা হ্যান্ডলুম মেলায় গেলে দেখবেন, প্রিয় বুটিকে যে ধরনের শাড়ি দেখেন, তার অনেকগুলোই বেশ কম দামে ওখানে আছে। এঁরা অনেকেই বাড়ি এসে শাড়িও দিয়ে যান, চাইলে সিকু্যুইন বসিয়ে অন্য পাড় জুড়ে অনবদ্য সব শাড়ি বানিয়ে দেবেন। এক্সক্লুসিভ, আর্টিস্টিক ইত্যাদি যে সব শাড়ি হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান, সেটা সত্যি সত্যি পেতে এটা অন্যতম একটি উপায়। মাথায় রাখুন।

মেক-আপ: অনিরুদ্ধ চাকলাদার কেশবিন্যাস: নূর আলম
স্টাইলিং: স্যান্ডি মডেল: সম্পূর্ণা ছবি: আশিস সাহা

সেই মেয়েটির চারটি দিন
চেন ওয়ালা টিউব ড্রেস

মেদ ঝরিয়ে চেহারাটা দেখার মতো
ছিপছিপে করেছেন? ভেতরে ঢুকে পিঠের
জিপারটা টেনে দিন। দারুণ ফিট করবে।


ফ্লোরাল প্রিন্ট সাটিন পাজামা
না বাড়ির পোশাক নয়। পরে রীতিমত ডিস্ক পর্যন্ত ঘুরে আসতে
পারেন। সাটিনের টাইটস বা বেলবটমস। নানা লতাপাতার
নকশা থাকে। শিফনের বেল্টেড স্লিভলেস বেলুন টপের সঙ্গে
দারুণ মানায়। তবে সঙ্গে কিন্তু হাই হিল পরলে ভাল।
 
ফিশকাট স্কার্ট বা ড্রেস

পোশাকের নীচের সেলাই-লাইনটা আর আগের মতো এক রকম নেই।
হয়তো ডান পায়ের যে অংশে পোশাকটি শেষ হয়েছে, বাঁ পায়ে
তার তিন ইঞ্চি ওপরে শেষ হল। হেমলাইনটা সেভাবেই
জিগজ্যাগ করে বানানো হয়েছে। এটাই ফিশকাট।

 
জোধপুর বা মেডিইভ্ল প্যান্টস
এর কোমরের অংশটা সামান্য ফোলা হয়, আর কখনও কখনও প্লিটস
থাকে বা থাকে না। খুব অভিজাত দেখতে কোনও টপ টাক ইন করে
পরুন। পোলো খেলার ছবিতে দেশি রাজাদের যে ট্রাউজার্স পরতে
দেখেন খানিক ফোলা আর নীচে চাপা, সেই ট্রাউজার্সগুলোই মেডিইভ্ল
প্যান্টস। এ বারের ট্রেন্ড হল রঙিন, ক্রপড (গোড়ালি পর্যন্ত) মেডিইভ্লস।

সৌজন্য: ব্লেন্ডার্স প্রাইড ফ্যাশন টুর



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.