পুরসভায় দলত্যাগ
চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে সচিবকে বাম-চিঠি
দীর্ঘ দিন শহরের রাস্তা বেহাল। সাফাইয়ের হালও ভাল নয়। পুর পরিষেবার মান নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে গোটা শিলিগুড়িতেই। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার দলত্যাগী চেয়ারম্যান নান্টু পালের অপসারণ চেয়ে পুরসভার সচিবকে ১৭ জন বাম কাউন্সিলর চিঠি দেওয়ায় শিলিগুড়ি পুরসভায় অচলাবস্থার আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। শহরবাসী পুজোয় জরুরি পরিষেবা কতটা মিলবে সেই প্রশ্নে দুশ্চিন্তায় । বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “কংগ্রেস-তৃণমূল জোট বাসিন্দাদের উন্নত পরিষেবা দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল। বাস্তবে কী হচ্ছে তা বাসিন্দারা টের পাচ্ছেন। কাউন্সিলরদের কেউ দলত্যাগ করতে পারেন। সে ব্যাপারে পুর আইন আছে। তা অনৈতিক বা অসাংবিধানক কি না চেয়ারম্যান তা দেখেন। এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যন নান্টুবাবুই দলত্যাগ করেছেন। তাই তাঁর অপসারণ চেয়ে বাম কাউন্সিলরদের তরফে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।” আগামী ১২ অক্টোবর বামেদের তরফে নাগরিক সভা ডেকে পুর পরিষেবার বেহাল পরিস্থিতির বিষয়টি বাসিন্দাদের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। চেয়ারম্যানের অপসারণ নিয়ে বামেদের চিঠির ব্যাপারে পুর সচিব কাজলকান্তি সাহা বলেন, “চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি পুর কমিশনারকে জানাব।” পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান জানিয়েছেন, কাজের জন্য তিনি কলকাতায়। বামেদের চিঠি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আধিকারিকদের। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, এক তৃতীয়াংশের বেশি কাউন্সিলর চাইলে চেয়ারম্যানের অপসারণের আর্জি জানিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করতে পারেন। সেই মতো আস্থা প্রমাণে ১৫ দিনের মধ্যে বিশেষ সভা ডাকাই নিয়ম। চেয়ারম্যানকেই ওই চিঠি পাঠান হয়। তিনি সভা ডাকবেন। তবে সভাপতিত্ব করতে পারবেন না চেয়ারম্যান। ‘বোর্ড অব কাউন্সিলর’-এর মধ্যে থেকে কাউকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে। আস্থা প্রমাণের জন্য ভোটাভুটি হবে। চেয়ারম্যান নান্টু পালের দলত্যাগের প্রশ্নে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বোর্ড মিটিং ভেস্তে গিয়েছিল কংগ্রেস এবং বাম কাউন্সিলরদের বিক্ষোভ, আপত্তিতে। তাতে পুজোর মুখে বিভিন্ন পুর পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ দিন পূর্ত দফতরের বাংলোয় দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুজোর মুখে পুর পরিষেবায় যাতে কোনও খামতি না থাকে সে জন্য মুলতুবি বৈঠক দ্রুত ডাকার আর্জি জানিয়ে এ দিনই তাদের তরফে চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে মেয়রের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আজ, শুক্রবার তাঁকে চিঠি দেবেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, বামেদের বিষয় নিয়ে তাঁর বলার কিছু নেই। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ হলে পরবর্তী ক্ষেত্রে কী কী হতে পারে তাঁরা জানেন। তাই বলে বোর্ড মিটিং ভেস্তে দেওয়া তারা মেনে নেবেন না। মন্ত্রী বলেন, “বোর্ড মিটিংয়ে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা অসাংবিধানিক। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকলে আইন মেনে ব্যবস্থা নিতে পারেন। অথচ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কংগ্রেস এবং সিপিএম মিলে পুজোর মুখে বোর্ড মিটিং বানচাল করল। যে সব সিদ্ধান্ত তাতে আটকে রয়েছে মুলতুবি সভা ডেকে তা দ্রুত পাশ করার আর্জি জানানো হয়েছে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অভিযোগ, মেয়র পুরসভার প্রধান। তিনি পারিষদদের নিয়ে বৈঠকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। অথচ বোর্ড মিটিং ভেস্তে দিচ্ছেন তাঁরা। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত ওই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “গৌতমবাবুরা তো জাটেই রয়েছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই সব কিছু করা হয়। বারবার তাঁরা অভিযোগ তুলছেন কেন বুঝছি না।” তাঁর দাবি, পুজোর আগে যে সব বিষয়ে কাউন্সিলররা বলেছিলেন সে সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.