|
|
|
|
খড়্গপুর পুরসভা নিয়ে জটিলতা |
এক দিনেই সিদ্ধান্ত বদল, স্থগিত বোর্ড মিটিং |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বুধবারই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য বোর্ড মিটিং হবে ৬ অক্টোবর, শনিবার। সেই মতো কাউন্সিলরদের চিঠি পাঠানোর তোড়জোড়ও শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত পাল্টে গেল! নতুন সিদ্ধান্ত, আপাতত বোর্ড মিটিং হবে না। খড়্গপুরের উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী বলেন, “৬ অক্টোবর বোর্ড মিটিং ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত বোর্ড মিটিং হবে না।” কেন? তুষারবাবুর বক্তব্য, “পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে কী করণীয় জেলাশাসক ও পুর-দফতরের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। উত্তর আসেনি।”
দলীয় সূত্রে খবর, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেই তৃণমূল কাউন্সিলরেরা সিদ্ধান্ত নেন, আপাতত বোর্ড মিটিং ডাকা হবে না। তৃণমূলের এক কাউন্সিলরেরা বক্তব্য, “যা পদক্ষেপ করা হয়েছে, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেই করা হয়েছে।” বুধবারের সিদ্ধান্ত মতো কাউন্সিলরদের কাছে চিঠি পাঠানোর তোড়জোড় যে শুরু হয়েছিল, তা মানছেন খড়্গপুর পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার (ই ও) বাসুদেব পালও। তিনি বলেন, “শনিবার বোর্ড মিটিং হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই মিটিং আপাতত হবে না।” তাঁর কথায়, “তাই বোর্ড মিটিংয়ের চিঠিও কাউন্সিলরদের কাছে পাঠানো হচ্ছে না।”
পুর-কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও আবার রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে রেলশহর খড়্গপুরে। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পাণ্ডের প্রতিক্রিয়া, “কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি। দেখা যাক, পুর-কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত কী করেন। প্রয়োজনে ফের আদালতের দ্বারস্থ হব।” ঘটনায় ‘বিড়ম্বনায়’ পড়েছে শহর তৃণমূলও। দলেরই এক কাউন্সিলরের বক্তব্য, “এ ভাবে সিদ্ধান্ত পাল্টানোয় মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।” তবে দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী পুর-কর্তৃপক্ষের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। তাঁর কথায়, “আদালতের নির্দেশ ছিল, উপ-পুরপ্রধানকেই পুরপ্রধানের দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। আমি শুনিনি, নির্দেশে কোথাও বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে বোর্ড মিটিং ডেকে পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচন করতে হবে বলে।” আদালতের নির্দেশ মেনে কয়েকদিন আগেই পুরপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরী। গত ১৪ অগস্ট পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। তার প্রেক্ষিতে ২৭ অগস্ট পুরসভায় বোর্ড মিটিং হয়। পরে মিটিংটি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। কংগ্রেসের দাবি, বৈধ ভাবেই মিটিং হয়েছিল। অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। তৃণমূলের বক্তব্য, অবৈধ ভাবে মিটিং হয়েছিল। ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুর-দফতর থেকে এ নিয়ে একটি নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়। যেখানে জানানো হয়, অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি লিগাল সেলের বিবেচনাধীন। যতক্ষণ না সেল কোনও মতামত দিচ্ছে, ততক্ষণ জহরলাল পাল পুরপ্রধানের কাজ চালাবেন। এই নির্দেশকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করেই হাইকোর্টে গিয়েছিল কংগ্রেস। পুরসভার বোর্ড মিটিং সংক্রান্ত পুর-দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। নির্দেশ দেয়, পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার কাজ চালাবেন উপ-পুরপ্রধান। সেই মতো কয়েকদিন আগেই পুরপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন তুষারবাবু। কংগ্রেসের এক কাউন্সিলরের বক্তব্য, “এরপর ৭ দিনের মধ্যে বোর্ড মিটিং ডাকার কথা। পুর-কর্তৃপক্ষের এই খামখেয়ালিপনা কেন বুঝতে পারছি না।”
সব মিলিয়ে খড়্গপুর পুরসভাকে ঘিরে জটিলতা আরও বেড়ে গেল। |
|
|
|
|
|