তিন লক্ষেরও বেশি লোক নির্ভরশীল নদিয়ার কালীগঞ্জ ব্লকের মীরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে। কিন্তু কোনও স্থায়ী ডাক্তার নেই সেখানে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র জুড়ে কর্মী অভাব এবং পরিষেবাগত নানান ত্রুটিতে জেরবার সেই হাসপাতাল।
অথচ সেখানে প্রতি দিন সেখানে তিন-চারশো রোগী নূন্যতম চিকিৎসা পরিষেবার জন্য ভিড় জমান। তবে একটি তথ্য, ডাক্তার সাকুল্যে একজন। তিনি আবার স্থায়ী নন। তার উপরে হাসপাতালে সাফাই কর্মী নেই, হয়না অস্ত্রোপচার। মেলে না নিতান্ত জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুল্যান্সও।
মঙ্গলবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গিয়েছে রোগীর সংখ্যা অন্তত তিনশো। লম্বা লাইন। কিন্তু চিকিৎসক নেই। সাকুল্যে সেই এক জন। ওই কেন্দ্রের সবে ধন ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক পলাশ বিশ্বাস বলেন, “আমি গত দু-বছর ডেপুটেশনে আছি। সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এর বেশি আর কী-ই বা করতে পারি।”
পলাশি অঞ্চলের বাসিন্দা মঞ্জুরা বিবি বলেন, ‘‘রাতে বুকে ব্যথা হয়েছে। সেই ব্যথা দেখাতে হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু সকাল থেকে দাঁড়িয়ে থেকে থেকে বেলা ১২টায় ডাক্তার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে পারলাম।” কালীগঞ্জ ব্লকের মীরা ১ নম্বর ও ২ নম্বর, পলাশি ১ নম্বর ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত ছাড়াও চাঁদঘর পঞ্চায়েতের মানুষ ওই হাসপাতালে নিয়মিত আসেন।
তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের পক্ষে কালীগঞ্জ ব্লক সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “অস্থায়ী ডাক্তার ও অনান্য সমস্যার কথা আমরা জানি। বিষয়টি প্রশাসনকে আমরা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। স্থায়ী ডাক্তার ও তার সংখ্যা বৃদ্ধি, স্থায়ী সাফাইকর্মীর দাবি আমরাও জানিয়েছি। জাতীয় সড়ক ও রেলপথ কাছে থাকায় ওই কেন্দ্রে রোগীর চাপও বেশি।” কিন্তু উপায়?
কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, “মানুষ বর্তমানে হাসপাতালমুখি হচ্ছে। তাদের প্রতি আমাদের কতর্ব্য আছে। সেই মতো আমরা কাজ করছি।” জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদারের অবশ্য তাতে হেলদোল নেই। নির্বিকার গলায় তিনি বলছেন, “ওই হাসপাতালে ডাক্তার তো আছেন। বাকি পরিষেবার যতটা সম্ভব দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দেখা যাক।” |